শিরোনাম

South east bank ad

স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলো সত্যিকারভাবে অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে

 প্রকাশ: ২২ মে ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   উদ্যোক্তাদের জন্য পরামর্শ

বাংলাদেশে গত বছরের প্রথমার্ধে এফডিআই ১৯ শতাংশ কমে হয়েছে ১১৬ কোটি ১৪৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার। গত বছরের প্রথমার্ধে দক্ষিণ এশিয়ায় এফডিআই কমেছিল ৩১ শতাংশ বা ২ হাজার কোটি ডলার।
নতুন করে করোনার ঢেউ প্রকট হয়ে ওঠায় অনিশ্চয়তা ও গভীর মন্দার আশঙ্কায় অনেক নতুন বিনিয়োগ প্রকল্পের অগ্রগতি থমকে গেছে। করোনার কারণে সারা বিশ্বে এফডিআইর হার অর্ধেক হয়ে গেছে। তবে বাংলাদেশের জন্য নতুন সুযোগ আছে। বিভিন্ন দেশ থেকে বিনিয়োগ শস্তা শ্রমের দেশে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। যেমন :মিয়ানমার থেকে অনেক দেশ অন্যত্র বিনিয়োগ নিয়ে যাচ্ছে। অস্থিরতার কারণে শ্রীলঙ্কা থেকে এক সময় পোশাক খাতের বিনিয়োগ বাংলাদেশে এসেছে। একইভাবে চীন ও মিয়ানমার থেকে বিভিন্ন খাতের উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ সরিয়ে আনার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

কোভিড-১৯-এর ধাক্কায় দেশে দেশে চাহিদা পড়ে গেছে, সৃষ্টি হয়েছে চরম অনিশ্চয়তা। এই পরিস্থিতিতে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআই কমে যাবে, সেটাই স্বাভাবিক।
পরিস্থিতি বিবেচনায় সব দেশেই এই পথে হাঁটছে এখনো। কিন্তু অর্থনীতিতে যার মারাত্মক পরিণতি অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প উৎপাদন সবই স্থবির হয়ে পড়েছে। এর জেরে বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান নতুন বিনিয়োগ তো করেইনি, বরং বিদ্যমান বিনিয়োগও অনেক ক্ষেত্রে গুটিয়ে এনেছে বা সংকুচিত করেছে।
আবার সামগ্রিকভাবে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের সাফল্য কম বাংলাদেশের। পরিস্থিতির উন্নতি করতে অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। সামগ্রিকভাবে অবকাঠামো সমস্যা দীর্ঘদিনের। বিদেশি বিনিয়োগ টানতে প্রতিযোগী দেশের সঙ্গে তুলনা করে নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। একই সঙ্গে দেশের উদ্যোক্তাদের সুবিধা দিলে তা বিদেশি বিনিয়োগ টানতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। যেসব আইন বিদেশি বিনিয়োগ আনার ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করে সেগুলোর সংস্কার করতে হবে। ওয়ান স্টপ সার্ভিসকে কার্যকর করতে হবে। ব্যবসা শুরুর জটিলতা নিরসন করতে হবে। ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার জটিলতা নিরসন করতে হবে। অন্যান্য বিধিবিধান বিনিয়োগবান্ধব হতে হবে। সব মিলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

বাংলাদেশে স্টার্টআপের ব্যাপক সম্ভাবনা আছে। এটাকে সাহায্য, সহযোগিতা করা দরকার। সবাই মিলে এমন একটা পরিবেশ তৈরি করতে হবে যাতে দেশের এই স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলো সত্যিকারভাবে অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে। এই স্টার্টআপের হাওয়াটাকে আরো জোরদার করার ব্যবস্থা করতে হবে।

যে কোনো দেশে বিনিয়োগ বাড়াতে হলে আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি উন্নত অবকাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকা জরুরি। বাংলাদেশে এক ধরনের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলেও অন্যান্য দিক থেকে পিছিয়ে আছে। শিল্পকারখানার জন্য যে জমি দরকার, তা সহজে পাওয়ার উপায় নেই। অন্যদিকে সরকারি অনুমোদন নিতে উদ্যোক্তাদের ঘাটে ঘাটে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এসব কারণেই বিশ্বব্যাংকের সহজ ব্যবসার সূচকে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে।
বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের প্রধান উপাদান হলো সস্তা শ্রম। কিন্তু স্রেফ সস্তা শ্রমের ওপর নির্ভর করে খুব বেশি পরিমাণে বিদেশি বিনিয়োগ আনা যাবে না। সে জন্য তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে প্রশিক্ষিত জনবল তৈরিতে সর্বাত্মক প্রয়াস চালাতে হবে। একই সঙ্গে আধুনিক বিশ্বমানের শিল্পকারখানা স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় জমি উন্নত অবকাঠামো, যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। দূর করতে হবে আমলাতান্ত্রিক জটিলতাও। করপোরেট করের পরিমাণও কমাতে হবে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিযোগী অন্যান্য দেশের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার জন্য। সেসব শিল্প প্রতিষ্ঠার দিকে দৃষ্টি দিতে হবে, যেসব শিল্প দেশের পুঁজি বাড়াবে এবং অধিক পরিমাণে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। বিদেশি বিনিয়োগের পূর্বশর্তগুলো যথাসময়ে পূরণ করতে না পারলে সরকারের উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে বিরাট গ্যাপ সৃষ্টি হবে। যা উতরে সামনের দিকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাওয়া বেশ কঠিন এমনকি অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে।

BBS cable ad

উদ্যোক্তাদের জন্য পরামর্শ এর আরও খবর: