শিরোনাম

South east bank ad

বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের সাদিকের যাত্রা

 প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০১৮, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   তরুন উদ্যোক্তা

বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের সাদিকের যাত্রা
সাদিক আল সরকার। সারা পৃথিবীতে সাড়া জাগানো সংগঠন নরওয়ে এর ওয়াইএসআই (ইয়াং সাসটেইনেবল ইম্প্যাক্ট) এর বাংলাদেশের মিডিয়া এবং আউটরিচ ডিরেক্টর হিসেবে সদ্য নির্বাচিত হয়েছেন সাদিক। মানুষটি উদ্যোক্তা হিসেবে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি এ বছরের জানুয়ারীতে আমন্ত্রণ পান গ্লোবাল এন্টাপ্রেনারশিপ বুটক্যাম্প - এ অংশ নেয়ার। এটি যুক্তরাষ্ট্রের অয়া ইনকরপোরেশন আয়োজনের ও এম আই টি এর সহায়তায় একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন। এই সম্মেলনটি এবার অনুষ্ঠিত হয় থাইল্যান্ডে। বিশ্বজুড়ে নানান প্রান্ত থেকে তরুণ উদ্যোক্তারা আমন্ত্রন পান এখানে, প্রতিনিধিত্ব করেছেন নিজ দেশের। দেশের গণ্ডী পেরিয়ে এবার আন্তর্জাতিক সংগঠনের কাজ দেশে ছড়িয়ে দেয়ার দায়িত্ব নিলেন তিনি। এছাড়াও গ্লোবাল এন্টাপ্রেনারশিপ বুটক্যাম্প (জিইবি), ওয়াইএসআই, হংকংভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ফিউচার সিটি সামিট (এফসিএস)-প্রতিষ্ঠানসমূহের বাংলাদেশ রিজিওন এর অফিসিয়াল পার্টনার এবং আন্তর্জাতিক ট্যুরিজম সংস্থা হাব গ্লোবাল এর ডিজিটাল পার্টনার নির্বাচিত হয়েছে সাদিক এর স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান লিডসাস। মূলত সাদিকের স্বপ্নযাত্রার শুরুটা নারায়নগন্জে।২০১৫ এর প্রথম দিকের কথা- লক্ষ করলাম জননিরাপত্তা বা ডিজিটালাইজেশন নিয়ে দেশের কোনো প্রতিষ্ঠানই পূর্ণাঙ্গভাবে কাজ করছে না। এরপর দেশে ও দেশের বাইরে বিভিন্ন আইটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম যে, একটা আধুনিক প্রতিষ্ঠানের যে সার্ভিসগুলো প্রয়োজন- তা কেউই একসঙ্গে দিচ্ছে না। অতঃপর কী কী সার্ভিস থাকলে কমপ্লিট ডিজিটাল প্রতিষ্ঠান, তথা আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলা একটি প্রতিষ্ঠান গড়া সম্ভব, সেগুলো তালিকাভুক্ত করতে থাকি। অতঃপর আমি ও আমার টিম লিডসাস একটি কমপ্লিট কনসেপ্ট নিয়ে এগিয়ে যেতে সম্মত হলাম- যেখানে আধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি যেকোনো প্রতিষ্ঠানের সম্পূর্ণ আধুনিকায়ন সম্ভব হবে।'' আর এভাবেই জন্ম হলো লিডসাস লিমিটেডের। কাঠামোগত দিকগুলো বিবেচনা করলে লিডসাস লিমিটেড -কে একটি বহুমুখী কাঠামোসম্পন্ন কমপ্লিট ডিজিটালাইজেশন এজেন্সি বলা যেতে পারে। লিডসাস ডিজিটাল প্রোগ্রাম প্রকল্পের আওতায় সেবা গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এখানে রয়েছে আলাদা পরিকল্পনা বিভাগ, যেখানে সময়োপযোগী পরিকল্পনার মাধ্যমে যথাযথ প্রযুক্তিগত সেবা প্রদানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির চাহিদা ও মতামতকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়া হয়। এছাড়াও রয়েছে স্বতন্ত্র ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বিভাগ, গ্রাফিক্স ও এনিমেশন বিভাগ, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল সিকিউরিটি ইকুয়িপমেন্ট ও অ্যাকসেসরিজসহ নানা বিভাগ। উদ্যোক্তা হবার চ্যালেন্জ নিয়েছেন নিজে বেশ স্বাধীনচেতা বলেই।জানালেন, উদ্যোক্তা হতে হলে তরুণদের বেশকিছু বিষয় মাথায় রাখার পরামর্শ। তিনি বলেন - ব্যবসায়ের ধরন, উৎপাদন, বিপণন থেকে শুরু করে ভোক্তার কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত সকল সুবিধা-অসুবিধাগুলো খুঁজে বের করে নোট করতে হবে সবার আগে। তারপর অধ্যবসায় ও ধৈর্য্যের সাথে পরিকল্পনামাফিক এগুতে পারলে সফল উদ্যোক্তা হওয়া সম্ভব। তিনি তরুণ উদ্যোক্তাগণকে হতাশ না হয়ে বেসিক কিছু গাইডলাইন ফলো করতে বলেন। ধরুন- আপনি যে বিজনেসই প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছেন- সেটার সুদূর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে হবে। আরো জানতে হবে সর্বোৎকৃষ্ট ভৌগলিক অবস্থান- যা আপনার বিজনেসকে আরো একধাপ এগিয়ে নেবে। এজন্য অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে। আপনার পছন্দের বিজনেস আইডিয়ার সাথে সম্পর্কিত পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিগণ আপনার অভিজ্ঞতা সংগ্রহের অন্যতম মাধ্যম হতে পারে। আপনার আইডিয়া সম্পর্কে তাদেও মতামত জানুন। তাদের কোনো আইডিয়া থাকলে সেগুলোও লিখে ফেলুন। খেয়াল করুন- এদের সকলেই যে আপনাকে সঠিক তথ্য প্রদান করে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছুতে সাহায্য করবেন- এমনটা ভাবাও বাস্তবসম্মত হবে না। আপনি প্রত্যেকের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যগুলো নোট করে নিন। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহে কোনো প্রকার অলসতা করবেন না- অসদুপায় তো নয়ই। দ্বিতীয়তঃ আপনার সময়কে ভাগ করে নিন। প্রতিদিনের একটা নির্দিষ্ট সময় বিজনেস এর জন্য আলাদা করে রাখুন। ছোট পরিসরে হলেও কাজ শুরু করুন এবং নিয়মিত সময় দিন। আপনার প্রতিদিনের নিয়মানুবর্তিতা-ই আপনাকে সফল করে তুলবে। তৃতীয়তঃ যেকোনো ব্যবসায়ের প্রাণসঞ্চার করে তার মূলধন। এক্ষেত্রে কোনো উৎসের উপরই সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করা যাবে না। পরিবার থেকে আপনি শতভাগ সমর্থন নাও পেতে পারেন। এতে করে হতাশ হওয়া চলবে না। বর্তমানে এদেশে অনেকেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় মূলধন সংগ্রহ করে এগিয়ে যাচ্ছেন। তাই রেগুলার আপডেটগুলো জানতে বিভিন্ন খবরের কাগজ নিয়মিত পড়ার কোনো বিকল্প নেই। ভবিষৎ পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে জানালেন, " সামনে বেশ কিছু দেশে নানান আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যাবো এবং বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরতে চেষ্টা করবো। বিশ্বাস করেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ দেয়ার মত দক্ষতা এদেশের তরুণদের আছে। লিডসাস এর নীতি নির্ধারণী দলের ইচ্ছা আগামি ২ বছরের মধ্যে পৃথিবীর নানান দেশে খোলা হবে লিডসাস এর কার্যালয়। সেখান থেকে দেশে পাঠানো হবে বড় বড় সব কাজের অর্ডার। দেশে ঢুকবে লক্ষ লক্ষ ডলার। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বা স্বপ্ন নিয়ে সাদিক আল সরকার বলেন- টিম লিডসাসের অন্যতম লক্ষ্য হলো যথাযথ প্রযুক্তি সহায়তা প্রদান করে উন্নত বিশ্বের আদলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে আধুনিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের পাশাপাশি সেখানে আধুনিক নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা। বেকারত্বের অবসান ঘটিয়ে শুধু বাংলাদেশ নয়, বরং পৃথিবীজুড়ে প্রযুক্তিগত সকল সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন।
BBS cable ad

তরুন উদ্যোক্তা এর আরও খবর: