ইয়াসের কারণে লণ্ডভণ্ড টেংরাগিরি, শুভসন্ধ্যা ও হরিণঘাটা
গত বুধবার ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় টেংরাগিরি, শুভসন্ধ্যা ও হরিণঘাটা বনাঞ্চলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতে ঝাউ গাছ লাগানো শুরু থেকে যে কয়টি ঘূর্ণিঝড় হয়েছে, তাতে প্রায় ২৫ হাজার ঝাউ গাছের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আর গত বছর আম্ফানের কারণে প্রায় ৩ হাজার ঝাউবন বিলীন হয়ে গেছে। আম্ফানের পর ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে টেংরাগিরি বন ও শুভসন্ধ্যা ঝাউবনসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী ফকিরহাটের টেংরাগিরি, নিশানবাড়িয়ার শুভসন্ধ্যা ও পাথরঘাটার হরিণঘাটা পর্যটনকেন্দ্র ইয়াসের কারণে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে।
এছাড়া শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতের তীরবর্তী প্রায় দেড় কিলোমিটার পাড় ভেঙে গেছে ও নদীর পানির সঙ্গে ভেসে গেছে অনুমানিক ৬ হাজারের বেশি গাছ। সেখানে ঝাউবনের সৌন্দর্য ইয়াসের তাণ্ডবে হারিয়ে গেছে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্বাসমূলীয় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল টেংরাগিরির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হচ্ছে শুভসন্ধ্যা। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে লন্ডভন্ড হয়ে পড়ে আছে শুভসন্ধ্যার প্রায় ৩ কিলোমিটার ঝাউবন।
তালতলী রেঞ্জের কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় টেংরাগিরি, শুভসন্ধ্যা ও হরিণঘাটা বনাঞ্চলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতের তীরবর্তী প্রায় দেড় কিলোমিটার পাড় ভেঙে গেছে ও নদীর পানির সঙ্গে ভেসে গেছে অনুমানিক ৬ হাজারের বেশি গাছ।’
প্রতি বছর এখানে সবচেয়ে বড় জোছনা উত্সব অনুষ্ঠিত হয়। উত্সব ঘিরে লাখো মানুষের সমাগম ঘটে। তা ছাড়া প্রতিদিন হাজারো পর্যটক আসত। সমুদ্রের মূল আকর্ষণ ছিল ঝাউবন। বিভিন্ন দুর্যোগ ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে ঝাউবন বিলীনের পথে। সিডর, আইলা, নারগিস, আম্ফানসহ বড় বড় দুর্যোগকে মোকাবিলা করেছে এই বন। বনের কারণে রক্ষা পেয়েছে উপকূলবাসী। উপকূলীয় এলাকার মানুষের জীবন ও সম্পদের রক্ষাকারী হিসেবে কাজ করেছে উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী। ম্যানগ্রোভ বন উপকূলকে সব সময় রক্ষা করে আসছে। শুভসন্ধ্যার প্রধান উদ্যোক্তা সোহেল হাফিজ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে শুভসন্ধ্যা লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। এই শুভসন্ধ্যাকে বাঁচানোর জন্য সব সচেতন মহলকে এগিয়ে আসতে হবে।’