পুলিশকে বিশ্বমানের করা হচ্ছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম

‘পুলিশ সত্যিকারের জনগণের পুলিশ হয়ে উঠছে। তারা সবসময়ই জনগণের পাশে থাকে। করোনাকালে পুলিশ যেভাবে জনগণকে সেবা দিয়েছে তা সত্যিই অভূতপূর্ব। আমরা পুলিশকে বিশ্বমানের পুলিশ হিসেবে তৈরি করতে চাই। এজন্য যা যা করা দরকার তাই করছি।’ পুলিশ সপ্তাহ ২০২২-এর ৫ম দিনের সমাপনী অধিবেশনে অর্থাৎ গত বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়াম রাজারবাগ, ঢাকায় ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে ওই সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন। এছাড়া বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিরা, ঢাকার পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানরা, সব মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার পুলিশ সুপাররা সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিগত দিনে দেশে সন্ত্রাসবাদের যেভাবে উত্থান হয়েছে সেখানেও পুলিশ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করেছে। ২০১৩ সালে স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠী আন্দোলনের নামে দেশে যে হত্যা সন্ত্রাস করেছিল তা আপনারা দেখেছেন। জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ পুলিশ ‘রোল মডেল’ হিসেবে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, পুলিশের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে দেশ জঙ্গিমুক্ত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পুলিশের

সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি), এন্টি টেররিজম ইউনিটসহ (এটিইউ) বিভিন্ন বিশেষায়িত ইউনিট করা হয়েছে। পুলিশের জন্য যখন যেটা প্রয়োজন আমরা সেটাই করে যাচ্ছি। পুলিশ স্টাফ কলেজকে বিশ্বমানের করা হয়েছে। পুলিশ সদস্যরা বর্তমানে যেভাবে কাজ করছেন ভবিষ্যতেও সেভাবেই দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আরও সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাবেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের বেশকিছু যৌক্তিক দাবি উত্থাপন করেছেন। কিছু অসংগতির কথা তুলে ধরেছেন। আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে যেসব দাবি পূরণ করতে পারব সেগুলো অচিরেই পূরণ করা হবে। যেসব দাবির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শের প্রয়োজন সেগুলো নিয়ে আমরা কথা বলব। পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য তাদের একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজন। পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির যেসব দাবি এসেছে এর অধিকাংশই যৌক্তিক। পুলিশের দক্ষতা বাড়াতে আরও যা যা প্রয়োজন তা করা হবে। পুলিশ বাহিনীকে আমরা ঢেলে সাজিয়েছি। নতুন নতুন ইউনিট সৃজন করেছি, জনবল বৃদ্ধি করেছি। বর্তমান সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যেসব ইউনিট প্রয়োজন ছিল সেগুলো আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি।

জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন বলেন, পুলিশ শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার কঠিন দায়িত্ব পালন করে। এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। দেশের আইনশৃঙ্খলা ঠিক না থাকলে, শান্তি বজায় না থাকলে দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে সেভাবে এগোবে না। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বর্তমানে দেশ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে যাচ্ছে, দেশের উন্নতি হচ্ছে। এ অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে হলে সরকারের প্রতিটি বিভাগের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে?। সভায় উত্থাপিত বিভিন্ন দাবি প্রসঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সিনিয়র সচিব বলেন, আপনাদের দাবি খুবই ন্যায়সংগত, যৌক্তিক। আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এগুলো সমাধান করব।

সভাপতির বক্তব্যে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। দেশে সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায়, আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক থাকায় শিল্পায়ন ও নগরায়ন হয়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ঘটেছে এবং বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে। দেশে বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে জঙ্গিরা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছে। বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে পুলিশের মহাকাব্যিক অর্জন হয়েছে। পুলিশের জন্য অর্থ বরাদ্দ ‘ব্যয় নয়, বিনিয়োগ’?। কারণ পুলিশের সক্ষমতা বাড়লে, পুলিশ উন্নত ও আধুনিক হলে এর সুফল ভোগ করবে দেশ ও দেশের জনগণ।