শিরোনাম

South east bank ad

উঠানে বাবার লাশ রেখে জমি ভাগাভাগি, ১০ ঘণ্টা পর দাফন

 প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম

প্রায় ১০ ঘণ্টা খোলা আকাশের নিচে বাবার লাশ। বাবার রেখে যাওয়া সম্পদের ভাগ নিয়ে দুই ভাই ও চার বোনের বাদানুবাদ চলছেই।

বাবার লাশ ১০ ঘণ্টা খোলা আকাশের নিচে রাখলেও মেলেনি কোনো সমাধান। লাশ দাফনে বাধা দেওয়ার একপর্যায়ে ছুটে আসেন স্থানীয় গণ্যমান্যরা। দীর্ঘ সালিশ বৈঠকে বিরোধ নিরসনের চূড়ান্ত পর্যায়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় পুলিশও। শেষে সমাধানের আশ্বাস পেয়ে বাবাকে দাফনের অনুমতি দেন ছয় সন্তান।

ঘটনাটি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার। গত (১৩ ফেব্রুয়ারি) রোববার বিকেলে উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চরইন্দ্রুরিয়া গ্রামের মাঝি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, শনিবার সকালে চরইন্দ্রুরিয়া গ্রামের বৃদ্ধ আদম আলীর স্ত্রী মালেকা বেগম নিজ বাড়িতেই মারা যান। একই দিন রাত ৩টার দিকে মারা যান ৯৫ বছর বয়সী আদম আলীও। তিন ছেলে ও চার মেয়েসহ নাতি-নাতনি রেখে গেছেন তারা।

মারা যাওয়ার আগে নিজের ৪৮০ শতাংশ ও স্ত্রীর ২৭ শতাংশ জমির পুরোটাই মেজ ছেলে মোহন মাঝিকে লিখে দেন আদম আলী। বিষয়টি তার বড় ও ছোট ছেলে এবং চার মেয়ে মেনে নিতে পারেননি। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সাত ভাই-বোনের মধ্যে বিরোধ চলছিল।

এ ঘটনায় দুই ভাই ও চার বোন এক হয়ে নিজেদের বঞ্চিত করার অভিযোগে দেওয়ানী আদালতে বাবার বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদম আলীকে নিয়ে মেজ ছেলে মোহন মাঝি একসঙ্গে থাকছিলেন।

আদম আলীর মৃত্যুর জন্য মোহন মাঝিকে দায়ী করে আসছিল বাকি ছয় ভাই-বোন। তাদের অভিযোগ জেলা আদালতের মাধ্যমে জমিজমার সুষ্ঠু বণ্টনের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় মোহন মাঝি পুরো জমি আত্মসাৎ করেন।

স্থানীয়রা জানায়, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে আদম আলীর সাত সন্তানের মধ্যে মেজ ছেলে মোহন মাঝির সঙ্গে বড় ও ছোট ভাই এবং চার বোনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলছিল। উভয়ের মধ্যে ছয়টি মামলাও করা হয়েছিল। প্রায় দুই মাস আগে হায়দরগঞ্জ বাজারে চার শতাংশ জমি দখল করে ভবন ও দোকান নির্মাণে বাঁধায় কাউছার নামের ছেলেকে বেদম মারধর করা হয়। এ বিরোধের জেরে বাবার দাফন আটকে রাখা হয়।

এ বিষয়ে উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ঘটনার বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। ঘটনা শোনার পরই আমি খোঁজখবর নেই। আদম আলী জীবিত অবস্থায় সাত ছেলে-মেয়েকে নিয়ে জমির ভাগ বণ্টন নিয়ে কয়েকবার বৈঠকে বসছিলেন। কিন্তু মোহন মাঝি ছাড়া অন্য সন্তানরা কথা না শোনায় তাকে সব জমি লিখে দিয়েছেন আদম আলী।

স্থানীয় ব্যবসায়ী রফিক খান বলেন, শুক্রবার তাদের জমি-জমার বিষয়টির সমাধান করে দেব বলে আশ্বস্ত করা হলে আদম আলীকে দাফনের সিদ্ধান্ত নেই।

আদম আলীর বড় ছেলে ও চার মেয়ের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বাবা তাদের মেজ ভাই মোহন মাঝির কাছে থাকেন। সেই সুযোগে সে বাবাকে ফুসলিয়ে সব সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নেন। এ নিয়ে গ্রাম আদালতে মামলা করা হয়। কিন্তু আদালত বাবাকে হাজির হতে নির্দেশ দিলেও অসুস্থতার কারণে তিনি উপস্থিত হতে পারেননি। এর মাঝেই শনিবার সকাল ৭টার সময় তাদের মা মালেকা বেগম এবং তাদের বাবা রাতে মারা যান।

এ প্রসঙ্গে মোহন মাঝি বলেন, শনিবার বিকেলে হঠাৎ অসুস্থ হলে বাবাকে স্থানীয় ক্লিনিকে ডাক্তার দেখাই। এ সময় ডাক্তার কিছু টেস্ট ও ওষুধ লিখে দেন এবং বাবাকে বাসায় রেখে চিকিৎসা করাতে বলেন। আমি সে অনুযায়ী বাবাকে বাসায় রেখে চিকিৎসা করাচ্ছিলাম। শনিবার রাতেই বাবা বেশি অসুস্থ হয়ে মারা যান। বাবা সুস্থ অবস্থায় সজ্ঞানে আমার নামে বাড়ি ও জমি লিখে দিয়ে গেছেন।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: