শিরোনাম

South east bank ad

খুলনা- যশোরের দুঃখ ভবদহ ৫২ গ্রাম পানির নীচে, কাজে আসছে না সেচ পাম্প প্রকল্প

 প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

শেখ হেদায়েতুল্লাহ, (খুলনা):

১৯৬১-৬২ সালে খুলনার ডুমুরিয়া, ফুলতলা ও যশোর জেলার অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হরি নদীর উপর দেয়া হয় ২১ ভেন্টের একটি স্লুইজ গেট। এর কিছু দুরে ৯ ভেন্টের আরেকটি স্লুইজ গেট স্থাপন করা হয়। সে সমযে উদ্দেশ্য ছিল ভবদহ এলাকার অর্ধশত বিলের ফসলকে বন্যার পানি ও সাগরের নোনা পানিতে যাতে ফসলের ক্ষতি না হয়। কিন্তু মাত্র ২০ বছর পরে সেই স্লুইজ গেটই এখানকার মানুষের দুর্ভোগের কারন হয়ে দাড়ায়। ভরাট হতে থাকে হরি নদীর মাঝে আড়াআড়ি দেয়া স্লুইজ গেটটি আস্তে আস্তে অকার্যকর হয়ে পড়ে।

যা বর্তমানে ভবদহের দুঃখ বলে পরিচিতি পেয়েছে। বর্তমানে ৫২টি বিল জলাবদ্ধ হয়ে আছে। আর এই বিশাল এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে বিএডিসি ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সেচ প্রকল্প গ্রহণ করেছে। যার সফলতা নিয়ে মানুষ সন্দিহান।

যশোর-খুলনার দুঃখ হিসেবে খ্যাত ভবদহের স্থায়ী জলাবদ্ধতা। জলাবদ্ধতা নিরসনে বিএডিসি ও পাউবো যৌথ উদ্যোগে সেচ কার্যক্রম শুরু করে। কিন্তু মাসে লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে ভবদহ স্লুইজ গেট দিয়ে সেচ পাম্পে পানি নিস্কাশন কার্যক্রম সুফল বয়ে আনতে পারেনি। ভবদহ তৎসংলগ্ন বিলে ফসল ফলাতে ও পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ কমাতে পাউবো (পানি উন্নয়ন বোর্ড) ও বিএডিসি (বাংলাদেশ কষি উন্নয়ন কর্পোরেশন) যৌথ উদ্যোগে চলতি বছরের শুরুতেই এ কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু স্থাণীয় অধিবাসীরা এ পদ্ধতিকে সাগরে ঢিল ফেলার সাথে তুলনা করেছেন।

ভবদহ জলাবদ্ধতা নিরসনে ২০১২ সালে সরকার ৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহন করে। কিন্তু সেই প্রকল্প কোন কাজে আসেনি। এছাড়া বছর দুয়েক আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড ৮০০ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষে একটি প্রকল্প জমা দেয় যা বর্তমানে পরিকল্পনা কমিশনে রয়েছে। এছাড়া বর্তমানে সেচ পাম্পের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের জন্য ৪৩ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।

ভবদহ অঞ্চলের বিল কেদারিয়া পাড়ের বাসিন্দা সত্য বিশ^াস বলেন, সেই ৮০ সালের দিকে ভবদহে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। আজ ৪০ বছর ধরে চলছে কিন্তু দিনের পর দিন এর বিস্তৃতি বাড়ছে। উপকার হচ্ছে প্রভাবশালীদের। তারা সরকারের বরাদ্দ আনছে আর লুট করছে।

হাটাগাছা গ্রামের গৃহবধূ অনামিকা বিশ^াস বলেন, ঘরের চারিপাশে জল কিন্তু খাওয়ার উপযোগি নেই একটুও। গরু ছাগল হাস মুরগী ঘরেই ঘরেই থাকে। ঘরের নীচ দিয়ে মাছ চলে বেড়ায় কিন্তু তা ধরে খাওয়ার কোন উপায় নেই। প্রভাবশালীরা সেখানে নেট পাটা দিয়ৈ মাছ চাষ করছে।

বিএডিসির যশোরাঞ্চলের তত্ববধায়ক প্রকৌশলী (সেচ বিভাগ) আব্দুল্লাহ আল রশিদ জানান, এ অঞ্চলের বিলে ফসল ফলাতে ও মানুষের দুর্ভোগ কমাতে পাউবোকে বিএডিসি ৩০ এইচপি (হর্সপাওয়ার) পাওয়ারের ২০টি পাম্প সরবরাহ করে। যা রক্ষণাবেক্ষণে বিএডিসির ৮ জন শ্রমিকসহ একজন উপ-প্রকৌশলী সেখানে সার্বক্ষণিক দেখভাল করে থাকেন। কিন্তু লিকেজ দৃষ্টিগোচর হওয়ায় তা পাউবোকে অবহিত করা হলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

পাউবো যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলাম বলেন, বিএডিসির কাছ থেকে ২০টি পাম্প পাওয়া গেলেও চাহিদার তুলনায় কম। তাই আরও বড় পাম্প নিতে ৪৩ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে ডিপিপি জমা দেয়া হয়েছে। এছাড়া ২ বছল আগে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে একটি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পড়ে আছে। সেটিরও অনুমোদন মেলেনি।

স্থানীয় সংসদ সদস্য ( ডুমুরিয়া- ফুলতলা) শিক্ষাবিদ নারায়ন চন্দ্র চন্দ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিএডিসির সেচ প্রকল্প কতটা সফল এ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসনে হরি নদী খননসহ এর শাখা প্রশাখা খননের কোন বিকল্প নেই। ভবদহের জল হরি নদী দিয়ে ভদ্রা, ঘ্যাংরাইল হয়ে শিপসা নদীতে পড়ে সাগরে মিশে। তাই ভবদহের মধ্যে খালের মুখের বাঁধ অপসারন করতে হবে।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: