গাইবান্ধায় ইউপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ

রবিউল ইসলাম, (গাইবান্ধা) :

গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদস্য প্রার্থী ফজলে রাব্বীর বিরুদ্ধে স্ত্রী রতনা বেগমকে (২৬) হত্যার অভিযোগ উঠেছে।সোমবার (৮ নভেম্বর) সকালে নিহতের লাশ উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় ফজলে রাব্বীর দ্বিতীয় স্ত্রী ফারজনা বেগমকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ফজলে রাব্বি চলতি ইউপি নির্বাচনে খোলাহাটী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য পদে মোড়গ মার্কা নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

স্থানীয়রা জানায়, উত্তর খোলাহাটী ঢোলমারা গ্রামের লতিফ মিস্ত্রির ছেলে দাদন ব্যবসায়ি ফজলে রাব্বীর সঙ্গে ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে রতনা বেগমের সঙ্গে প্রায় সাত বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে চাপ দিয়ে আসতো ফজলে রাব্বী। রতনা বেগমের দুই ছেলে রয়েছে। দাদন ব্যবসায়ি ফজলে রাব্বী পরকিয়া করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রায় ৬ মাস আগে অন্যের স্ত্রী ফারজনা বেগমকে দ্বিতীয় বিয়ে করে। এ নিয়ে সংসারে প্রায় ঝগড়া-বিবাদ চলে আসছিল। প্রতিবেশিরা বিবাদ মেটাতে এগিয়ে আসলে তাদেরও মারপিট করে তাড়িয়ে দিত।

জানা গেছে, নিহতের ছেলে রনি(৬) রবিবার দুপুরে পাখির বাসা পারার জন্য গাছে উঠলে ব্যাথা পায়। এই খবর জানার পর বিকেলে ফজলে রাব্বী তার ছেলে রনির দুই হাত বেধে বুকে ইট চাপা দিয়ে মাটিতে শুইয়ে রাখে। এতে রনির বা হাত ভেঙ্গে যায় এবং চিকিৎসা না করে বাড়িতে রেখে দেয়। এই ঘটনায় রনির মা রতনা বেগম প্রতিবাদ করলে ফজলে রাব্বী তাকে বেদম মারপিট করে। রাতে মায়ের সাথে রনি ও তার ছোট ভাই হাবিব(৪) ঘুমিয়ে পড়ে।

ফজলে রাব্বী নির্বাচনী প্রচারণা শেষে গভীর রাতে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে অন্য কক্ষে ঘুমায়। ভোরে ফজলে রাব্বী স্ত্রী রতনা বেগমকে বেদম মারপিট করেন। এতে রতনা বেগম মারা গেলে তার মৃতদেহ খড়ির ঘরের ধরনার সাথে ওরনা পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে রতনার লাশ বিছানায় রেখে পালিয়ে যায় ফজলে রাব্বী।

ঘুম থেকে দুই ভাই রনি ও ছোট ভাই হাবিব মা রতনা বেগমকে পাশে মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে কান্নাকাটি করে। পরে আশপাশের লোকজন এসে রতনা বেগমের লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে এলাকাবাসী নিহতের সতিন ফারজনা বেগমসহ ফজলে রাব্বীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ করে। তারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানান।

গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) তদন্ত মো. আব্দুর রউফ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে গৃহবধুর লাশ উদ্ধার মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফজলে রাব্বীর দ্বিতীয় স্ত্রী ফারজনা বেগমকে আটক করা হয়েছে।