শিরোনাম

South east bank ad

ধনু নদীর ভাঙ্গনে সর্বশান্ত শতাধিক পরিবার

 প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

আব্দুর রহমান, (নেত্রকোনা) :

নেত্রকোনার খালিয়াজুরীতে ধনু নদীর ভাঙ্গনের কবলে পড়ে সর্বশান্ত হয়েছেন হতদরিদ্র শাতধিক পরিবার। উপায় না পেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়েই আশ্রয় নিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। এমতাবস্থায় জরুরী ভিত্তিতে স্থায়ী ব্যবস্থা না হলে নদী গর্ভে বিলীন হবে শত বছরের পুরনো একটি গ্রাম। যদিও ভাঙ্গন রোধে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কোটি টাকার বালু ভর্তি বস্তা ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী উদ্যোগ নেয়ার দাবি গ্রামবাসীর।

নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল খালিয়াজুরীর সবচেয়ে বড় ও খরস্রোতা নদী ‘ধনু’। নদীটি দিয়ে প্রতিদিন অন্তত কয়েক হাজার মাল বোঝাই নৌযান চলাচল করে। ফলে তীব্র ঢেউ ও স্রোতের কবলে পরে ব্যাপক ভাঙ্গনের শিকার হচ্ছে নদী তীরবর্তী বেশকটি গ্রাম। এরমাঝে খালিয়াজুরী উপজেলার ২নং চাকুয়া ইউনিয়নের পাথরা গ্রামেই সবচেয়ে বেশী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, গেল কয়েক বছর ধরে ভাঙ্গন শুরু হলেও চলতি বছর ভাঙ্গনের মাত্রা বেড়েছে কয়েকগুন। এরই মধ্যে অন্তত শতাধিক পরিবারের ভিটেমাটি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এতে গবাদি পশুসহ শিশু কিশোরদের নিয়ে অনেকটাই মানবেতর দিন কাটছে এ গ্রামের মানুষগুলোর।

এদিকে গ্রামে রয়েছে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সঙ্কট। জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়েও কোন রকম বেঁচে থাকার সংগ্রাম করছেন তারা। সহায় সম্বল হারিয়ে উপায় না পেয়ে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়েই আশ্রয় নিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। যদিও প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ভাঙ্গন প্রতিরোধে সাময়িকভাবে কোটি টাকা ব্যায়ে বালু ভর্তি বস্তা ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড। এমতাবস্থায় গ্রামটি রক্ষায় স্থায়ী ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসী।

পাথরা গ্রামের ভিটাহারা হিমাংশু সরকার, নেপাল সরকার, সঞ্জিত সরকারসহ আরো অনেকে জানান, ‘ধনু নদীর ভাঙ্গনে ঘরবাড়ি হারিয়ে বর্তমানে গ্রামের পাথরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দোতলায় বসবাস করছেন। সবকিছু হারিয়ে তারা এখন দিশেহারা। সন্তান-সন্তোতি নিয়ে সংসার চালানোই এখন দায় হয়ে পড়েছে। সরকারি সহযোগিতার দাবী তাদের।’

স্থানীয় ইউপি মেম্বার সুবিন্দু কান্তি সরকার বলেন, ‘দীর্ঘদিন যাবত ধনু নদীর ভাঙ্গনে আমাদের গ্রামটি এখন বিলীনের পথে। ইতিমধ্যে সবকিছু হারিয়ে পথে বসেছে গ্রামের অনেকেই। গ্রামটি রক্ষা করা না হলে এখানাকার হাওরের একমাত্র ফসলী জমি রক্ষা করাও কঠিন হয়ে যাবে। দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ না করা হলে সর্বশান্ত হয়ে যাবে এলাকার মানুষ। এছাড়াও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে গ্রামের সব টিউবওয়েল ও স্যানিটারি ল্যাট্রিন। ফলে দেখা দিয়েছে তীব্র পানির সংকট। এতে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী ভোক্তভুগীদের।’

নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহনলাল সৈকত বলেন, ইতিমধ্যে নদীতে জিও ব্যাগ দিয়ে গ্রামটি রক্ষায় কাজ করা হচ্ছে। এছাড়াও নতুন প্রকল্প হাতে নিয়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের আশ্বাস প্রদান করেছেন।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কাজী আব্দুর রহমান বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর মাঝে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা করা হবে। এছাড়াও বিশুদ্ধ পানিসহ পরিবেশ রক্ষায় কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউএনওকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে গৃহহীনদের আশ্রয়ন প্রকল্পে পুনর্বাসনের কথা জানান তিনি।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: