শিরোনাম

South east bank ad

বিদ্যালয়ে ফিরতে পারবেন আশরাফুল!

 প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

ফয়সাল আহমেদ, (গাজীপুর) :

কৃষক নিজাম উদ্দিন ও গৃহিনী সাহারা খাতুনের আদরের সন্তান আশরাফুল (১২)। ছেলেকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন, আলোকিত মানুষ করে গড়ে উঠে ছেলে ভালো চাকুরী করবেন। একটি সময় সংসারের সচ্ছলতা আসবে তার হাত ধরে। এমন লক্ষ্য সামনে রেখে আশরাফুলকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছিলেন তার বাবা।

অস্বচ্ছল এই পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম তার বাবা। সামান্য উপার্জনে সংসার চালানোর পাশাপাশি বড় ছেলে মুন্না ও ছোট ছেলে আশরাফুলের পড়ালেখার খরচ মেটানোর পর মাস শেষে হাত খরচে টান পড়তো। তবুওধার দেনা করেই কোন প্রকারে চলছিল তাদের জীবন ও জীবিকা।

কিন্তু করোনায় এ পরিবারটিতে তৈরী করেছে হতাশার দীর্ঘশ্বাস। কর্মহীন হয়ে পড়েন বাবা। অপরদিকে দীর্ঘ সময় বিদ্যালয় বন্ধ। থেমে যাচ্ছিল সংসারের চাকা। অসচ্ছল বাবা-মা বাড়িতে বসিয়ে না রেখে তাকে চাকুরিতে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পারিবারিক সিদ্ধান্তে চাচা কামাল তাকে গাজীপুরের সদর উপজেলার মনিপুর বাজারে রনি মিষ্টান্ন ভান্ডারে নামের একটি খাবার হোটেলে দৈনিক হাজিরায় চাকুরি দেন। তাকে বলা হয়েছিল বিদ্যালয় খুললে তাকে এখান থেকে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্ত করোনার পর বিদ্যালয় খুললেও আশরাফুলের আর বিদ্যালয়ে যাওয়া হয়নি।

আশরাফুল (১২) গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক নিজাম উদ্দিনের ছেলে। সে স্থানীয় রামচন্দ্রপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়তো।

মঙ্গলবার বিকেলে আশরাফুলের সাথে কথা হয় তার কর্মস্থল রনি মিষ্টান্ন ভান্ডারে। সে জানায়, তার বাবার বাড়ির ভোলা জেলায়। ৫/৬বছর আগে তারা এ এলাকায় চলে আসে। বাবা পেশায় একজন কৃষক, মা গৃহিনী। করোনার কারণে দীর্ঘ সময় বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বাবা-মা তাকে কাজে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে হোটেল কর্মচারী চাচার সাথে সদর উপজেলার মনিপুর বাজার এলাকায় ওই হোটেলে চাকুরি হয়। সে আরও জানায়, আগামী জানুয়ারিতে তার বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার কথা বাবা-মা জানিয়েছে। তবে চোখের সামনে বিদ্যালয়ের ড্রেস পড়া শিক্ষার্থীদের দেখলে ভেতরে মোচড় দিয়ে উঠে। সাথে ভর করেছে আদৌ কি বিদ্যালয়ে যাওয়ার সুযোগ হবে তার?

রনি মিষ্টান্ন ভান্ডারের স্বত্ত্বাধিকারী হিরণ চন্দ্র ঘোষ বলেন, চাচা কামালের অনুরোধে আশরাফুল মাস খানেক আগে হোটেলে কাজে নেয়া হয়েছিল। কাজে যোগ দেয়ার সময় আমি তাকে বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করেছিলাম। সে যখনই চলে যেতে চাইবে তাকে যেতে দেয়া হবে। তাকে বিদ্যালয়ে যেতে হোটেলের পক্ষ থেকে কোন ধরনের অসহযোগিতা করা হবে না।

রামচন্দ্রপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: সবদুল হোসেন বলেন, করোনায় যখন বিদ্যালয় বন্ধ ছিল আমাদের শিক্ষার্থীদের এ্যাসাইনমেন্ট জমা এবং বাসায় পড়াশোনার দিক নির্দেশনা দেয়া হতো। যখন বিদ্যালয় খোলা হলো আমরা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের দেয়া মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করেছি। যারা অনুপস্থিত আছে তাদের সহপাঠী দিয়েও খোঁজ নেয়া হচ্ছে। যারা ঝড়ে পড়েছে তাদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনা কাজ চলছে।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: