বিদ্রোহী প্রার্থী এখন আ. লীগের মানোনয়ন প্রত্যাশী
কায়সার সামির, (মুন্সীগঞ্জ) :
২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন প সার ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তাফা। সক্রিয় ছিলেন বিএনপির মূল ধারার রাজনীতির সাথে। পরে দল পরিবর্তন করে আওয়ামী লীগের ছায়াতলে আসে গত নির্বাচনের আগে। এবার গোলাম মোস্তফা তৃতীয় ধাপে ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প সার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নৌকার প্রতীক পেতে আবেদন করেন। জেলা আওয়ামী লীগ নেতারও গোলাম মোস্তফার নাম কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন। শুধু তাই নয়, মনোনয়ন দৌঁড়ে এগিয়ে রয়েছেন গোলাম মোস্তাফা বলে একাধিক স‚ত্র দাবি করছেন। এতে তার মনোনয়ন চাওয়া নিয়ে চলছে ত্যাগী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের অনুষ্ঠিত প সার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী আনারস প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বিএনপির প্রার্থীকে কে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে। এর পর অঢেল টাকা ও নেতাদের নামি দামি উপহার দিয়ে দলের মধ্যে খুব শক্ত অবস্থান তৈরি করেন গোলাম মোস্তফা। বনে যান আওয়ামী লীগের মস্ত বড় নেতা। অথচ বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে বাঙালি জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে মৃত্যুবার্ষিকীর খাবার লাথি দিয়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এটা জেলার সর্বজন স্বীকৃত।
এদিকে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী তৃতীয় ধাপে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন আগামী ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল থেকে ত্যাগী আওয়ামী লীগের কাছ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের আবেদন চাওয়া হয়। মনোনয়ন প্রত্যাশী অনুযায়ী উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন থেকে ৬২ জন নৌকা প্রতীকের জন্য আবেদন করেছেন। এরমধ্যে প সার ইউনিয়ন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকায় রয়েছেন ৭ জন। এদের মধ্যে গত নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী গোলাম মোস্তাফাও নৌকা প্রতীকের প্রত্যাশী।
বাকিদের মধ্যে রয়েছেন প সার ইউপি সদস্য ও যুবলীগ সভাপতি মো. জাহিদ হাসান, জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ আহম্মেদ পাভেল, গোলাম মাওলা, সদর উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান লাকুম, আলমগীর হোসেন খাঁন, গোলাম রসুল সিরাজি রোমানও।
এলাকাবাসী ও আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে হাইব্রিড নেতাদের নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন দেওয়ার পায়তারা করা হচ্ছে। তারা আরও জানান, বর্তমান পরিষদের চেয়ারম্যান গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচন করতে চেয়েছিলো, কিন্তু নেত্রী তাকে নৌকা দেয়নি। তারপরে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন। তারা দাবি করেন, সদ্য বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করা নেতাদের নৌকা প্রতীক দেওয়া হলে বৃহত্তর আন্দোলন নামবেন প সার ইউনিয়নবাসী।
পসার ইউনিয়নের নৌকা প্রতীক প্রত্যাশী গোলাম মোস্তাফা বলেন, আওয়ামী লীগকে ভালোবেসে বিএনপির ছায়া ছেড়ে আওয়ামী লীগের ছায়াতলে এসেছি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে কাজ করে যাচ্ছি। তিনি আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পাওয়ার বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী বলে জোর দাবি করেন। এছাড়া নৌকা পেলে এবার নির্বাচন করবে, আর না পেলে এলাকাবাসী তাকে চাইলে সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবে বলে জানান তিনি।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আফসার উদ্দিন ভূইয়া বলেন, দল যাকেই মনোনয়ন দিবেন তার পক্ষেই নেতাকর্মীদের কাছ করতে হবে। তবে দলীয় প্রতীক প্রত্যাশীদের পূর্বের রেকর্ড উল্লেখ করে কেন্দ্রে নাম পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি কেন্দ্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিবেন।