শিরোনাম

South east bank ad

বিয়ে-চাকুরির প্রলোভনে টাকা আত্মসাৎ, প্রতারক গ্রেপ্তার

 প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

আমজাদ হোসেন শিমুল, (রাজশাহী ব্যুরো) :

রাজশাহী মহানগরীতে ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে অভিনব কায়দায় যুবতীকে বিয়ে এবং চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে সাত লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বুধবার (১৩ অক্টোবর) সকাল ৯ টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নগরীর মকবুল হালদারের মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃত যুবকের নাম এম ওয়াদুদ জিয়া জুয়েল (৩০) সে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ থানার বাঘাডুবি ভবানীপুর গ্রামের মো. জাকারিয়া আনসারীর ছেলে ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনা বিভাগে বিবিএ এবং এমবিএ সম্পন্ন করেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে নগর পুলিশ কমিশনার সদরদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

লিখিত বক্তব্যে পুলিশ কমিশনার বলেন, ২০১৯ সালের দিকে সিমা (ছদ্মনাম) এর সাথে আমিনুল ইসলাম নামের এক যুবকের ফেসবুকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ হলেও তাদের মধ্যে সাক্ষাৎ হয়নি। আসামি জুয়েল ভুক্তভোগী সিমা (ছদ্মনাম) এর প্রেমিকের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে নিজেই প্রেমিক সেজে সিমার সাথে প্রেমের অভিনয় শুরু করে। তার কিছুদিন পরে প্রতারক জুয়েল আরো একটি ভূয়া ফেসবুক আইডি খুলে নিজেকে সিমার প্রেমিকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু পরিচয় দিয়ে প্রেমিকের সাথে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে সিমার বাসায় যায়। সেখানে নিজের ল্যাপটপ হারানোর অজুহাত দেখিয়ে তার মায়ের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকার চেক নেয়। পুনরায় আসামি জুয়েল আরেকটি আইডি থেকে সিমাকে মেসেঞ্জারে বলে তোমার প্রেমিক ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছে। তার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা ব্যয় হচ্ছে বলে তার কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা গ্রহণ করে। এদিকে সিমা ও তার পরিবার আমিনুলের সাথে দেখা করার জন্য ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলে আসামি জুয়েল সিমাকে জানায় আমিনুল মারা গেছে, আসার প্রয়োজন নেই। আমরা লাশ নিয়ে আমিনুলের গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি।

এর কিছুদিন পরে প্রতারক জুয়েল আরো একটি ভুয়া আইডি খুলে আমিনুলের বোন পরিচয় দিয়ে সিমার সাথে যোগাযোগ করে। তার ভাইয়ের চিকিৎসার জন্য তিন লক্ষ টাকা ব্যয় করায় সিমাকে ধন্যবাদ জানায় এবং টাকা ফিরিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। পরবর্তীতে আসামি জুয়েল আমিনুলের বোন পরিচয়ে সিমার সাথে যোগাযোগ করতে থাকে এবং একটা চাকুরির ব্যবস্থা করে দেয়ার কথা বলে। চাকুরির জন্য ৭ লক্ষ টাকার প্রয়োজন বলে সিমাকে জানায়। তিন লক্ষ টাকা আমিনুলের পরিবারের পক্ষ থেকে দিবে অবশিষ্ট চার লক্ষ টাকা সিমাকে দিতে বলে। তার কথামত সিমা চাকুরির আশায় ৪ লক্ষ টাকা প্রদান করে। টাকা গ্রহণ করার পরে আসামী জুয়েল তার ব্যবহৃত ভূয়া তিনটি আইডি বন্ধ করে সিমার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। আসামির ব্যবহৃত তিনটি আইডি আলাদা আলাদা নামে হলেও সে নিজেই তিনটি চরিত্রে অভিনয় করে সিমার সাথে বিভিন্ন ভাবে প্রতারণা করে ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।

ভুক্তভোগী সিমা ও তার পরিবার বিষয়টি নগর পুলিশ কমিশনারের নিকট মৌখিকভাবে অভিযোগ করলে আসামিকে গ্রেফতারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপ-পুলিশ কমিশনারকে (ডিবি) নির্দেশ দেন। পরে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আরেফিন জুয়েলের তত্ত্বাবধায়নে নগর ডিবির একটি দল ভুয়া ফেসবুক আইডিগুলো পর্যালোচনা করে আসামি সনাক্তে কাজ শুরু করে। এক পর্যায়ে বুধবার সকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামি ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বলে যে, তার ৯ টি ভুয়া ফেসবুক আইডি রয়েছে। সিমার কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত টাকা দিয়ে সে নিজ গ্রামে একটি গরুর খামার দিয়েছেন এবং জমি ক্রয় করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে নগর পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: