শিরোনাম

South east bank ad

মুজিব বর্ষে সরকারী উদ্যোগে গাজীপুরে সুখের নীড়ে হাজারো মানুষ

 প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

ফয়সাল আহমেদ, (গাজীপুর) :

আজন্ম প্রতিটি মানুষই সংসারে সুখের স্বপ্ন লালন করে থাকে। পার্থিব জীবনে আমাদের সমাজে অনেকের সুখ পাখিটা ধরা দিলেও নীড় হারা মানুষের সুখের দেখা মেলা ভার ছিল এতোদিন। “মুজিব শতবর্ষে” মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমাজের বিশেষ শ্রেণীর নীড় হারা মানুষের মধ্যে জমি সহ ঘর দেয়ার উদ্যোগ নেন। আর এমন উদ্যোগে সুখের নীড়ে ফিরেছে নীড়হারা হাজারো মানুষ। সারা দেশে উপহারের ঘর নিয়ে নেতিবাচক খবর বের হলেও গাজীপুর ছিল ব্যতিক্রম। এখানে জেলা প্রশাসনের নজরদারীতে উন্নতমানের ঘর পেয়ে এর বাসিন্দারাও খুঁশি।

শ্রীপুরের তেলিহাটি গ্রামে অন্যান্য আরো ৯টি পরিবারের সাথে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বরাদ্ধ পেয়েছেন শারীরিক প্রতিবন্ধি মোফাজ্জল হোসেন। তিনি বলেন, জন্ম থেকেই আশ্রয়হীন তিনি, তার দুটি পা নেই। বড় হয়েছেন, এক সময় সংসার হয়েছে, বর্তমানে দুটি সন্তান রয়েছে। ভিক্ষাবৃত্তি করে যে আয় করতেন তার অধিকাংশই বাড়ী ভাড়ায় চলে যেত। বাড়ী উপহার পাওয়ায় তারা ৪জন আশ্রয় খোঁজে পেয়েছেন। তাই অন্তত বাড়ী ভাড়ার টাকাটা বেঁচে যাবে। আর তা দিয়েই ক্ষুদ্র ব্যবসার মাধ্যমে সংসারে সুখের ছোঁয়া আনতে চান।

একই ভাবে মুজিববর্ষে ঘর উপহার পেয়েছেন স্বামী হারা আম্বিয়া খাতুন, তিনি বলেন, অন্যের বাড়ীতে আশ্রয়ে থাকাকালীন স্বামী মারা গেছেন। দুটি সন্তান রয়েছে। নিজে এ বাড়ী ও বাড়ী কাজ করেন। কিন্তু মাথার উপর আশ্রয় না থাকায় একপ্রকার অসহায় ছিলেন। হঠাৎ করে এমনভাবে জমিসহ ঘর উপহার পাবেন ভাবতেই পারেননি। তার মতে, জীবনের অধিকাংশ সময় কষ্ট করে কাটাতে হলেও এবার একটু শান্তিতে মরতে পারবো।

গাজীপুর জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, দুটি পর্যায়ে গাজীপুর সদরে ০৬টি ক্লাস্টারে ১১৫টি, কালীগঞ্জে ০৪টি ক্লাস্টারে ৪৫টি, কাপাসিয়ায় ০৮টি ক্লাস্টারে ১১২টি,শ্রীপুরে ০৩টি ক্লাস্টারে ৩৫টি, কালিয়াকৈরে ০৭টি ক্লাস্টারে ১৮০টি মোট ৪৮৭টি পরিবারের মধ্যে ঘর বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। এসব ঘরে ঠিকানা খোঁজে পেয়েছে হাজারের উপরের মানুষ। দেয়া হয়েছে প্রতিটি পরিবারকে ২শতাংশ করে জমি। সরকারীভাবে প্রতিটি ঘর তৈরীতে বরাদ্ধ ছিল ১লাখ ৭১হাজার টাকা। করোনার কারনে নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মান নিশ্চিতে এসব ঘর তৈরীতে বরাদ্ধকৃত সরকারী অর্থের অতিরিক্ত খরচ করতে হয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের।

শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা(ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল লতিফ বলেন, এসব ঘর তৈরীতে বাজারের সেরা মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এতে বরাদ্ধকৃত সরকারী অর্থের অতিরিক্ত টাকা ব্যয় হয়েছে। আমাদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী নিজেদের পকেটের টাকাও এতে ব্যয় করেছি। জেলা প্রশাসনের নির্দেশ ছিল যেভাবেই হোক মান নিশ্চিত করতে হবে। আমরা সর্বোচ্চটা করেছি।

শ্রীপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী মুহিতুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসনের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে আমরা কঠোরভাবে নজরদারী করেছি। উপহারের এসব ঘর নির্মাণ করতে বাজারের সেরা নির্মান সামগ্রী ব্যবহার করেছি। মানের প্রশ্নে আমরা ছিলাম আপোষহীণ। প্রতিটি ঘর নির্মাণ করতে বরাদ্ধকৃত অর্থের অতিরিক্ত টাকা ব্যয় হয়েছে। আমরা মিলেমিশে অতিরিক্ত ব্যয়ভার বহন করেছি।

কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (সদ্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদে পদন্নোতি প্রাপ্ত) ইসমত আরা বলেন, তার উপজেলায় শতাধিক ঘর নির্মাণ হয়েছে। মুজিব শতবর্ষে যেহেতু এসব মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ছিল সেহেতু আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মতে পরিবার বাছাই, জমি নির্বাচন, ও ঘর নির্মাণে নজরদারী করেছি। এখানে কোন ধরনের প্রশ্ন উঠার কোন সুযোগ দেয়নি। আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল নির্দ্দিষ্ট করা নির্মাণব্যয়ে দেশের মধ্যে সেরামানের ঘরগুলো নির্মাণ করার। আমরা সফল হয়েছি।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় মুজিব বর্ষে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্বদিয়ে দুটি পর্যায়ে এসব ঘর তৈরী করে নীড় হারা মানুষের মধ্যে বরাদ্ধ দিয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে হাজারো মানুষ তাদের ঠিকানা পেয়েছে। হাঁসি ফুঁটেছে তাদের মুখে।

তিনি আরো বলেন, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের আন্তরিকতায় আমরা গাজীপুরে সর্বোচ্চ মানের উপহারের ঘর তৈরী করেছি। প্রথম থেকেই মানের প্রশ্নে আমরা ছিলাম আপোষহীণ। ঘর বরাদ্ধ দিয়ে এসব পরিবারে বিভিন্ন খাতের অর্থ দিয়ে সুপেয় পানির ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ সংযোগ সহ বাসিন্দাদের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ করেছি। উপহারের ঘর পাওয়া লোকজন যদি সুখে শান্তিতে থাকে সেটাই আমাদের সবার স¦ার্থকতা। বর্তমানে তৃতীয় পর্যায়ে গৃহনির্মাণের জন্য কাজ চলমান রয়েছে।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: