শিক্ষার্থী হত্যার দায়ে দুই জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
আরাফাত হাসান, (মাদারীপুর) :
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এক শিক্ষার্থীকে অপরহণ শেষে হত্যার দায়ে দুই জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা মামলার রায় ঘোষণা করেন। এ মামলায় অপর দুই আসামীকে খালাস দেয়া হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, জেলার কালকিনি পৌরসভার উত্তর কৃষ্ণনগর গ্রামের সাইদ সর্দারের ছেলে ইমরান হোসেন সর্দারকে (১৮) গত ২০০৯ সালের ২১ মে বাড়ী আসার পথে অপহরণ করেন অজ্ঞাত ব্যক্তিরা। পরে একটি মোবাইল নাম্বার থেকে অপহরণ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এরপর ওই বছরের ২৪ মে কালকিনির সমিতিরহাট এলাকা সংলগ্ন আড়িয়াল খাঁ নদীর পাশে হাত-পা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় ইমরান সর্দারের। এই ঘটনায় ওই দিন রাতেই সাইদ সর্দার বাদী হয়ে কালকিনি থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
পরে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে চার জনকে আসামী করা হয়। মামলায় দীর্ঘ শুনানী ও পক্ষে-বিপক্ষের তর্ক শেষে মঙ্গলবার দুপুরে রায় দেয় মাদারীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা। রায়ে মামলার আসামী কালকিনি পৌরসভার ঝাউতলা এলাকার মৃত এমদাদ সর্দারের ছেলে পারভেজ সর্দার (২৬) এবং বিভাগদী এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে মো. সজীব সর্দারকে (২৫) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড প্রদাণ করা হয়। সেই সাথে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা করা হয়।
তবে অপর দুই আসামী কৃষ্ণনগর এলাকার মৃত কাজেম সর্দারের ছেলে আসলাম সর্দার ও পূর্ব শিকারমঙ্গল গ্রামের কুদ্দুস চৌকিদারের ছেলে নয়ন চৌকিদারকে খালাস প্রদাণ করা হয়। তবে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা বর্তমানে পলাতক রয়েছে। রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
এব্যাপারে মামলার বাদী সাইদ সর্দার জানান, ‘আমার ছেলে কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজে মানবিক বিভাগের একাদশ শ্রেনীতে পড়াশুনা করতো। কিন্তু কেন যে আমার ছেলেকে এভাবে নির্মমভাবে হত্যা করলো আজোও সেটা বুঝি না। আমার কাছে মুক্তিপণও দাবী করে নাই। কিন্তু কেন আমার বুঁকের ধনকে হত্যা করলো ঘাতকরা। আমি ওদের সাজা কার্যকর দেখতে চাই।’
এব্যাপারে সরকারী কৌসুলী এ্যাড. সিদ্দিকুর রহমান সিং বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করছি। যাতে দ্রুত দণ্ডপ্রাপ্তরা আসামীদের গ্রেফতার করে সাজা কার্যকর করা হয়। সেদিকে পুলিশ বিভাগকে অনুরোধ করছি।’