South east bank ad

শ্রীপুরে বিদ্যালয় উন্নয়নের টাকা শিক্ষকের পকেটে!

 প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

ফয়সাল আহমেদ, (গাজীপুর) :

গাজীপুরের শ্রীপুরে আনসার টেপিরবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত অর্থবছরে সরকারী ভাবে ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য দুই লাখ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। উপজেলা শিক্ষা অফিসে যাবতীয় বিল ভাউচার তৈরী করে কাজ হয়েছে মর্মে উপজেলা প্রকৌশল অফিসের প্রত্যয়ণপত্র জমা দেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। আর গত অর্থবছরের শেষ লগ্নে বাগিয়ে নেন দুই লাখ টাকার চেক। পরে তা উত্তোলন করে কাজ না করেই আতœসাতের চেষ্টা করেন এই প্রধান শিক্ষক। তবে এ ঘটনা স্থানীয়ভাবে প্রকাশ হয়ে গেলে গত অর্থবছরের তিন মাস পর মাঠে বালি এনে কাজ দেখানোর চেষ্টা করছেন তিনি। তবে অধিকাংশ টাকা এখনো তার পকেটেই রয়ে গেছে।

স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি নেই গত পাঁচ বছর ধরে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অন্যত্র চাকুরী পেয়ে চলে গেলে ২০১৯সালের অক্টোবর মাস থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বপান সহকারী শিক্ষক ঝর্ণা আক্তার। কমিটি না থাকার সুযোগ নিয়েই মূলত স্থানীয় শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকৌশল অফিসকে ম্যানেজ করে বিদ্যালয় উন্নয়নের অধিকাংশ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। গত অর্থবছরের কাজ না করেই বিদ্যালয়ের পুরাতন মালামাল দেখিয়ে নতুনের বিল ভাউচার তৈরী করে হিসাব মেলাতে ব্যস্ত তিনি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে দেয়া তথ্য মতে, বিগত অর্থবছর এই বিদ্যালয়ের অনুকূলে ক্ষুদ্র মেরামতের দুই লাখ ও স্লিপ বরাদ্ধের ৭০হাজার টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। বিধি অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন করার পর ক্ষুদ্র মেরামতের টাকার চেক প্রধান শিক্ষকের অনুকূলে হস্তান্তর করা হয়। এ কাজের তত্বাবধান করার নিয়ম উপজেলা প্রকৌশল অফিসের। তাদের কাজ হয়েছে মর্মে প্রত্যয়ন পাওয়ার পরই মূলতই চেক হস্তান্তর করা হয়। গত অর্থবছরের এমন কাগজপত্র বুঝে পেয়েই টাকা দেয়া হয়। তবে পরে দেখা যায় অধিকাংশ কাজই হয়নি।

উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শিকদার হারুনুর রশিদ জানান,তিনি গত ১৫দিন পূর্বে এ বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট ক্লাষ্টারে যোগ দিয়েছেন। পরে সরকারী বরাদ্ধকৃত অর্থ কাজ না করেই উত্তোলন করার বিষয়টি তার নজরে আসায় প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের দেয়াল মেরামত ও দেয়ালে রঙ করার কাজ শুরু করেন। তবে পুরো টাকার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার তাগাদা দেয়া হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক টাকা তুলে কেন দীর্ঘদিন কাজ করেননি এ বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সরেজমিন সোমবার দুপুরে বিদ্যালয়ে গেলে দেখা যায় মাঠের মধ্যে পড়ে রয়েছে কিছু বালি। বিদ্যালয়ের কয়েকটি দেয়ালে পুরাতন প্লাষ্টার তুলে নতুনের কাজ চলছে। বিদ্যালয়ে আর কি কাজ হয়েছে ? তার জবাবে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পুরাতন মালামাল দেখানোর চেষ্টা করেন প্রধান শিক্ষক।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ঝর্না আক্তার বলেন, বিদ্যালয়ের বরাদ্ধ আসার পর তিনি নানা ঝামেলা দেখে তা আনতে নিরুৎসাহিত ছিলেন। পরে শিক্ষা অফিসের অনুরোধে তিনি এ টাকা তুলেন। কাজ করার পূর্বেই এ টাকা কিভাবে পেলেন এ বিষয়ে তার বক্তব্য তিনি উপজেলা প্রকৌশল অফিস ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের খরচ বাবদ ৪০হাজার টাকা দিয়ে তিনি দুই লাখ টাকা উত্তোলন করেন। তবে এ টাকা আতœসাতের কোন চিন্তা তার ছিল না। করোনার কারনে দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ে না আসায় কাজ করতে পারেননি। এখন তা করছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশল অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী মকবুল হোসেন বলেন, তিনি দুই লাখ টাকার প্রাক্কলন তৈরী করে দিয়েছেন। তবে প্রধান শিক্ষক তাকে কাজ হয়েছে বলার পর তিনি কাজ হয়েছে মর্মে প্রত্যয়ন দিয়েছেন। তবে তার দাবী তিনি এখান থেকে কোন টাকা নেননি, আর পুরো টাকারই কাজ হয়েছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, কাজ শেষ হওয়ার পর কাজের বিল ভাউচার ও প্রকৌশল অফিসের প্রত্যয়ন পাওয়ার পরই আমরা টাকা দেই। তবে এখানে কাজ না হওয়ার পূর্বে টাকা প্রদান ,বিলম্বে কাজ করা ও কাজের নানা অসঙ্গতি খতিয়ে দেখা হবে।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: