২৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত প্রতারক দম্পতিকে গ্রেফতার করলো পুলিশ
প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া):
ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও বিদেশি মুঠোফোন নাম্বার ব্যবহার করেও শেষ রক্ষা হলো না প্রতারক দম্পতির। পাঁচ বছর পলাতক থাকার পর ঢাকার ধানমন্ডি থেকে বগুড়া সদর থানা পুলিশ শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে তাদের গ্রেফতার করে।
গ্রেফতার দম্পতি, শহরের ফুলবাড়ী মধ্যপাড়া এলাকার গোলাম মোস্তফা (৫১) ও তার স্ত্রী সুমাইয়া ফারজানা (৪১)।
প্রতারক গোলাম মোস্তফা সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা। প্রতারণার ৯টি মামলায় ২০১৭ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মোট ২৭ বছর কারাদরে আদেশ দেয় আদালত। এছাড়াও তার স্ত্রী সুমাইয়াকে প্রাতরণার মামলায় ২০১৯ সালে এক বছরে কারাদ- দেওয়া হয়।
বগুড়া সদর থানা পুলিশ সূত্র জানায়, মোস্তফা ঢাকার আদাবরে বেসরকারি একটি ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। সেখানে তিনি জালিয়াতির মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। এজন্য ২০০৮ সালে ব্যাংক থেকে তার চাকরি চলে যায়। একপর্যায়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ২০১১ সালে তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা দায়ের করেন।
তিনি ও তার স্ত্রী ২০১৩ সালে বগুড়ায় ফিরে এসে সদর উপজেলার হাজরাদিঘিতে দুগ্ধ খামারে গড়ে তোলেন। সেখানে স্থানীয়দের চাকরি দেওয়া কথা বলে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন।
সেখানে প্রতারণার সব পাঠ চুকিয়ে এবার স্ত্রী সুমাইয়াকে নিয়ে ঢাকায় ফেরত যান মোস্তফা। ঢাকাতে ২০১৫ সালে কথিত হজ্জ এজেন্সি গড়ে তোলেন। তার নিজ এলাকার ও তার স্ত্রীর বাপের বাড়ি জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের মানুষদের হজ্জে পাঠানোর কথা বলে সেখানেও লাখ লাখ টাকা তারা উভয়ে আত্মসাৎ করেন।
তিন খাতে প্রতারণায় মোস্তফার বিরুদ্ধে ১৮টি মামলা দায়ের হয়। ২০১৭ সালে প্রথম একটি মামলায় তাকে ১৬ বছরের কারাদ- দেয় আদালত। এরপর প্রতারক দম্পতি নিজেদের জাতীয় পরিচয় পত্র বদলিয়ে দুবাই পালিয়ে যায়। এরমাঝে ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মোট ৯ মামলায় মোস্তফাকে ২৭ বছরের কারাদ- দেয় আদালত। পাশাপাশি ২০১৯ সালে তার স্ত্রীর সুমাইয়ার প্রতারণার একটি মামলায় ১ বছরের কারাদ- হয়।
প্রতারক এই দম্পতি আবারও দেশে ফিরে এসে নিজেদের পরিচয় গোপন করে ঢাকার ধানমন্ডিতে বসবাস শুরু করেন। পাশাপাশি নিজেদের মুঠোফোনে দুবাইয়ের নাম্বার ক্লোন করে ব্যবহার করতে থাকেন। যাতে করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের শনাক্ত করতে না পারে।
তবে তথ্য প্রযুক্তির সাহায্য ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর থানা পুলিশ প্রতারক দম্পতিকে শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে গ্রেফতার করে।
বগুড়া সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এস আই) জাকির আল আহসান জানান, গ্রেফতার দম্পতি প্রতারণার সব কৌশল জানতো। দীর্ঘ সময় চেষ্টার পর তাদের গ্রেফতারে সক্ষম হয়েছি আমরা। সোমবার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।