বেক্সিমকোর আরো চার কারখানা লে-অফ ঘোষণা

গাজীপুরের কাশিমপুরে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে আরো চারটি কারখানা (ইউনিট) লে-অফ ঘোষণা করেছে বেক্সিমকো লিমিটেড। ৪ ফেব্রুয়ারি কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এক নোটিস দিয়ে এসব কারখানার উৎপাদন বন্ধ ও শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বন্ধ ঘোষণা করা কারখানাগুলো হচ্ছে গাজীপুরের কাশিমপুরে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে অবস্থিত বেক্সিমকোর ইয়ার্ন ইউনিট-২, টেক্সটাইল, ডেনিমস ও নিটিং ডিভিশন। তবে কোম্পানিটির অন্য বিভাগ যেমন রূপগঞ্জের ইয়ার্ন ইউনিট-১-এর কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
নোটিসে বলা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে কারখানায় পর্যাপ্ত কাজ না থাকার কারণে সরকার কর্তৃক গঠিত ‘বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির গত ১৫ ডিসেম্বরের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের বেক্সিমকো লিমিটেড-ইয়ার্ন-২, টেক্সটাইল, ডেনিম ও নিটিংয়ে কর্মরত সব কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬-এর সংশ্লিষ্ট ধারা মোতাবেক লে-অফের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। এই সিদ্ধান্ত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। লে-অফ চলাকালীন লে-অফকৃত কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের আইন অনুযায়ী মজুরি বা বেতন দেওয়া হবে। লে-অফ থাকাকালীন লে-অফকৃত কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকের সশরীরে কারখানায় এসে হাজিরা দেওয়ার প্রয়োজন নেই।’
ওই ঘোষণার পর গতকাল সকাল থেকে কোনো শ্রমিক কারখানা এলাকায় আসেননি। এলাকায় শান্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। তবে শিল্প পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বেক্সিমকোসহ আশপাশের কারখানা এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন।
বেক্সিমকোর শ্রমিকরা জানান, চারটি কারখানায় সাড়ে চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার শ্রমিক কাজ করতেন। এখন আমাদের মতো তারাও বেকার হয়ে গেলেন। নতুন করে আমরা আর কোনো আন্দোলনের কর্মসূচির ঘোষণা দিইনি।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আবু তালেব বলেন, ‘বেক্সিমকোর আরো চারটি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল এটি বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। সকাল থেকে কোনো শ্রমিক কারখানা এলাকায় আসেনি। এছাড়া শিল্প পুলিশ কারখানা এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন।’
গত বছরের আগস্টে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন বেক্সিমকো গ্রুপের অন্যতম কর্ণধার সালমান এফ রহমান। তার পরও সংকটের সমাধান না হওয়ার কারণে গ্রুপটির লে-অফ করা ১২ প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার পাশাপাশি বন্ধক রাখা শেয়ার বিক্রি করে শ্রমিকদের পাওনা ও ব্যাংকের ঋণের অর্থ আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এবার নতুন করে আরো চারটিসহ বন্ধ কারখানার সংখ্যা দাঁড়াল ২০-এ।