South east bank ad

অর্থবছর শেষে রাজস্ব ঘাটতি ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়াবে

 প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   এনবিআর

অর্থবছর শেষে রাজস্ব ঘাটতি ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়াবে

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে দেশের রাজস্ব আয়ের ঘাটতি ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছে বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। অন্যদিকে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সরকারের প্রত্যাশা অনুযায়ী মূল্যস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না বলে মনে করছে সংস্থাটি। এছাড়া এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনকে মাথায় রেখে আগামী বাজেট প্রণয়নের পরামর্শ দিয়েছে সিপিডি।

রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে গতকাল আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটকে সামনে রেখে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ও গবেষক মুনতাসীর কামাল প্রমুখ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ দশমিক ৪ শতাংশ। তবে লক্ষ্য অর্জন করতে হলে বাকি সময়ে সাড়ে ৫৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রয়োজন হবে, যা প্রায় অসম্ভব। ফলে অর্থবছর শেষে এবার রাজস্ব ঘাটতি দাঁড়াতে পারে ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা।’

মূল্যস্ফীতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী অর্থবছরেও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা। বর্তমানে মূল্যস্ফীতি কিছু কমেছে। তবে এটা বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি সুদ বৃদ্ধির কারণে নাকি শীতে কৃষি উৎপাদন বেড়ে যাওয়ার কারণে, এখনো তা বলার সময় আসেনি। এজন্য আরো কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে। তবে আগামী জুনের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭-৮ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করা হলেও তা অর্জিত নাও হতে পারে।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হতাহতদের পরিবারকে সহায়তা প্রদানের জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে অনুদান বরাদ্দের সুপারিশ করেছে সিপিডি। গণ-অভ্যুত্থানে আহত বা অঙ্গ হারানো যারা এখনো স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেননি, এ ডিগ্রি সম্পন্ন করা পর্যন্ত তাদের জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরে একটি বৃত্তি কর্মসূচি চালু করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। এছাড়া স্কুলের সব ধরনের বৃত্তির অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে সিপিডি।

অন্যদিকে আসন্ন বাজেটে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের টিউশন ফির ওপর ৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া আমদানি করা বিদেশী বইয়ের ওপর সব কর অব্যাহতি দেয়ার পরামর্শও দিয়েছে সিপিডি।

সভায় ব্যক্তিশ্রেণীর করদাতাদের বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা আরো ৫০ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা করার সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এবং তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য করপোরেট করের হার বিদ্যমান ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় এসেই বাড়তি শুল্ক বসানোর যে নীতি গ্রহণ করেছে তাতে বাংলাদেশের রফতানির সুযোগ সীমিত ও স্তিমিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘যে পণ্যে চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আরোপ করেছে, সে পণ্যে বাংলাদেশ চীনের প্রতিযোগী নয়।’ তৈরি পোশাকের মধ্যে অন্তঃপোশাক যে বৈচিত্র্য সেটাও মাথায় রাখার কথা বলেন মোস্তাফিজুর রহমান।

তিনি আরো বলেন, ‘বিভিন্ন অর্থনীতিবিদরা বলছেন, যে ধরনের ট্যারিফ ওয়ার ট্রাম্প শুরু করেছেন, এর ফলে বৈশ্বিক যে প্রবৃদ্ধি তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধির ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাদের যে চাহিদা সাধারণ জনগণের সেটা কমবে এবং এটা মূল্যস্ফীতিও বাড়াবে। এর ফলে আমদানির জন্য তাদের চাহিদাও কমে যাবে। ফলে আমাদের মতো দেশগুলো যারা রফতানি করছি, যে চাহিদাটা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সেটার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’

BBS cable ad

এনবিআর এর আরও খবর: