দেড় কোটি বাংলাদেশী বিদেশে কর্মরত-সংসদে প্রধানমন্ত্রী
বিশ্বের ১৭৬টি দেশে প্রায় দেড় কোটি বাংলাদেশী কর্মরত বলে সংসদে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (৫ জুলাই) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
তিনি বলেন, সুশৃঙ্খল, নিরাপদ ও দায়িত্বশীল শ্রম অভিবাসন নিশ্চিতে নিরলসভাবে কাজ করছে সরকার। বর্তমানে বিশ্বের ১৭৬টি দেশে এক কোটি ৪৯ লাখের অধিক কর্মী কর্মরত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতাগ্রহণের পর বিগত এক যুগে পেশাজীবী, দক্ষ, আধাদক্ষ ও স্বল্পদক্ষ ক্যাটাগরিতে ৮১ লাখ ৪৭ হাজার ৬৪২ জনের বৈদেশিক কর্মসংস্থান নিশ্চিত হয়েছে। নারীকর্মীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান, প্রশিক্ষণার্থী নির্বাচন ও ওরিয়েন্টেশন কার্যক্রম জেলা পর্যায়ে সম্প্রসারণ এবং বিকেন্দ্রীকরণের ফলে গত এক যুগে প্রায় ১০ লাখ নারী কর্মী বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছেন।
বিশ্বায়নের যুগে মেধা পাচার রোধ দুরূহ : সিলেট-৩ আসনের সরকার দলীয় সংসদ হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্বল্পোন্নত বা উন্নয়নশীল সব দেশ থেকেই মেধা পাচার হয়ে থাকে। তারপরও সরকারের নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও নানাবিধ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে দেশের মেধা পাচার নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে রয়েছে। বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে সত্যিকার অর্থে মেধা পাচার রোধ দুরূহ ব্যাপার বলে জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, দেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের ব্যাপক উন্নয়নের ফলে এবং দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগের কারণে মেধাবীরা দেশেই এখন কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। সকল সেক্টরে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা, নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ফলে বাংলাদেশের মেধা পাচার অনেকটাই রোধ হচ্ছে। স্ব স্ব ক্ষেত্রে মেধাবীদের মূল্যায়ন সরকারের পদক্ষেপ প্রশংসার দাবি রাখে।
সরকার প্রধান বলেন, সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ, মেধাবীদের বৃত্তি বা উপবৃত্তি প্রদান, সকল নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মেধার প্রাধান্য, নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষালাভের সুযোগ সৃষ্টি, রাষ্ট্রীয়ভাবে বিশিষ্ট ও মেধাবীদের বিভিন্ন পদক-পুরস্কার ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বর্তমান সরকার কর্তৃক মেধাবীদের সর্বোচ্চ মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের দ্রুত বিকশিত ও আধুনিকায়ন ভিত্তিক উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখতে মেধা পাচার রোধ গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, মেধাবী, দক্ষ ও উদ্ভাবনী প্রতিভা সাধারণত কাঙ্ক্ষিত সুযোগ-সুবিধা, অবকাঠামোগত পরিবেশের অভাবে ভিনদেশে স্থানান্তর হয়। ফলে দেশের অগ্রগতি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হয়। উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান, পরিবেশ, বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতা, লেখাপড়ার পাশাপাশি কাজ ও নাগরিকত্বসহ স্থায়ী বসবাসের সুযোগ হল মেধা পাচারের অন্যতম কারণ। সরকার এ বিষয়ে সচেতন এবং অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে মেধা পাচার রোধে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
বঙ্গোপসাগরে ১১ নতুন প্রজাতির মাছ : চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট হতে গবেষণা পরিচালনা করে বঙ্গোপসাগরে ৪৭৩ টি প্রজাতির মাছ শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১ নতুন প্রজাতির। ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা বাংলাদেশ সাগর উপকূলে এ পর্যন্ত ১৫৪ প্রজাতির সীউইড সনাক্ত করেছে যার ২৭টি বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণার মাধ্যমে ৬ প্রজাতির সীউইডের চাষ পদ্ধতি উদ্ভাবন করা হয়েছে।