সূচক কমেছে ১ দশমিক ৬১ শতাংশ

দেশের পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহে সূচক ও লেনদেন দুটোই নিম্নমুখী ছিল। আলোচ্য সপ্তাহে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১ দশমিক ৬১ শতাংশ। পাশাপাশি এক্সচেঞ্জটির দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। ডিএসইর সাপ্তাহিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইএক্স সূচক আগের সপ্তাহের তুলনায় ৯০ দশমিক ৫০ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৫২৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, গত সপ্তাহে যা ছিল ৫ হাজার ৬১৪ পয়েন্ট। নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ সপ্তাহের ব্যবধানে ৩১ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৫১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ২ হাজার ১৮৩ পয়েন্ট। ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গত সপ্তাহে ৩৩ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৯৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ১ হাজার ২৩০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে গত সপ্তাহে মোট ৩৯৭টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১০২টির, কমেছে ২৬০টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৩৫টির। আর লেনদেন হয়নি ১৬টির। গত সপ্তাহে সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, ইসলামী ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক ও বীকন ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৫ হাজার ৭৪৮ কোটি ৩১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, আগের সপ্তাহে যেখানে লেনদেন ছিল ৬ হাজার ৪৯১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, সতর্ক বিনিয়োগকারীদের মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতার কারণে গত সপ্তাহে সূচক নিম্নমুখী ছিল। সপ্তাহের শুরুতে ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা গেলেও শেষ দিকে শেয়ার বিক্রির চাপে পয়েন্ট হারায় সূচক।
বিনিয়োগকারীদের মাঝে আশার সঞ্চার হয়েছে। এছাড়া বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের ফলে বাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত ছিল।
খাতভিত্তিক লেনদেনে গত সপ্তাহে প্রকৌশল খাতের আধিপত্য ছিল। লেনদেনচিত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১১ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে প্রকৌশল খাত। ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে দ্বিতীয় অবস্থানে ওষুধ ও রসায়ন খাত। তৃতীয় অবস্থানে থাকা বস্ত্র খাতের দখলে ছিল লেনদেনের ১০ শতাংশ। চতুর্থ অবস্থানে থাকা ব্যাংক খাতের দখলে ছিল লেনদেনের ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ। আর ৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তালিকার পঞ্চম অবস্থানে ছিল জীবন বীমা খাত।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে ছয়টি খাত বাদে সব খাতের শেয়ারেই নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭ দশমিক ৩ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে কাগজ ও মুদ্রণ খাতে। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৫ দশমিক ৫৬ ও পাট খাতে ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন ছিল। অন্যদিকে গত সপ্তাহে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে সবচেয়ে বেশি ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এছাড়া ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ২ দশমিক শূন্য ৪ এবং সেবা ও আবাসন খাতে ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন ছিল।
দেশের আরেক পুঁজিবাজার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই গত সপ্তাহে ১ দশমিক ১৭ শতাংশ কমে ১৫ হাজার ৫১৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১৫ হাজার ৭০২ পয়েন্ট। সিএসসিএক্স সূচকটি সপ্তাহের ব্যবধানে ১ দশমিক ২৭ শতাংশ কমে ৯ হাজার ৫২৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৯ হাজার ৬৫০ পয়েন্ট।
সিএসইতে গত সপ্তাহে ৯২ কোটি ২৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১০০ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আলোচ্য সপ্তাহে সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩২৮টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১১৩টির, কমেছে ১৯৭টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১৮টির বাজারদর।