শিরোনাম

South east bank ad

সংকট মোকাবিলায় জনগণকে সাহস জোগাচ্ছে সরকার

 প্রকাশ: ০২ অগাস্ট ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

চোখে দেখা যায় না এমন এক ভাইরাসের নাম কভিড-১৯ যা আমাদের দেশে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে করোনাভাইরাস নামে। আকারে যত তুচ্ছই হোক না কেন এটি ভয়াল দৈত্য হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে দুনিয়াজুড়ে। ইতিমধ্যে তা তছনছ করে দিয়েছে বিশ্বের প্রায় ২০০ দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা। লাখ লাখ মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যাও কয়েক কোটি। মানবসমাজ গত ১০০ বছরে এতটা বিপন্ন বোধ করেনি কোনো বিপদে। এমনকি প্রথম কিংবা দ্বিতীয় মহাযুদ্ধেও নয়। করোনায় সংক্রমণ কিংবা প্রাণহানির চেয়েও ভয়াবহ হয়ে উঠতে যাচ্ছে ক্ষুধার জ্বালা। বাংলাদেশ অনেক দেশের চেয়ে সফলভাবে করোনাকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্ষমতা দেখালেও বেকার হয়ে পড়েছে অন্তত এক তৃতীয়াংশ কর্মজীবী। আয় কমেছে ৮০ শতাংশ মানুষের। গণমানুষের এ দুঃসময়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকার।

ঈদুল আজহার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী ১৭ লাখ ২৪ হাজার দিনমজুর, পরিবহন শ্রমিক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর মধ্যে প্রায় ৪৫০ কোটি টাকার নগদ সহায়তা বিতরণ করা হয়েছে। অসহায় ও দরিদ্র মানুষের সুরক্ষায় সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকার প্যাকেজের আওতায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মাধ্যমে আর্থিক ও খাদ্য সহায়তা হিসেবে ওই প্রণোদনা পৌঁছানো হয়েছে। কর্মসূচি অনুযায়ী ১৪ লাখ ৩৭ হাজার দিনমজুর, ২ লাখ ৩৫ হাজার পরিবহন শ্রমিক এবং প্রায় ৫০ হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও ১ হাজার ৬০৩ জন গ্যারেজ শ্রমিকের মধ্যে ঈদের দুই দিন আগে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে বিতরণ করা হয়।

২৩ জুলাই শুরু হওয়া দুই সপ্তাহের কঠোর লকডাউনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্রদের জন্য এ অর্থ কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে আশা করা হচ্ছে। এর আগে এপ্রিলে ৩৫ লাখ মানুষকে আড়াই হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হয়। স্বীকার করতেই হবে, এ সহায়তা করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনের তুলনায় তুচ্ছ। তার পরও সাধারণ মানুষ আশ্বস্ত হবে সরকার তাদের পাশে আছে। সংকট মোকাবিলায় যা তাদের সাহস জোগাবে।


করোনার শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হতদরিদ্র, নিম্ন আয়ের মানুষ এবং শ্রমজীবীদের সাহায্য আর কল্যাণার্থে বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা দিয়ে আসছেন। ন্যায্যমূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রিও সংশ্লিষ্টদের জন্য এক প্রাসঙ্গিক কার্যক্রম। সিংহভাগ মানুষের রুজি-রোজগারের পথ রুদ্ধ হয়ে গেলে জাতীয় অর্থনীতিতে তার নেতিবাচক প্রভাব অবশ্যম্ভাবী। এমতাবস্থায় প্রণোদনা প্যাকেজের ঘোষণা দিয়ে সরকারপ্রধান নিম্ন আয়ের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বিধিনিষেধ জারি করায় অসংখ্য মানুষের প্রতিদিনের রুজি-রোজগারের যে টানাপোড়েন শুরু হয় তা প্রশমনের লক্ষ্যে আগেও প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছেন। এবারও সেই ধারাবাহিকতায় নতুন সাহায্য সহযোগিতার নির্দেশনা এসেছে খোদ সরকারপ্রধানের কাছ থেকে। এর আগে নিম্ন আয়ের সব শ্রেণী-পেশার মানুষ এই নতুন ঘোষণা দেয়া প্রণোদনার সাহায্য সহযোগিতা পাবেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। করোনা দুর্যোগে সারা দেশ বিপর্যস্ত প্রায়। তার ওপর সাধারণ মানুষের আয়ের ওপরও যে চরম প্রতিবন্ধকতা তার থেকে রক্ষা পেতেই সরকারের এই অভাবনীয় উদ্যোগ। যাদের কারণে এই অর্থ সেই অভাবী ও আয়হীন মানুষ যেন যথার্থভাবে এর আওতায় আসতে পারে সেদিকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরী।


কঠোর লকডাউন শুরুর আগে প্রতিদিন সকালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কাজের সন্ধানে অনেক শ্রমিকের জমায়েত দেখা যেত। মাটি কাটা, ইট-বালু টানা, রাজমিস্ত্রির জোগালি ও বাসাবাড়ি পরিষ্কার, বাসা বদলের কাজসহ বিভিন্ন ধরনের কাজে অভ্যস্ত এই মানুষগুলো এখন একেবারেই কর্মহীন। লকডাউনে তাদের কাজ বন্ধ। প্রতিদিনের আয় না থাকায় এই মানুষগুলো বিপাকে পড়েছে। তাদের অনেকে সপরিবারে ঢাকায় বসবাস করে। অনেকের পরিবার থাকে ঢাকার বাইরে। সেখানে নিয়মিত টাকা পাঠাতে হয়। প্রতিদিনের উপার্জনের ওপর নির্ভরশীল এই মানুষগুলো টাকার অভাবে গ্রামের বাড়িতে পরিবারের কাছে যেতে পারছে না টাকার অভাবে। গত কয়েক দিনের লকডাউনে অনেককেই ধারদেনা করে চলতে হচ্ছে। অনেককেই খাবারের কষ্টেও পড়তে হয়েছে। শুধু পুরুষ শ্রমিকরাই নয়, রান্নাবান্না, ইট-বালু, সিমেন্ট ওঠানো-নামানো, টাইলস পরিষ্কার, ভবন ঢালাই, রাজমিস্ত্রির সহযোগী, বাসা ধোয়ামোছা, মাটি কাটা, ইট পরিষ্কার ও ভাঙা, টাইলস পুডিংয়ের কাজ করে এমন নারী শ্রমিকরাও বেকার সময় কাটাচ্ছে। লকডাউনের কারণে তাদেরও কাজ নেই।


পরিশেষে বলছি, কর্মহীন হয়ে পড়া বিশাল সংখ্যক মানুষকে যদি সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতার আওতায় আনতে হবে। অসহায় মানুষের সাহায্যার্থে ব্যাপক ত্রাণ তহবিল গঠন করতে হবে। এক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রেখে প্রকৃত অসহায় মানুষের সহযোগিতা করতে হবে।

লেখক: পরিচালক, এফবিসিসিআই, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেড।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: