শিরোনাম

South east bank ad

পরিকল্পনা করেই চিকিৎসক স্ত্রীকে হত্যা: র‌্যাব

 প্রকাশ: ১২ অগাস্ট ২০২২, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   র‍্যাব

পরিকল্পনা করেই চিকিৎসক স্ত্রীকে হত্যা: র‌্যাব

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছেন, চিকিৎসক স্ত্রীকে হত্যার জন্য বেশ কয়েকদিন ধরেই ব্যাগে ধারালো অস্ত্র বহন করছিল গ্রেফতার রেজাউল করিম। ১২ আগস্ট ঘটা করে জান্নাতুল নাঈমের জন্মদিন পালনের কথা বলে ১০ আগস্ট পান্থপথের একটি আবাসিক হোটেল যায় তারা। সেখানে কথা কাটাকাটি, বাগবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ধারালো ছুরি দিয়ে ছুরিকাঘাত ও গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর গোসল করে দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে চট্টগ্রামে যায় রেজাউল।

তিনি আরো বলেন, ২০১৯ সালে ফেসবুকে পরিচয়। এরপর গড়ে উঠে প্রেমের সম্পর্ক। পরিবারের অমতে ২০২০ সালের অক্টোবরে বিয়ে করেন রেজাউল করিম ও চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকা। তবে স্বামী রেজাউলের একাধিক নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের জেরে মনোমালিন্য ও বাগবিতণ্ডা হয়। স্ত্রীকে পথের কাটা ভেবে সরিয়ে দিতে সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করে রেজাউল।

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব কথা বলেন।

চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী রেজাউল করিম ওরফে রেজাকে চট্টগ্রামের মুরাদপুরের একটি ছাত্রাবাস থেকে গ্রেফতারের পর এ তথ্য জানায় র‌্যাব।

খন্দকার আল মঈন বলেন, রাজধানীর পান্থপথের একটি আবাসিক হোটেল থেকে নারী চিকিৎসকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সুরতহাল প্রতিবেদন অনুযায়ী, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত ও জখমের চিহ্ন ছিল।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে রাজধানীর কলাবাগান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। গত রাতে র‌্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা, র‌্যাব- ২ এবং র‌্যাব-৭ এর যৌথ অভিযানে চট্টগ্রাম মুরাদপুর এলাকা থেকে আসামি রেজাউল করিম রেজাকে (৩১) গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারের সময় উদ্ধার করা হয় হত্যাকাণ্ডের সময় রেজার পরিহিত রক্তমাখা গেঞ্জি, মোবাইল, ব্যাগ এবং ঐ চিকিৎসকের ব্যবহৃত মোবাইল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার রেজা হত্যায় নিজের সংশ্লিষ্টতার দায় স্বীকার করেছে।

জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, গ্রেফতার রেজাউল ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ ও এমবিএ সম্পন্ন করে। এমবিএ চলাকালে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরমধ্যে তিনি একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে ২০২২ সালে জুন মাসে সে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ হিসেবে যোগ দেন।

নিহত নারীর সঙ্গে পরিচয় প্রেম ও হত্যা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে রেজা র‌্যাবকে জানায়, ২০১৯ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকার সঙ্গে পরিচয়। এরপর প্রেমের সম্পর্ক। ২০২০ সালে অক্টোবরে বিয়ে করেন তারা। পরিবারের অগোচরে বিয়ে হওয়ায় তারা স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে অবস্থান করতেন।

বিবাহিত সম্পর্কের মধ্যেও রেজার একাধিক নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তা স্ত্রী জেনে যাওয়ায় মনোমালিন্য ও বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। বৈবাহিক সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখতে জান্নাতুল নাঈম স্বামী রেজাকে কাউন্সেলিং ও আলাপচারিতার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

গত ১০ আগস্ট চিকিৎসক স্ত্রী জান্নাতুল নাঈমের জন্মদিন উদযাপনের কথা বলে পান্থপথের ফ্যামিলি অ্যাপার্টমেন্টে নামে একটি আবাসিক হোটেল নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থানের সময় বিভিন্ন নারীর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কথা কাটাকাটি, বাগবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি হয়।

এ সময় রেজা তার ব্যাগ থেকে ধারালো ছুরি বের করে ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত ও গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

জিজ্ঞাসাবাদে রেজা আরো জানায়, হোটেল থেকে বেরিয়ে প্রথমে মালিবাগে তার বাসায় যায়। বাসা থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বের হয়ে একটি হাসপাতালে গিয়ে তার নিজের হাতের ক্ষত স্থান সেলাই করে এবং প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়। পরে আরামবাগ বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসযোগে চট্টগ্রামে গিয়ে মুরাদপুরে আত্মগোপন করেন। এছাড়াও তিনি কীভাবে এই হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে পারেন সেজন্য একজন আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগও করেন। এরমধ্যেই র‌্যাবের অভিযানে গ্রেফতার হয় রেজা। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

BBS cable ad

র‍্যাব এর আরও খবর: