South east bank ad

নিরাপত্তাহীনতায় ব্যবসায়ীরা

 প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   কনজুমার প্রোডাক্টস

নিরাপত্তাহীনতায় ব্যবসায়ীরা

সম্প্রতি আশুলিয়া, মিরপুর, চট্টগ্রাম ইপিজেড ও ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাগুলো শিল্প খাতে চরম উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই ধারাবাহিকতা উদ্বেগজনক এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে।

কার্গো ভিলেজের মতো স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রপ্তানি শিল্প ভয়াবহ আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডের কারণে আগামী কিছুদিন আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত হবে।
এতে বাজারে অবস্থান হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। ফলে ক্রেতাদের আস্থা কমবে এবং আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

গতকাল এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা এসব কথা বলেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিইএফ) সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, বাংলাদেশ ওষুধশিল্প সমিতির মহাসচিব মো. জাকির হোসেন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, বাংলাদেশ জুয়েলারি উৎপাদন ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ গার্মেন্ট অ্যাক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএপিএমইএ) সভাপতি মো. শাহরিয়ার প্রমুখ।

ইএবি সভাপতি ও বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘কার্গো ভিলেজে বহু বছর ধরে খোলা আকাশের নিচে পণ্য রাখা হয়। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেই এবং চুরির ঘটনাও ঘটে। এটি শুধু ব্যবসায়িক ক্ষতির কারণ নয়, বরং আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।
এ অগ্নিকাণ্ডের দায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএএবি), কাস্টমস হাউস এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস কেউই এড়াতে পারে না।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, এই ক্ষতি করা এখন বিমানবন্দর পর্যন্ত চলে গেছে। এরপর ঘরবাড়ি পোড়ানোর সময় আসবে। বাংলাদেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র কারা করছে- এমন প্রশ্নের জবাবে এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, এটি এমন একটা ভূরাজনৈতিক অবস্থান, এখানে অনেকের চোখ পড়েছে। রাজনৈতিক এক ধরনের ষড়যন্ত্র আছে।
বহির্বিশ্বে যেন আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় তা নিয়ে এক ধরনের ষড়যন্ত্র আছে। পার্শ্ববর্তী দেশের এক ধরনের চিন্তাভাবনা আছে যাতে তাদের ব্যবসা ভালো হয়, আমাদের ব্যবসা কমে যায়।

বাংলাদেশ ওষুধশিল্প সমিতির মহাসচিব মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে ৩০৭টি ওষুধ কম্পানি আছে। এর মধ্যে ২৫০ কম্পানি সচল আছে। আজকে বেলা ১১টা পর্যন্ত শীর্ষস্থানীয় ৩২ কম্পানি জানিয়েছে, তাদের ২০০ কোটি টাকার বেশি কাঁচামাল পুড়ে গেছে। বাকি কম্পানিগুলো হিসাব দিলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে। একেকটি ওষুধ উৎপাদনে ১০-১২টি থেকে ৫৩টি উপকরণের প্রয়োজন হয়। ফলে ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল পুড়ে যাওয়ার কারণে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার কোটি টাকার ওষুধের উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে।’

বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিইএফ) সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, ‘নির্বাচিত সরকার আসলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে পারে। তখন বিনিয়োগকারীরা আসবে। এ অগ্নিকাণ্ডে ৫০০ ডলারের ক্ষতি কিন্তু ৫০০ ডলারের নয়। এটা হলো পণ্যের ভ্যালু। ৫০০ ডলারের সার্বিক লস কিন্তু ২০ হাজার ডলার হবে।’

বাংলাদেশ গার্মেন্ট অ্যাক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএপিএমইএ) সভাপতি মো. শাহরিয়ার বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের সদস্যদের এখন পর্যন্ত ২৩ কোটি টাকার মালামাল পুড়েছে বলে জানা গেছে। বায়াররা বিভিন্ন জায়গা থেকে স্যাম্পল পাঠিয়েছে সেগুলো পুড়ে গেছে। যা শিল্পের জন্য বড় ক্ষতি হয়েছে।’

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সরকারের কাছে ৬টি দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের বিপরীতে করা বিমা দাবি দ্রুত নিষ্পত্তির প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান। যেসব পণ্যের বিমা করা ছিল না, সেগুলোর ক্ষেত্রে সরকারি বিশেষ তহবিল গঠন করে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ ও সহায়তা প্রদান। ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে কার্গো ভিলেজের আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ। ওষুধশিল্পের জন্য আধুনিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আলাদা গুদামের ব্যবস্থা করা। নিরাপদ দূরত্বে রাসায়নিক গুদাম স্থাপন। কার্গো ভিলেজের গুদাম ব্যবস্থাপনাকে সম্পূর্ণ অটোমেটেড ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর করা।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন।

BBS cable ad

কনজুমার প্রোডাক্টস এর আরও খবর: