রফতানিতে নতুন শর্ত ১২ ধরনের আমদানি পণ্য পরীক্ষার নির্দেশ
আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে অধিকতর গতি সঞ্চার, সময় হ্রাসকরণ, বাণিজ্য সহজীকরণসহ করদাতাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতে সম্প্রতি বেনাপোল কাস্টম হাউজ বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে পণ্য রফতানিতে নতুন শর্ত আরোপ করা হয়েছে। এ বন্দর দিয়ে ৪০ হাজার ডলারের অধিক মূল্যের পণ্যের চালান কিংবা ২০ হাজার পিসের বেশি ঘোষণার তৈরি পোশাকের (যেমন শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট, আন্ডার গার্মেন্টস ইত্যাদি) চালান কায়িক পরীক্ষার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর মানে পণ্যের চালান খুলে দেখা ও ঘোষণা অনুযায়ী পণ্যের সঙ্গে মিল আছে কিনা তা পরীক্ষা করা হবে। এছাড়া আমদানি পণ্যের খালাস ত্বরান্বিতকরণ, রাজস্ব সুরক্ষার পরিবেশ তৈরি ও শুল্ককর ফাঁকি প্রতিরোধে নতুন কিছু পদক্ষেপ নেয়া রয়েছে।
বেনাপোল কাস্টম হাউজ থেকে গত সোমবার ১১টি শর্ত দিয়ে এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে। কাস্টমস কমিশনার মো. কামরুজ্জামান স্বাক্ষরিত এ আদেশের ফলে আমদানি-রফতানিকারকদের ভোগান্তি নতুন করে বাড়বে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। সেই সঙ্গে অর্থ আদায়ে নতুন নতুন খাতও সৃষ্টি হবে। বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৮০ ভাগ পণ্য আমদানি হয়। পাশাপাশি দেশটিতে পণ্য রফতানিও হয়। তবে ভারত হয়ে তৃতীয় দেশে পণ্য পাঠাতেও অনেকে এ বন্দর ব্যবহার করে থাকেন। বেনাপোল কাস্টমসের ইনভেস্টিগেশন রিসার্চ অ্যান্ড মানেজমেন্টকে (আইআরএম) বেশির ভাগ দায়িত্ব দেয়ায় আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে অধিকতর গতি সঞ্চারের পরিবর্তে হয়রানির মাত্রা আরো বাড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ একই আদেশে ১২ ধরনের আমদানি পণ্যকে সংবেদনশীল ও শুল্ক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করার কথা বলেছে। অর্থাৎ এসব পণ্য আমদানিতে শুল্ককর ফাঁকি দেয়ার ঝুঁকি বেশি। পণ্যগুলো হলো অ্যাসর্টেড গুডস, সব ধরনের কাপড়, সব ধরনের নতুন ও পুরনো মোটরপার্টস (টু হুইলার, থ্রি হুইলার, ফোর হুইলার ইত্যাদি) বাইসাইকেল যন্ত্রাংশ, ইলেকট্রনিকস ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য, প্রসাধনসামগ্রী, ইমিটেশন জুয়েলারি, বাণিজ্যিক ভিত্তিতে রেয়াতি সুবিধায় আমদানীকৃত যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ, শিল্প খাতের যন্ত্রাংশ, চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ও অস্ত্রোপচারসামগ্রী এবং একই চালানে পাঁচমিশালি পণ্য। এসব পণ্যের চালান কায়িক পরীক্ষা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেম পর্যালোচনা করে ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, এইচএস কোডসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পণ্যের চালানের কায়িক যাচাই-বাছাই করা, গোপন সংবাদ সংগ্রহ, বন্দরের অভ্যন্তরে ও বাইরে ঘোষণাতিরিক্ত বা ঘোষণাবহির্ভূত পণ্য চালান চিহ্নিতকরণ ও ফাঁকি উদঘাটন, রাজস্ব আহরণ ও খালাস প্রক্রিয়া সার্বক্ষণিক নজরদারি এবং চোরাচালান প্রতিরোধে আইনানুগ কার্যক্রম নেয়ার জন্য আইআরএম কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরসহ অন্যান্য সংস্থা থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আইজিএম, বিল অব এন্ট্রি লকসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি শুল্ককর ফাঁকি রোধে বেশকিছু নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।