আক্কেলপুরে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত শিল্পীরা

রাশেদ ইসলাম, (জয়পুরহাট) :

বাঙালি সনাতন সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর মণ্ডপে মণ্ডপে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা।

আগামী ৬অক্টোবর মহালয়ার মধ্য দিয়ে মা দূর্গার আগমন এবং ১১অক্টোবর ষষ্ঠী পূজো দিয়ে শুরু হবে দূর্গাপূজার মহা উৎসব। ইতোমধ্যেই অধিকাংশ প্রতিমার বাঁশ-কাঠের উপর মাটির প্রলেপ দিয়ে মূল কাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। এখন রং তুলির আঁচড়ে প্রতিমাকে দৃষ্টিনন্দন করার কাজে মহাব্যস্ত প্রতিমা শিল্পীরা।

আক্কেলপুর পৌর শহরের নবাবগঞ্জ পারঘাটি কেন্দ্রীয় দূর্গা মন্দিরে কাজ করছেন নওগাঁ জেলার বদলগাছী ইউনিয়নের ভান্ডারপুর গ্রামের প্রদীপ কুমার মালাকর।

প্রদীপ মালাকর বলেন, করোনা ভাইরাসের মধ্যও এ বছর তিনি বিভিন্ন এলাকায় ২১টি মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ নিয়েছেন। এর মধ্যে আক্কেলপুর উপজেলার নবাবগঞ্জ, পূর্ব রাজকান্দা, ও রেলকলনি মণ্ডপে কাজ করছেন। আকার ভেদে প্রতিটি প্রতিমার পারিশ্রমিক নিচ্ছেন ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা।

আক্কেলপুর কেন্দ্রীয় দূর্গা মন্দিরের সভাপতি শ্রী কমল চন্দ্র দাস বলেন, “এখানে আমরা ২০০টি পরিবার বসবাস করি। দীর্ঘ দিন ধরে এই মন্দিরে পুজা অর্চনা হয়ে আসছে। বিজয়া দশমীর দিন বিশাল মেলা বসে মন্দির প্রাঙ্গণে।আমাদের এই মন্দিরটি তুলশী গঙ্গা নদী সংলগ্ন হওয়ায় প্রতি বছর নৌকায় মা দূর্গাকে তুলে কয়েক মাইল প্রদক্ষিণ করে সন্ধ্যায় বিসর্জন দেওয়া হয়। এই সময় শত শত দর্শনার্থীরা নৌকায় চরে ভ্রমণ ও উপভোগ করে। প্রতিবছর জাঁকজমকভাবে পূজা উদযাপন করলেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে ছোট পরিসরে এবার আমরা আয়োজন করেছি।

এ বছর পৌর সভায় ৮টি, রুকিন্দীপুর ইউনিয়নে ৬টি, সোনামুখী ইউনিয়নে ০৩টি, গোপীনাথপুর ইউনিয়নে ১১টি, তিলকপুর ইউনিয়নে ৩টি রায়কালী ইউনিয়নে ৭টি সহ উপজেলায় মোট ৩৮টি মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে বলে উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এ্যাডঃ রাজেন্দ প্রসাদ আগরওয়ালা বলেন, পূজার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক থাকবে।

বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ উপজেলা শাখার সভাপতি ওমপ্রকাশ আগরওয়ালা বলেন, “ধর্ম যার যার উৎসব সবার” বাঙালি জাতির মহাউৎসব দূর্গাপুজা যা আদিকাল থেকে পালন হয়ে আসছে। প্রতিটি ঘরে ঘরে মহা আনন্দ উৎসব পালন হয়। এবার করোনাভাইরাসের কারণে কিছুটা ম্লান হবে। গতবারের তুলনায় এবার উপজেলার রুকিন্দীপুর ইউনিয়নের জালালপুর পূর্বপাড়া(গুমরা) ১টি পুজা মণ্ডপ বৃদ্ধি পেয়েছে। আসুন আমরা সবাই মিলে সারা পৃথিবী থেকে করোনা ভাইরাসের মুক্তির জন্য মা দূর্গার কাছে প্রার্থনা করি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম হাবিবুল হাসান বলেন, উপজেলার সকল পুজা মন্ডপে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ এর পাশাপাশি আইন শৃঙ্খলার কোন অবনতি ঘটবে না। করোনা ভাইরাসের কারণে সবাইকে পুজা মণ্ডপে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে মহা উৎসব পালন করার আহ্বান জানান।

আক্কেলপুর থানার ওসি মোঃ সাইদুর রহমান জানান, মন্ডপগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত ছাড়াও প্রতি পূজা মণ্ডবে পুলিশি টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ থাকবে।