নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি কাঠামো তৈরিতে যৌথভাবে কাজ করবে গ্রামীণফোন ও ইউএসএআইডি
নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি কাঠামো তৈরিতে যৌথভাবে কাজ করবে গ্রামীণফোন ও যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সাহায্য প্রদানকারী সংস্থা ইউএসএআইডি। এ যৌথ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দেশে করপোরেট পাওয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্টের (সিপিপিএ) একটি নীতিকাঠামো তৈরিতে একসঙ্গে কাজ করবে দুই প্রতিষ্ঠানের ব্যাজ প্রকল্পের বাস্তবায়ন অংশীদার টেট্রা টেক।
এ লক্ষ্যে সোমবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর জিপি হাউজে প্রতিষ্ঠান দুটি একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে। অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার হ্যান্স মার্টিন হেগ হেনরিকসেন এবং ইউএসএআইডি ব্যাজ প্রজেক্টের চিফ অব পার্টি (টেট্রা টেক) এড এলরাহাল নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
সিপিপিএ হলো করপোরেট ক্রেতা (অফ-টেকার) এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীর (ডেভেলপার, স্বাধীন বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী, বিনিয়োগকারী) মধ্যে বিদ্যুৎ ক্রয়চুক্তি। সিপিপিএ মডেলগুলোর মাধ্যমে ব্যবসার জন্য কোম্পানিগুলো প্রথাগত পাওয়ার ইউটিলিটিগুলোর ওপর নির্ভর না করে, বায়ু, সৌর, হাইড্রো বা বায়োমাস পাওয়ার প্ল্যান্টের মতো নবায়নযোগ্য উৎস থেকে সরাসরি তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী বিদ্যুৎ কিনতে পারবে। সরাসরি বিদ্যুৎ ক্রয়ের মাধ্যমে কোম্পানিগুলো তাদের কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ কমানোর পাশাপাশি টেকসই নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে তাদের সমর্থন প্রদান করতে পারবে।
অনুষ্ঠানে হ্যান্স মার্টিন হেগ হেনরিকসেন বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ২০১৯ সালের তুলনায় কার্বন নিঃসরণ ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছে গ্রামীণফোন। এ লক্ষ্য অর্জনে দ্রুত সিপিপিএ নীতি কাঠামো তৈরিতে জোর দিচ্ছি আমরা। নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহারে বাংলাদেশের রূপান্তরের যাত্রা ত্বরান্বিত করতে এবং বিশ্বব্যাপী ইএসজি দ্বারা পরিচালিত টেকসই ব্যবসায়িক কার্যক্রম বাড়াতে ইউএসএআইডি-ব্যাজ প্রজেক্ট এবং সরকারের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে গ্রামীণফোন।
ইউএসএআইডির ডেপুটি মিশন ডিরেক্টর রেন্ডি আলী বলেন,"নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের পথ আরো প্রশস্তের মাধ্যমে উজ্জ্বল, পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যত গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ; যার প্রতিফলন হচ্ছে গ্রামীণফোনের সঙ্গে এ অংশীদারত্ব। স্থিতিশীল এবং পরিবেশ-বান্ধব বাংলাদেশ গড়ার পথে বেসরকারি খাতের এ ধরনের অংশীদারত্ব বিশেষ ভূমিকা রাখবে এবং আমরা আশা করি, অন্যান্য কোম্পানিগুলোও এই ধরনের নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে এগিয়ে আসবে।
ইউএসএআইডি-ব্যাজ প্রজেক্টের চিফ অব পার্টি এড এলরাহাল বলেন, করপোরেট খাতের নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎস থেকে বিদ্যুৎ সংগ্রহের পদক্ষেপ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা এবং পরিবেশবান্ধব টেকসই ভবিষ্যত গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একইসঙ্গে পরিবেশগত এবং টেকসই লক্ষ্য অর্জন ও উন্নত ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ব্যবসা এবং কোম্পানিগুলোর জন্য এ পদক্ষেপ কার্যকর হবে।
এ সময় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ইউএসএআইডি বাংলাদেশের ডেপুটি মিশন ডিরেক্টর রেন্ডি আলী, গ্রামীণফোনের চিফ টেকনোলজি অফিসার জয় প্রকাশ, হেড অব সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট ফারহানা ইসলাম এবং কোম্পানির ক্লাইমেট অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট এক্সপার্ট বিপ্লব কুমার সাহাসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আয়োজকরা জানান, নবায়নযোগ্য জ্বালানি কাঠামো তৈরিতে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে সিপিপিএ। এই নীতি শিল্প ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বাড়ানোর পাশাপাশি বাংলাদেশকে টেকসই জ্বালানি উৎসের দিকে ধাবিত করতে প্রধান প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে। এছাড়া গ্রামীণ এলাকায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিশ্চিতের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান তৈরি, কমিউনিটির উন্নয়ন এবং পরিবেশ সংরক্ষণে ভূমিকা রাখবে সিপিপিএ।