চাকরি শেষে সজ্জিত গাড়িতে বাড়ি ফিরলেন পুলিশ সদস্য
এমএ জামান, (সাতক্ষীরা) :
সাতক্ষীরার দেবহাটা থানায় পুলিশ কন্সটেবল মোস্তফা আজম ৪২বছর ৬ মাসে চাকরি জীবন শেষ করেছেন। বিদায়কালে সহকর্মীদের ভালোবাসায় আপ্লুত হয়ে পড়েন। সম্মান ও শ্রদ্ধার সঙ্গে বিদায় দিয়ে পুলিশের সুসজ্জিত গাড়িতে তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেন ওসি। এমন বিদায়কে ঐতিহাসিক জানিয়ে পুলিশ বিভাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন এই পুলিশ সদস্য। ওসি বললেন, পুলিশকে হতে হবে মানবিক।
সদ্য অবসরে যাওয়া পুলিশ সদস্য মোস্তফা আজম (৫৯) মাগুরা জেলার ফুলবাড়ি গ্রামের মৃত মুন্সি মেহেদী হাসানের ছেলে। দেবহাটা থানা থেকে অবসরজনিত বিদায় নেন তিনি। মোস্তফা আজম তিন ছেলে ও এক কন্যা সন্তানের জনক। মেয়ে রিমা আক্তার, ছেলে সাগর মাহমুদ পুলিশের কন্সটেবল পদে চাকরি করছেন। আরেক ছেলে সাকিবুল হাসান এসএসসি পরীক্ষার্থী, ছোট ছেলে সকিবুল হাসান পড়ে সপ্তম শ্রেণিতে।
অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য মোস্তফা আজম বলেন, ১৯৭৯ সালে আমি কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ লাইনে পুলিশ সদস্য হিসেবে চাকরিতে যোগদান করি। এরপর থেকে বিভিন্ন থানা ঘুরেছি। সবশেষ দেবহাটা থানা থেকে চাকরি জীবনের অধ্যায় সমাপ্ত হল। ৪২ বছর ৬ মাস পুলিশ সদস্য হিসেবে দেশের সেবায় কাজ করেছি। প্রত্যেক মানুষের প্রত্যাশা থাকে তেমন আমারও ছিল। বিদায় মুহূর্তগুলো যেন স্মরণীয় হয় বা কর্মস্থল থেকে বিদায়টি যেন আনন্দঘন মুহূর্ত থাকে। তবে প্রত্যাশার চেয়ে প্রাপ্তি অনেক বেশি হয়েছে।
তিনি বলেন, দেবহাটা থানা থেকে আমাকে যেভাবে সম্মানের সঙ্গে বিদায় জানিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে তাতে বিদায়টি আমার কাছে ঐতিহাসিক বিদায় বলে মনে হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগের প্রতি আমি গভীরভবে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি, নিজেকে গর্ববোধ করছি।
দেবহাটা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ ওবায়দুল্লাহ্ বলেন, আমাদের আইজিপি-ডিআইজি ও সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের নির্দেশনা রয়েছে প্রত্যেক মানুষকে সম্মান দিতে হবে। সে সাধারণ জনগণ হোক আর পুলিশ সদস্যই হোক। পুলিশকে হতে হবে মানবিক, জনগণের প্রাপ্য সেবাটুকু সম্মানের সঙ্গে দিতে হবে। সেই নির্দেশনার আলোকে থানার পুলিশ সদস্য মোস্তফা আজমের অবসর জনিত বিদায়কালে দেবহাটা থানা পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে তার প্রাপ্য সম্মানটুকু দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, দীর্ঘ বছর চাকরি শেষে তিনি বিদায় নিয়েছেন। দেবহাটা থানা পুলিশের পক্ষ থেকে বিদায় সংবর্ধনা, ফুলেল শুভেচ্ছা শেষে তাকে সম্মানের সহিত পুলিশের ব্যবহৃত সুজজ্জিত গাড়িতে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। যেন বিদায় শেষে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করেন। পরিবারটিও যেন সম্মানবোধ করে। মানবিক উপলদ্ধি থেকেই এ আয়োজন করা হয়েছে।