South east bank ad

ঠাকুরগাঁওয়ে অসময়ের ঝড়-বৃষ্টিতে মাটিতে মিশে গেছে কৃষকের স্বপ্ন

 প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

ফরিদুল ইসলাম রঞ্জু, (ঠাকুরগাঁও) :

উত্তরের অবহেলিত জনপদ ঠাকুরগাঁও জেলা। ভারী কোন শিল্প কারখানা না থাকায় কৃষি কাজই কৃষকের একমাত্র আশা ভরসা। ১৮অক্টোবর থেকে ২০ অক্টোবর বুধবার তিন দিনের বৃষ্টিপাত ও দমকা বাতাসে ঠাকুরগাঁও জেলার শতশত বিঘা আমন ক্ষেত মাটির সাথে নুয়ে পড়েছে। বিভিন্ন এলাকায় আমন চাষিদের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আগাম শীতকালীন সবজি ও আলু চাষিরা। ১৮ অক্টোবর সোমবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া এই ঝড়ো বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে ঘরবাড়ি ও গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি না হলেও ঠাকুরগাঁও জেলার প্রায় সহস্র হেক্টর জমির আমন ক্ষেত মাটিতে নু‌য়ে গেছে। পনের থেকে বিশ দিন পরে যে ধান কৃষকের গোলায় উঠত কিন্তু হঠাৎ এই বৃষ্টিতে কৃষকের বুক ভরা স্বপ্ন এক নিমেশেই ভঙ্গ হয়ে গেছে। আবার আগাম জাতের ধান কেটে জমিতে খর শুকানো ও ধান মাড়াই নিয়ে বিপাকে পড়ছে অনেক কৃষক।এতে এবার আমন মৌসুমে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়বেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।

২০ অক্টোবর বুধবার সদর উপজেলার ভেলাজন,জগন্নাথপুর, দৌলতপুর,বেগুনবাড়ী ,সালান্দর, আখানগর, এলাকা সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আধা পাকা ধানের গাছ ও সবজি ক্ষেত পানিতে ডুবে আছে। অনেক কৃষক তাঁদের ফসল বাঁচাতে ক্ষেতে জমে থাকা পানির কারণে ধানের শীষ পচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় গোছা বেঁধে ধানগাছ তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আগাম জাতের আবার কেটে রাখায় ধান নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার ধন্দোগাঁও এলাকার কৃষক মুসলিম উদ্দীন ও বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের কৃষক আবু তালেব বলেন, আর মাত্র দশ থেকে পনেরো দিন পরই ক্ষেতের ধান পাকতে শুরু হতো। কিন্তু হঠাৎ এই বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে আমাদের ক্ষেতের ৬০-৮০ শতাংশ জমির আমন ধানের গাছ মাটিতে হেলে পড়েছে। ভেলাজান এলাকার কৃষক রমজান আলী বলেন, কয়েকদিন পরে নুয়ে যাওয়া ধান গাছ গুলোতে পোকার আক্রমণ শুরু হবে। পরে ধানের পরিবর্তে শুধু সুষ্ক চিটা পাওয়া যাবে। এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠা সম্ভব না।

ভেলার হাট এলাকার কৃষক বদিরুল বলেন, তিন বিঘা জমিতে আগাম ধানীগোল জাতের ধান লাগিয়েছি। মাঠে ধান কটে রেখেছি। দু একদিন পর ঘরে তুলবো। দুএকদিন পর ঘরে তুলব ভেবে কিন্তু এমন অসময়ের বৃষ্টিতে পাকা ধান ক্ষেতে পানি জমে গেছে এতে ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছি। এতে ধান তুলতে পারলেও সেসব ধানের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যাবে। এই কৃষক বলেন সার ও কীটনাশক সহ বিঘা প্রতি এবার খরচ হয়েছে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। এখন লোকসান হবে ৮ থেকে ১০হাজার টাকার মত।

ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো.আবু হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়নি। এই নিয়ে কাজ চলছে। তবে পাকা ধানের তেমন ক্ষতি হবে না। বৃষ্টি কমলে কৃষকরা ফসল কেটে ঘরে তুলতে পারবেন। অন্যদিকে যে সব জমির ধানে সবে মাত্র শীষ এসেছে বা বের হয়নি ঐ জমির ধানের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। এর পাশাপাশি আলু ক্ষেতেও পানি জমে থাকায় আলু চাষিরা সামান্য ক্ষয়- ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। এই কর্মকর্তা আরও বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৩৭হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ হয়েছে।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: