South east bank ad

পাখির গ্রাম সর্বরামপুর-দূর্গাপুর

 প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

আব্দুল্লাহ হেল বাকী, (নওগাঁ) :

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার পাখির গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে কাশিমপুর ইউপির সর্বরামপুর ও গোনা ইউপির দূর্গাপুর গ্রাম। প্রতিদিনই এই পাখি দেখতে ভিড় করেছেন অনেক পাঁখি প্রেমি মানুষরা। আবার অনেকেই গ্রামবাসীর অজান্তে পাখি শিকার করছেন। যদিও বা কেউ পাখি শিকার করতে আসলে গ্রামবাসির তোপের মুখে অনেকেই পালিয়ে যান। গ্রামবাসীর দাবী যদি সরকারি ভাবে পাখিগুলো সংরক্ষনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হতো তাহলে হয়তো বা এই দুটি গ্রাম পাখির অভয়ারন্যে পরিণত হতে পারতো আর নিরাপদেই হাজার হাজার পাখি এখানে প্রজনন করে বংশবিস্তার করতে পারতো।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দয্যের আরেকটি অপরূপ আকর্ষন হিসেবে এই দুটি গ্রামের বড় বড় গাছে কয়েক বছর ধরে বাস করছে শামুকখৈল ও তার একাধিক প্রজাতি এবং বকসহ কয়েকটি প্রজাতির প্রায় কয়েক হাজার পাখি। সারাক্ষণ চলে ওদের ডানা ঝাপটানো ও দল বেধে উড়ে যাওয়া আবার গাছে পড়া। কেউ বা উড়ে যাচ্ছে খাবার সংগ্রহ করতে। আবার কেউ খাবার মুখে করে খাবার নিয়ে এসে তুলে দিচ্ছে বাচ্চার মুখে। সারাদিন চলে তাদের এমন কর্মযজ্ঞ। সন্ধ্যার একটু আগে থেকে এই অঞ্চলটি মুখরিত হয়ে ওঠে পাখির কল-কাকলিতে। নির্বিঘেœ রাত কাটিয়ে আবার ভোর হলেই খাবারের সন্ধানে উড়ে যায়। দিনশেষে আবারও তারা নীড়ে ফিরে আসে। কিন্তু মাঝে মাঝে পাখি দেখতে আসার নামে কিছু কতিপয় ব্যক্তিরা সবার অজান্তেই গুলি করে পাখি শিকার করার ঘটনা ঘটছে। এতে করে ভয়ে অনেক পাখিই অন্যত্র চলে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা আসলাম হোসেন, বকুল ইসলামসহ অনেকেই বলেন আমাদের কাছে এই পাখিগুলো বর্তমানে আমাদের পরিবারের এক সদস্যে পরিণত হয়েছে। তাই সরকারের পক্ষ থেকে গ্রামে প্রবেশের আগেই যদি সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরন ও সচেতনমূলক কিছু পোস্টার, ব্যানার কিংবা সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে এই অঞ্চলকে পাখির অভয়ারন্য হিসেবে ঘোষনা করা হয় তাহলে হয়তো বা পাখি শিকার কমতো আর আগামীতে বিলুপ্ত প্রায় এই প্রজাতির পাখিগুলো এই অঞ্চলেই প্রজনন ও বংশবিস্তার করতে পারতো।

দর্শনার্থী কাজী কামাল হোসেন, শাহরুখ হোসেন আহাদসহ অনেকেই বলেন লোকমুখে শুনে এই পাখিগুলো দেখতে এসেছি। হাজার পাখির সমাবেশ খুব সুন্দর লেগেছে কিন্তু পাখিগুলোর নিরাপত্তার জন্য সরকারি ভাবে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। এই বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের দ্রুত কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন কামনা করছি। সঠিক পদক্ষেপই হয়তো বা একদিন এই হাজার হাজার পাখিগুলোকে জাতীয় সম্পদে পরিণত করতে পারে।

উপজেলা প্রকৃতি ও পাখি সংরক্ষন কমিটির সভাপতি ও গনমাধ্যমকর্মী এস.এম সাইফুল ইসলাম বলেন প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করতে বিলুপ্ত প্রায় এই পাখিগুলোর টিকে থাকা অনেক জরুরী। কিন্তু আমরা অনেক মানুষই নির্বিচারে বিলুপ্ত প্রায় এই পাখিগুলো শিকার করছি যা আইনের দৃষ্টিতে গুরুত্বর অপরাধ। তাই এক্ষেত্রে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের কোন বিকল্প নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন আমি নিজে ওই পাখির অঞ্চল পরিদর্শন করবো। এছাড়া এই পাখিগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। এছাড়া সরকারের পাশাপাশি আমাদের সকলকেই এই সম্পদগুলো রক্ষা করতে আরো বেশি সচেতন হতে হবে এবং এই পাখিগুলোর নিরাপত্তাজনিক বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

পর্যটকদের সচেতননা, স্থানীয়দের পাশাপাশি সরকারের দ্রুত পদক্ষেপই পারে হাজার হাজার পাখির নিরাপদ আবাসন নিশ্চিত করতে। যদি এই পাখিগুলো এই অঞ্চলে নিরাপত্তা ও আর মানুষের ভালোবাসা পায় তাহলে হয়তো বা পাখিগুলো এখানেই তাদের ভবিষ্যৎ প্রজনন ও বংশবিস্তারের আবাসস্থল হিসেবে বেছে নিতে পারতো এমনটাই আশা সচেতন মহলের।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: