South east bank ad

পাহাড়ে শুরু হয়েছে মারমাদের ওয়াগ্যোই পোয়ে বা প্রবারণা উৎসব

 প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

সোহেল কান্তি নাথ, (বান্দরবান) :

বান্দরবানে শুরু হয়েছে মারমা সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব মাহা ওয়াগ্যোই পোয়ে বা প্রবারণা পূর্ণিমা। এই উৎসবকে ঘিরে মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) সকাল থেকে মারমা পল্লী গুলোতে চলছে নানা আয়োজন বইছে আনন্দের বন্যা। আষাঢ়ী পূর্ণিমার পর থেকে তিনমাস বর্ষা বাস পালন শেষে শুরু হয় মারমা সম্প্রদায়ের আকর্ষণীয় এ উৎসব ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে বা প্রবারণা পূর্ণিমা। পার্বত্য জেলা বান্দরবানের মারমা সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ওয়াগ্যোই পোয়ে বা প্রবারণা পূর্ণিমা। প্রতি বছর পূর্ণিমার তিথিতে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা এ উৎসবটি পালন করে থাকে। উৎসবকে ঘিরে মারমা পল্লী গুলোতে বইছে এখন আনন্দের বন্যা। ২০ অক্টোবর থেকে ২ দিন ব্যাপী পার্বত্য জেলা বান্দরবানে পালিত হবে এ উৎসব। এরমধ্যে রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্টান, রথযাত্রা, বিভিন্ন পাড়ায় ও গ্রামে পিঠা তৈরীর উৎসব, ফানুস বাতি ওড়ানো, হাজার প্রদীপ প্রজ্জলনসহ নানা আয়োজন। উৎসবের প্রধান আকর্ষণ বাঁশের তৈরী একটি রথ (পাখি সদৃশ) যুবক যুবতীরা এতিহ্যবাহী মার্মা গানের সাথে রথটি টেনে বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহার প্রদক্ষিণ করে এসময় রথের মধ্যে মোমবাতি আগরবাতি জ্বালিয়ে উৎসবের শেষে সাঙ্গু নদীতে বিসর্জন দেয়। আর এ উৎসব আয়োজনের লক্ষে প্রতিটি ক্যং ও পাহাড়ী পল্লীতে মারমা যুবক যুবতীরা দলবেধে তৈরী করছে নানা রঙের ফানুষবাতি, রথ ও বেতের তৈরী নানা সামগ্রী। রোয়াংছড়ির মারমা তরুণী মাসিং খই বলেন ওয়াগ্যোই পোয়ে আমাদের খুবই আকর্ষণীয় একটি উৎসব এ উৎসবে আমরা ফানুস উড়াবো তাই অনেক আগে থেকে বন্ধু বান্ধবীরা মিলে ফানুস বানিয়েছি পরপের সময় উড়াবো। উহ্লায়ী মার্মা বলেন প্রবারনার সময় রথ টানবো পিঠা বানাবো বন্ধুরা মিলে ফানুস উড়াবো খুব মজা হবে তাই বন্ধুরা মিলে অনেক গুলো ফানুস বানিয়েছি।

তিনমাস বর্ষাবাস শেষে প্রবারণা পুর্ণিমার দিন বিহার থেকে বের হয়ে সব বিবাদ ভুলে গিয়ে একে অন্যের প্রতি সম্ভার্ষণ জানানো ও মনের সব সংকীর্ণতা পরিহার করে অহিংসার মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে মহামিলনের নিজ সংসারে ফিরে আসা হয়, তাই এই উৎসবে মেতে ওঠবে মারমা তরুণ-তরুণী, কিশোর কিশোরী, দায়ক-দায়িকা, উপাসক উপাসিকা সহ সকল বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা। শুধু তাই নয় পাহাড়ী বাঙালী ও বাইরে থেকে আগত পর্যটকসহ সবার অংশগ্রহণে মারমাদের এ উৎসবটি হয়ে উঠে সম্প্রীতির মিলন মেলা। তাই এই মহামিলনে সকলের আনন্দকে আরো বেগমান করতে ২ দিন ব্যাপী আয়োজন করা হয়েছে নানা আনুষ্ঠানিকতার। উৎসব উৎযাপন কমিটির সভাপতি লাইচিং মার্মা বলেন প্রতিবছরের মত এবারও আমরা ওয়াগ্যোই পোয়ে বা প্রবারণা পূর্ণিমার আয়োজন করেছি। তবে করোনা মহামারীর কারনে এবার আমাদের অনুষ্ঠানমালা কিছুটা সীমিত করা হয়েছে। প্রত্যেকবার ৩ দিন ৪ দিন অনুষ্ঠান করলেও এবার আমরা ২ দিন ব্যাপী অনুষ্ঠান পালন করব। প্রথমদিন ফানুস উড়ানো হবে রাতে পিঠা তৈরী করা হবে ৫টি পয়েন্টে এবং পরের দিন রথ টেনে মন্দির গুলো প্রদক্ষিণ শেষে নদীতে বির্সজনের মধ্য দিয়ে আমাদের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। এদিকে উৎসব পালনে যাতে কোন ধরনের সমস্যা না হয় এবং নিরাপদে যাতে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে পারে সেজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ।

এবিষয়ে বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: শহিদুল ইসলাম জানান, এই উৎসবকে ঘিরে প্রায় সময়ই দেশী বিদেশী পর্যটকেরা বান্দরবান আসে তাই এই অনুষ্টানের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে আমরা বিভিন্ন স্থরের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি । আশা করি সবাই নিরাপদে মিলেমিশে উৎসব উদযাপন করতে পারবে।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: