সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় থানায় মামলা, তিন আসামি কারাগারে
আমজাদ হোসেন শিমুল, (রাজশাহী ব্যুরো) :
রাজশাহীতে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় ১৪ জন দুষ্কৃতিকারীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৮-২০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। গত রবিবার (৩১ অক্টোবর) দিবাগত রাত পৌনে ১২টায় রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের (আরইউজে) সাধারণ সম্পাদক মো. তানজিমুল হক বাদি হয়ে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় এই মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় মারপিট, চুরি, ছিন্তাই ও ভাঙচুরের অভিযোগ তথা ১৪৩, ৩২৩, ৩২৫, ৪২৭, ৩০৭, ৩৭৯ এবং ৫০৬ (২) ধারায় অভিযোগ করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন- ফারুক আহমেদ, রেজাউল করিম, মো. লিয়াকত, মো. রাজন, মাজহারুল ইসলাম চপল, আল-আমিন হোসেন, শাহীনুর রহমান সোনা, আবু কাউসার মাখন, শামসুল ইসলাম, সুমন হোসেন, সুভাষ, হারুনুর রশীদ, সাগর নোমানী ও শাহীন সাগর। এরা প্রত্যেকেই দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিক পরিচয়ে রাজশাহীতে নানা অপকর্ম করে আসছিলেন।
এদের মধ্যে ফারুক, রেজাউল ও লিয়াকতকে রবিবার বিকালে পুলিশ আটক করে। সম্প্রতি চাদা না পেয়ে ফেসবুকে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে ফারুকের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন রাজশাহী শিক্ষা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা। লিয়াকতের নামে বাগমারা থানায় চাঁদাবাজির একটি মামলা আছে। এ ছাড়া রেজাউলের নামে বোয়ালিয়া থানায় চাঁদাবাজি ও মারামারির আরও দুটি মামলা রয়েছে।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে প্রায় সবার নামেই থানায় আগে থেকেই মামলা আছে। এরমধ্যে চাঁদাবাজির বেশ কয়েকটি মামলার আসামি মাজহারুল ইসলাম চপল। সোমবার দুপুরের পর গ্রেপ্তার রেজাউল, লিয়াকত ও ফারুককে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বোয়ালিয়া থানার উপ-পরিদর্শক মো. শাহীন আকতার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আদালত আসামিদের কারাগারে পাঠিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা রোববার সকালে নগরীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান চত্ত্বরে আরইউজের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, স্থানীয় দৈনিক সানশাইনের স্টাফ রিপোর্টার রাজু আহমেদ, জনকণ্ঠের ফটোসাংবাদিক সেলিম জাহাঙ্গীর, যুগান্তরের ফটোসাংবাদিক আজম খান ও গণধ্বনি প্রতিদিনের ফটোসাংবাদিক কাবিল হোসেনের ওপর হামলা চালান। এ সময় আজম খানের ক্যামেরা এবং রফিকুল ইসলামের শার্টের পকেট থেকে ১৯ হাজার ৮৪০ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। রাজু আহমেদের একটি মোবাইল ফোনও কেড়ে নিয়ে আছড়ে ভেঙে ফেলা হয়।
ওই ঘটনার প্রতিবাদে রোববার বেলা ১১টা থেকে বিকাল পৌনে ৫টা পর্যন্ত কামারুজ্জামান চত্বরে সড়ক অবরোধ করেছিলেন সাংবাদিকরা। তাঁরা অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার এবং এদের প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মনের প্রত্যাহার দাবি করেন। ওসিকে প্রত্যাহারে সাংবাদিকরা ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে ওসিকে প্রত্যাহার করা না হলে আগামীকাল বুধবার থানা ঘেরাও কর্মসূচির ঘোষণা দেন রাজশাহীর কর্মরত সাংবাদিকরা।