যা জানতে হবে ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্ট কেনার আগে
ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্ট কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতারা নানাভাবে প্রতারিত হতে পারেন। সতর্ক না থাকলে আইনগত প্রতিকার পাওয়ার ক্ষেত্রেও নানামুখী ভোগান্তিতে পড়তে হতে পারে।
ফ্ল্যাট কেনার আগে রিয়েল এস্টেট ডেভেলপমেন্ট আইন ভালোভাবে জানতে হবে। তার পর ডেভেলপার কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। যেন এই কোম্পানিগুলো আইনের ফাঁক ফোঁকরে আপনাকে প্রতারিত করতে না পারে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয় একজন দক্ষ আইনজীবীর সহায়তা নেওয়া।
ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্ট কেনার ক্ষেত্রে প্রথমেই ক্রেতাকে ডেভেলপার কোম্পানির রেজিস্ট্রেশন নম্বর, পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানসহ সদস্যদের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে নিতে। প্রয়োজনে কর্তা ব্যক্তিদের জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করে নিতে হবে। ডেভেলপার কোম্পানি জমির প্রকৃত মালিকের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে জমির মালিকের সঙ্গে ডেভেলপার কোম্পানির চুক্তিপত্র দেখে নিতে হবে। ফ্ল্যাট নির্মাণ করা জমিতে কোনো সমস্যা আছে কিনা তা যাচাই করে নিতে হবে। সঠিক নকশা মেনে ফ্ল্যাট করা হয়েছে কিনা তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে।
ফ্ল্যাট কেনার আগে চুক্তিপত্র ভালোভাবে পড়ে নিতে হবে। কোনো বিষয় বুঝতে সমস্যা হলে দক্ষ আইনজীবী বা ডেভেলপার কোম্পানির কাছ থেকে জেনে নিতে হবে। বায়না চুক্তি রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। বুকিং মানি দেওয়ার সময় এবং কিস্তির টাকা দেওয়ার সময় ডেভেলপারের দেওয়া প্রতিটি ডকুমেন্ট সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। যেন পরবর্তীতে আইনগত কোনো সমস্যা হলে সেগুলো প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা যায়। প্রয়োজনে ফ্ল্যাটের বুকিং দেওয়ার আগে বেসরকারি সংস্থা ‘রিয়েল এস্টেট কনজ্যুমার ক্লাব’-এর সহায়তা নিতে পারেন।
কাজ শেষ হওয়ার পর ক্রেতার কাছে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করে ডেভেলপার কোম্পানি। অনেক ক্ষেত্রে কিছু কোম্পানি ফ্ল্যাট হস্তান্তরে দেরি করে। সেক্ষেত্রে নিজ দায়িত্বে ডেভেলপার কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে ফ্লাট বুঝে নিতে হবে। ফ্ল্যাটের দখল পাওয়ার পর যেন কোনো ঝামেলায় পড়তে না হয় সেজন্য ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন যত দ্রুত করা যায় ততই ক্রেতার জন্য ভালো। এতে ক্রেতা হিসেবে আপনি সুরক্ষিত থাকবেন।
ফ্ল্যাটের দখল পাওয়ার পর রেজিস্ট্রেশন করতে সমস্যা হলে সাংবিধানিক একটি উপায় আছে। একজন ক্রেতা এই সুযোগটি গ্রহণ করতে পারেন। রিয়েল এস্টেট আইন, ২০১০-এর ৩৬ ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রচলিত ১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ২১-ক ধারা এবং ১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ১১৩ ও ১১৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সংবিধানের ১০২(১) অনুযায়ী অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিকার পেতে পারেন।