South east bank ad

বঙ্গবন্ধুর নামে হবে কক্সবাজার বিমানবন্দর

 প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারী ২০২২, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   এয়ারলাইন্স

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম

আন্তর্জাতিক মানে উত্তীর্ণ করার পাশাপাশি কক্সবাজারের অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরের নামও পরিবর্তন করা হবে। নতুন নাম হবে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’। এরই মধ্যে নামকরণের অনুমতি দিয়েছে ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট’।

এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী গতকাল আমাদের সময়কে বলেন, ‘কক্সবাজার বিমানবন্দরটি বঙ্গবন্ধুর নামে করার অনুমতি দিয়েছে ট্রাস্ট। এখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হবে।’

জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে কোনো নামকরণ করতে হলে ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর মেমোরিয়াল ট্রাস্টের’ অনুমতি লাগে। এর অংশ হিসেবেই

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরের নামকরণের প্রস্তাব পাঠানো হয় গত ৫ ডিসেম্বর। এর পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাস্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাশুরা হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে ট্রাস্টের নামকরণের অনুমতির বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।

২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর আওয়ামী লীগ যে কয়েকটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার একটি ছিল রাজধানীর কাছে আরও একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৈরি করা। মূলত ঢাকাকে আকাশ যোগাযোগের সংযোগস্থল বা ‘হাব’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাই ছিল এর উদ্দেশ্য। জাতির পিতার নামে সেই বিমানবন্দরের নামকরণ করা হয় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

২০১০ সালে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা প্রাথমিক ব্যয় ধরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। প্রকল্প প্রস্তাবনায় এ বিমানবন্দরে তিনটি রানওয়েতে প্রতিদিন যাত্রীবাহী ৪০০টি ও কার্গোবাহী ২০০টি ফ্লাইট ওঠানামার সুযোগ রাখা হয়েছিল। এ বিমানবন্দরের জায়গা হিসেবে সরকারের প্রাথমিক বাছাইয়ে উঠে আসে মুন্সীগঞ্জের আড়িয়ল বিল ও ময়মনসিংহের ত্রিশালের নাম। পরে ত্রিশালকে বাদ দিয়ে আড়িয়ল বিলেই বিমানবন্দর তৈরির পরিকল্পনা করে সরকার।

কিন্তু শুরুতেই স্থানীয়দের বাধার মুখে পড়ে এই প্রকল্প। আন্দোলনের মুখে আড়িয়ল বিলে বিমানবন্দর নির্মাণের কাজ স্থগিত করা হয়। পরে সিদ্ধান্ত হয়, বিমানবন্দর হবে পদ্মার ওপারে, মাদারীপুর কিংবা শরীয়তপুরে। এখন ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকায় কোথায় বিবমানবন্দরটি হবে তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে কক্সবাজার বিমানবন্দরটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে নামকরণের প্রক্রিয়া এগিয়ে গেছে।

‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট’-এর সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি প্রস্তাবিত কক্সবাজার বিমানবন্দরটি ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’ নামে নামকরণ করার অনুমতি দিয়েছেন বলে ট্রাস্ট থেকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, কক্সবাজার বিমানবন্দরে বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা, নভোএয়ারের দৈনিক ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ১৮-২০টি ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে। কক্সবাজার-যশোর রুটে চিংড়ি পোনা সরবরাহ করছে কয়েকটি কার্গো বিমান। ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের দৈর্ঘ্য ১০ হাজার ৫০০ ফুট।

সমুদ্রজলের রানওয়ের সম্প্রসারণ প্রকল্প শেষ হলে মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের বড় বড় উড়োজাহাজ প্রস্তাবিত কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করতে পারবে। সাগরবক্ষে বিস্তৃত হওয়ার পর কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ের দৈর্ঘ্য হবে ১০ হাজার ৭০০ ফুট। এটি হবে দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

দেশে প্রথমবারের মতো সমুদ্রবক্ষে নির্মিতব্য ১ হাজার ৭০০ ফুটের রানওয়ের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫৬৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, যার পুরোটাই অর্থায়ন করছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। রানওয়ের অন্তত ৭০০ ফুট থাকবে সমুদ্রের পানির ওপর। এটিই হবে দেশের দীর্ঘতম রানওয়ে। বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হলে কক্সবাজারের পর্যটন ও অর্থনৈতিক বিকাশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

চীনের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চাংজিয়াং ইচাং ওয়াটার ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যুরো (সিওয়াইডব্লিউসিবি) ও চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন- জেভি যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। আগামী ৫০ বছরের চাহিদা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য বিশেষ এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। রানওয়ের সম্প্রসারণ কাজ শেষ হলেই এখানে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা ওঠানামা করতে পারবে ৩৮০টির মতো সুপরিসর এয়ারবাস।

কক্সবাজার বিমানবন্দর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনেক স্বপ্ন উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, ‘এই রানওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে কক্সবাজারের পর্যটন ও অর্থনৈতিক বিকাশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে। এই বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক এভিয়েশন হাব হিসেবে ব্যবহার হবে। আন্তর্জাতিক টার্মিনাল হবে, বিদেশি পর্যটকেরা সরাসরি কক্সবাজার আসার সুযোগ পাবেন। ফলে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকা-ে আরও গতিশীলতা আসবে।’

BBS cable ad

এয়ারলাইন্স এর আরও খবর: