বন্যার প্রভাব বাজারে, মূল্য ঊর্ধ্বগতি
নোয়াখালীতে এবার স্মরণকালের ভয়াবহতম বন্যা হয়েছে। সাধারণত নোয়াখালীতে বন্যার তেমন একটা প্রভাব পড়েনা। তবে টানা কয়েকদিন বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। কয়েকদিন গেলে আবার তা নেমে যায়। কিন্তু প্রতি বছরের মতো এবারও প্রথমে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে টানা বৃষ্টি ও উজানের জোয়ারের সাথে নোয়াখালীতে দেখা দেয় বন্যা। পুরো জেলা বন্যার কবলে পড়ে। বাদ যায়নি হাট-বাজারও।
নোয়াখালী জেলা শহরের বাসিন্দাদের জন্য প্রধান খুচরা বাজার হচ্ছে নোয়াখালী পৌর বাজার। এটি মূলত: শহরের মানুষের দৈনন্দিন নিত্য প্রয়োজনীয় কেনার জন্য একমাত্র বাজার। এবছর বন্যায় এ বাজারটিও সম্পূর্ণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যা ভয়াবহ আকার নিলে পুরো বাজার পানিতে তলিয়ে যায়। কোথাও বিভিন্ন পণ্য নিয়ে দোকান বসানো সম্ভব হয়নি ব্যবসায়ীদের। তারা বন্যার শুরু থেকে বাজারের পাশে শহরের প্রধান সড়ক দখল করে বাজার বসিয়েছে। এতে শহরবাসী যেমন চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে, তেমনি প্রতিদিন হচ্ছে তীব্র যানজট। অন্যদিকে, ক্রেতাদের অভিযোগ বন্যার দোহাই দিয়ে বেশী দাম রাখছেন বিক্রেতারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, নোয়াখালী পৌর বাজারের প্রতিটি অলি গলি এখনো পানির নীচে রয়েছে। কোথাও হাঁটু সমান পানি, কোথাও তার চেয়ে একটু কম। কিন্তু পুরো বাজার এখনো পানিতে সয়লাব। ব্যবসায়ীরা নিত্যদিনের পসরা নিয়ে বসতে পারছেনা। মুদিপণ্যের গলিতে দেখা যায় অনেক দোকানের মেঝেতে এখানো পানি রয়েছে। মুরগী, গরু, খাসী, মাছের গলিতে দেখা যায়, বন্যার পানির সাথে ময়লা-আর্বজনার পানি মিশে একাকার। ফলে বাজারের পানি হয়ে উঠেছে এক ধরণের চর্ম ও পানিবাহিত রোগের উৎস।
সুবেল নামে একজন সবজী ব্যবসায়ী বলেন, বাজারে আমি যে জায়গায় বসতাম, সেখানে হাঁটুর উপরে পানি ছিলো। প্রথমে মালামাল সব নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো। পরে রাস্তার পাশে এসে বসেছি। ফজলু নামের একজন মাছ ব্যবসায়ী বলেন, বাজারের সবচেয়ে উঁচু ভিটা হচ্ছে মাছের গলির। কিন্তু এখানেও পানি ছিলো হাঁটু সমান। ক্রেতারা এই ময়লা পানিতে আসতে পায়না। তাই বাধ্য হয়ে প্রধান সড়কের পাশে বসেছি।
বাহার নামে একজন মুরগী ব্যবসায় জানান, আমরা যারা মুরগীর ব্যবসা করি, তারা কোথাও যেতে পারিনি। কারণ আমাদের রয়েছে অধিক সংখ্যক মুরগী, সাথে মুরগীর খাঁচা। এখনতো ক্রেতারা মুরগী বাজার থেকে কিনে জবাই করে কেটেকুটে নেয়। আমরা এসব সামগ্রী নিয়ে রাস্তায় যেতে পারিনি। ফলে পুরো বন্যার পানির সাথে যুদ্ধ করে আমরা মুরগী ব্যবসায়ীরা এখানে রয়েছি। ময়লা পানিতে চলাচলের কারণে অনেকের পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে।