South east bank ad

আইপি বন্ধ, পেঁয়াজ ‘চাঙ্গে’—বাড়ছে দাম

 প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ক্রয়-বিক্রয়

আইপি বন্ধ, পেঁয়াজ ‘চাঙ্গে’—বাড়ছে দাম

ভরা মৌসুমেও দামের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় অস্থির পেঁয়াজের বাজার। কোনো ঘাটতি নেই, তবু পণ্যটির দাম বাড়ছে।
আর কারণ হিসেবে মজুত করে রাখা, আমদানির অনুমতি (আইপি) বন্ধ রাখা এবং রমজানে দাম বেশি পাওয়ার আশায় অপরিপক্ব পেঁয়াজ বাজারে বেশি সরবরাহ করায় পরিপক্ব পেঁয়াজ বাজারে কম আসার মতো বিষয়গুলোকে দায়ী করছেন পাইকার ও আড়তদাররা।

পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে পেঁয়াজচাষি, ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা সবাই প্রায় একই কথা বলছেন। তারা বলছেন, জমিতে এখন আর কোনো পেঁয়াজ নেই। সব পেঁয়াজ কৃষকের ঘরে উঠে গেছে। এসব পেঁয়াজের বেশিরভাগই কৃষক নিজেরা ও মজুতদারেরা কিনে সংরক্ষণ করছেন। ভবিষ্যতে দাম আরও বাড়বে, সে আশায় বাজারে তুলনামূলক কম পেঁয়াজ আনছেন। এসব কারণে পেঁয়াজের মৌসুম হওয়া সত্ত্বেও বাজারে পণ্যটির দাম বেড়ে গেছে।

এ ছাড়া বর্তমান দামকে যৌক্তিক উল্লেখ করে অতিরিক্ত মজুত ঠেকাতে সরকারকে সজাগ থাকার তাগিদ দিয়েছেন কৃষি অর্থনীতিবিদরা।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাজধানীর শ্যামবাজার, সুত্রাপুর, রায়সাহেব বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর পাড়া-মহল্লায় সব ধরনের পেঁয়াজ আরও ৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে যেসব পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে, তার বেশিরভাগ ফরিদপুর অঞ্চলের। তবে পাবনায় উৎপাদিত পেঁয়াজের দাম একটু বেশি। পাবনার পেঁয়াজ ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বাজারে এখন আমদানি করা পেঁয়াজ নেই বললেই চলে। দুই-এক দোকানে যা পাওয়া যায়, সেগুলোর কেজি ৫৫ টাকার আশপাশে।

শ্যামবাজারে পাইকারিতে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৮ টাকা কেজি দরে, যা রোজার ঈদের আগেও ছিল ২৫ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে।

পুরান ঢাকার পেঁয়াজের সবচেয়ে বড় আড়ত শ্যামবাজার। সেখানকার আড়তদাররা জানান, গত দুই সপ্তাহ ধরে পেঁয়াজের বাজার অস্থির। কারণ এখন আর জমিতে পেঁয়াজ নেই। সব পেঁয়াজ কৃষকের ঘরে উঠে গেছে। এসব পেঁয়াজের বেশির ভাগই কৃষকেরা সংরক্ষণের জন্য মজুত করেছেন। আবার অনেক মজুতদারও সংরক্ষণের জন্য পেঁয়াজ কিনেছেন। সে পেঁয়াজ তারা বাজার পরিস্থিতি দেখে বিক্রি করবেন। কৃষক ও মজুতদারেরা দাম বাড়ার আশায় বাজারে পেঁয়াজ কম ছাড়ছেন। এ ছাড়া চলতি বছর এখন পর্যন্ত দেশে ভারতীয় পেঁয়াজ তেমন আসছে না। এ কারণে দেশি পেঁয়াজের বেশ চাহিদা রয়েছে। এই সুযোগে কৃষকেরা কিছুটা দাম বাড়াতে পেরেছেন।

এ বিষযে মেসার্স নিউ বাণিজ্যালয়ের ম্যানেজার মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, পেঁয়াজ মজুত করেছে, সেজন্য দাম বাড়ছে। কৃষক ও মধ্যস্বত্বভোগীরা এটা করেছে। ঈদের আগেও পাইকারিতে ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। এখন সেটা ৪২ থেকে ৪৭ টাকা কেজি। তিন দিন আগে ছিল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে ২১০০ থেকে ২২০০ টাকা মণ দরে পেঁয়াজ বেচাকেনা হয়েছে। এখন ১৮০০ থেকে ১৯০০ টাকা মণ আজকের বাজার। দাম বাড়ার ফলে বেচাবিক্রি কমে গেছে। বিভিন্ন লোকজন এ খাতে ঢুকে গেছে। মজুতদারি কমাতে পারলে সামনে পেঁয়াজের দাম কমবে। তবে কোরবানির ঈদে আমাদের পেঁয়াজের সংকট হবে না।

মেসার্স রাজিব বাণিজ্য ভাণ্ডারের প্রদেশ পোদ্দার বলেন, মুড়িকাটা পেঁয়াজের কৃষক এবার লোকসান গুনেছে। তাই কৃষক, গৃহস্থ ও বেপারিরা হালি পেঁয়াজ মজুত করছে। তারা এখন চাঙ্গে (বড় বা উঁচু মাচা) পেঁয়াজ রেখে দেবেন। একটু লাভের আশায় মাস দুই পর সেখান থেকে পেঁয়াজ আস্তে আস্তে বাজারে ছাড়বেন। এতেই চড়েছে বাজার। ফলে বিপাকে পড়ছেন ভোক্তারা।

BBS cable ad

ক্রয়-বিক্রয় এর আরও খবর: