এক বছরের ব্যবধানে বিএটিবিসির সিগারেট বিক্রি কমেছে ৩০ দশমিক ৮৯ শতাংশ

ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানির (বিএটিবিসি) চলতি ২০২৫ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) আয় বেড়েছে ৫ দশমিক ১১ শতাংশ। আয় বাড়লেও আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফায় ধস নেমেছে। এ সময়ে বিএটিবিসির নিট মুনাফা কমেছে ৫৫ দশমিক ১৩ শতাংশ। কোম্পানিটির দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন) আর্থিক প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্যানুসারে, চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে বিএটিবিসির আয় হয়েছে ২৩ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ২২ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৫ দশমিক ১১ শতাংশ। আয় বাড়লেও আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির সিগারেট বিক্রি কমে গেছে। প্রথমার্ধে বিএটিবিসির সিগারেট বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৬৪২ কোটি ২০ লাখ শলাকা, আগের হিসাব বছরে বিক্রি হয়েছিল ৩ হাজার ৮২৩ কোটি ৪০ লাখ শলাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির সিগারেট বিক্রি কমেছে ১ হাজার ১৮১ কোটি ২০ লাখ শলাকা বা ৩০ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
সিগারেট বিক্রি কমে যাওয়ায় প্রথমার্ধে কোম্পানিটির নিট মুনাফা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। আলোচ্য সময়ে বিএটিবিসির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৪১৫ কোটি টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৯২৫ কোটি টাকা। প্রথমার্ধে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭ টাকা ৬৯ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১৭ টাকা ১৪ পয়সা।
চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বিএটিবিসির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৮০ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই প্রান্তিকে যা ছিল ৯ টাকা ৪৮ পয়সা। ৩০ জুন ২০২৫ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৯৯ টাকা ৫৭ পয়সায়।
সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২৪ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৫০ শতাংশ চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে বিএটিবিসির পর্ষদ। এর আগে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ১৫০ শতাংশ অন্তর্বর্তী নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। সে হিসেবে সমাপ্ত ২০২৪ হিসাব বছরে ৩০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পেয়েছে বিনিয়োগকারীরা। আলোচ্য হিসাব বছরে বিএটিবিসির ইপিএস হয়েছে ৩২ টাকা ৪২ পয়সা, আগের হিসাব বছরের যা ছিল ৩৩ টাকা ১১ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ১০৬ টাকা ৮৮ পয়সায়।
৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ১০০ শতাংশ চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশের সুপারিশ করে বিএটিবিসির পর্ষদ। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩৩ টাকা ১১ পয়সা, আগের হিসাব বছর যা ছিল ৩৩ টাকা ১০ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৯৯ টাকা ৩৩ পয়সায়।
৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২২ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০০ শতাংশ চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে বিএটিবিসির পর্ষদ। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩৩ টাকা ১০ পয়সা, আগের হিসাব বছরের যা ছিল ২৭ টাকা ৭২ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ৭৬ টাকা ২৭ পয়সায়।
বিএটিবিসির সর্বশেষ ঋণমান দীর্ঘমেয়াদে ‘ট্রিপল এ’ ও স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি-ওয়ান’। ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২৪ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন এবং রেটিং ঘোষণার দিন পর্যন্ত প্রাসঙ্গিক অন্যান্য পরিমাণগত ও গুণগত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ প্রত্যয়ন করেছে ক্রেডিট রেটিং ইনফরমেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (ক্রিসল)।
১৯৭৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিএটিবিসির অনুমোদিত মূলধন ৫৪০ কোটি টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনও একই। রিজার্ভে রয়েছে ৫ হাজার ২২৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ৫৪ কোটি। এর ৭২ দশমিক ৯১ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে। এছাড়া সরকারের কাছে দশমিক ৬৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৪ দশমিক ১১, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪ দশমিক ১৯ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।