ফেনীতে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতি দুই হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা
ফেনীতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বিভিন্ন খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জনস্বাস্থ্য, অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন খাতে আনুমানিক ক্ষতি হয়েছে দুই হাজার ৮৫৯ কোটি ৫৮ লাখ ৯১ হাজার ৩১৩ টাকা।
বৃহস্পতিবার জেলায় বন্যার ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ প্রকাশ করে জেলা প্রশাসন।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, বন্যায় জেলায় সর্বোচ্চ ক্ষতি নিরূপিত হয়েছে শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে। এ খাতগুলোতে মোট ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে ১ হাজার ২০ কোটি ৭২ লাখ ১৪ হাজার ৩৯ টাকা। সর্বনিম্ন ৪ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে মোবাইল ফোন টাওয়ারগুলোতে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, বন্যায় ৮ হাজার ৯৫টি কাঁচাঘর, ২৫০টি আধাপাকা ঘর সম্পূর্ণ ধসে গিয়ে ক্ষতি হয়েছে ১৬৩ কোটি ১১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। ৫৩ হাজার ৪৩৩টি কাঁচাঘর এবং ২ হাজার ৬৩২টি আধাপাকা ঘরের আংশিক ক্ষতির পরিমাণ ৩৭০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। সবমিলিয়ে ৬৪ হাজার ৪১৫টি ঘরবাড়িতে মোট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৫৩৩ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
বন্যায় বিদ্যুৎ বিভাগের ৭০৭ কিলোমিটার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের আংশিক ক্ষতি হয়েছে ৩ কোটি ৯৭ লাখ ১৫ হাজার ৫৯৮ টাকা। সড়ক, ব্রিজ, কালভার্ট, নদী ও বাঁধে ক্ষতি হয়েছে ৯২৮ কোটি ৯৯ লাখ ৩২ হাজার ৯৩৮ টাকা। এছাড়া নার্সারি ও বনায়নের ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি ৩৮ লাখ ৬৫ হাজার ৬৪৮ টাকা।
স্কুল, মাদরাসা ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৩৯ কোটি ২ লাখ ৭৩ হাজার ৭৯৮ টাকা। গভীর, অগভীর ও হস্তচালিত নলকূপে ক্ষয়ক্ষতি দেখানো হয়েছে ১৪৯ কোটি ৫৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। বন্যায় ১ লাখ ২০ হাজার ৪৯০টি স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার ১০৯ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে। ১৮ হাজার ২৪৭টি পুকুর, ৮৯০টি জলাশয়ের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ১২০ কোটি ২৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। এছাড়া ১০টি হাসপাতাল, ৩টি ক্লিনিক ও ৭৯টি কমিউনিটি ক্লিনিকে ৬ কোটি ১০ লাখ ৯ হাজার ২০০ টাকা ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বন্যায় জেলার ৮৮২ দশমিক ২৯ কিলোমিটার অর্থাৎ প্রায় ৯৬ শতাংশ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, দুর্যোগ পরবর্তীতে এখন আমাদের পুনর্বাসন কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে মাঠপর্যায়ে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা দফতরের কর্মকর্তাদের ক্লাস্টার ভিত্তিক কাজ শুরু করতে হবে। এতে বাড়িঘর নির্মাণ, নগদ অর্থ সহায়তা, কৃষিসহ জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।