জাতীয় চিড়িয়াখানা আবার জমজমাট করতে এর আধুনিকায়ন প্রয়োজন
মির্জা ইয়াহিয়া :
করোনাভাইরাসের কারণে অনেক দর্শনীয় স্থানের মতোই বন্ধ ঢাকাস্থ জাতীয় চিড়িয়াখানা। এতে একদিক দিয়ে আবার লাভ হয়েছে। বিবিসি বাংলার একটি ভিডিওচিত্র দেখলাম। যেখান থেকে জানতে পারলাম প্রাণিদের প্রজননের জন্য ইতিবাচক দিক ছিলো লকডাউনের সময়। যা গতবছরের তুলনায় দ্বিগুণ। কারণ আগের বছর মোট পাঁচ প্রজাতির মোট ৪১টি প্রাণির বাচ্চা হয়েছে। অথচ চলতি বছর প্রথম সাত মাসে ৬০ এর বেশি নতুন প্রাণির জন্ম হয়েছে। এটা অবশ্যই ভালো খবর।
এবার একটু পেছনের কথা বলি। ঐতিহাসিক তথ্যমতে, ব্রিটিশ আমলেও ঢাকার অনেক এলাকায়ই ঝোপঝাড় ছিলো। ফলে সেখানে বিভিন্ন জীবজন্তুর বিচরণ ছিলো। পরবর্তীতে নগরায়নের প্রভাবে জঙ্গল কমতে থাকে। হারিয়ে যায় প্রাণির বিচরণের স্থান। পরে ঢাকা বনেদি লোকজন ব্যক্তিগতভাবে প্রাণি লালন-পালন করতেন। উনিশ শতকের শেষভাগে ঢাকা শহরের শাহবাগে নবাব পরিবার একটি চিড়িয়াখানার প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫০ সালের হাইকোর্ট চত্বরের পাশে জীবজন্তুর প্রদর্শনশালা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় সরকারি চিড়িয়াখানা। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৪ সালে বর্তমান স্থানে যায় জাতীয় চিড়িয়াখানা।
মিরপুরের এই জাতীয় চিড়িয়াখানা সত্তর-আশি-নব্বইয়ের দশকে মানুষের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। সবাই সেখানে বেড়াতে যেতো ছোটদের নিয়ে। আর ঢাকার বাইরে থেকে কেউ এলে চিড়িয়াখানায় তো যেতে হবেই। এসব কারণে চিড়িয়াখানায় যাওয়া হতো আমাদের। তবে সাফারি পার্ক, বেসরকারি বিভিন্ন বিনোদন পার্ক চালু হওয়ার পর চিড়িয়াখানার আকর্ষণ কমে আসে। তাই চিড়িয়াখানা আবার জমজমাট করতে এর আধুনিকায়ন প্রয়োজন।
চিড়িয়াখানা নিয়ে সর্বশেষ যে খবর পড়েছি, তাতে দেখা যাচ্ছে চিড়িয়াখানা উন্মুক্ত করার প্রস্তুতি চলছে। তবে তা চালু হলেও স্বাস্থ্যবিধি যাতে নিশ্চিত থাকে, তার জন্য বিশেষ নজর দিতে হবে। কারণ বর্তমান পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নেয়া যাবে না। আবার করোনাভাইরাসের জন্য আর বন্ধ রাখাও ঠিক হবে না। কারণ চিড়িয়াখানার ব্যয় নির্বাহের সাথে আয়েরও সম্পর্ক থাকে। তাই টানা দরজা আটকে রাখার উপায় নেই।
সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
(মির্জা ইয়াহিয়া,সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং জনসংযোগ ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান। সিটি ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ, এর ফেসবুক পেইজ থেকে নেয়া।)