পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৩৪ শতাংশ

দেশের পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহে সূচক ও লেনদেনে ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা গেছে। আলোচ্য সপ্তাহে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ২৭শতাংশ। পাশাপাশি এক্সচেঞ্জটির দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ৩৪ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। ডিএসইর সাপ্তাহিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইএক্স সূচক আগের সপ্তাহের তুলনায় ৬১ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৮৯৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৪ হাজার ৮৩৩ পয়েন্ট। নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ সপ্তাহের ব্যবধানে ১৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮৩৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১ হাজার ৮২০ পয়েন্ট। এছাড়া শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গত সপ্তাহে ৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৬৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১ হাজার ৫৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া মোট ৩৯৩টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৫৭টির, কমেছে ১০৩টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৩৬টির শেয়ারদর। আর লেনদেন হয়নি ১৭টির। গত সপ্তাহে সূচকের উত্থানে সবচেয়ে বেশি অবদান ইসলামী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার। ডিএসইতে গত সপ্তাহে মোট ১ হাজার ৯৪৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১ হাজার ৮১২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
খাতভিত্তিক লেনদেনে গত সপ্তাহে ব্যাংক খাতের আধিপত্য ছিল। লেনদেনচিত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৬ দশমিক ১৬ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে ব্যাংক খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ দখলে নিয়েছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত। ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। এছাড়া ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল বস্ত্র খাত। আর পঞ্চম স্থানে থাকা করপোরেট বন্ড খাতের দখলে ছিল লেনদেনের ৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
ব্যাংক খাতের আধিপত্যের কারণ হিসেবে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ছয়টি সমস্যাগ্রস্ত ইসলামী ব্যাংক একীভূতকরণ উদ্যোগসহ বিভিন্ন পদক্ষেপে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা ফিরেছে। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনরুদ্ধার ও রেমিট্যান্স প্রবাহে স্থিতিশীলতা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা আরো দৃঢ় করেছে, যা বাজারের ঊর্ধ্বমুখী ধারা টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করেছে।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে ৯টি খাত বাদে বাকি সব খাতের শেয়ারেই ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এর মধ্যে ব্যাংক খাতের শেয়ারে সবচেয়ে বেশি ৬ দশমিক ৩ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ, মিউচুয়াল ফান্ড খাতে ৩ দশমিক ৪৪ ও সাধারণ বীমা খাতে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন ছিল। অন্যদিকে গত সপ্তাহে বহুজাতিক কোম্পানি খাতে সবচেয়ে বেশি ২ দশমিক ৩২ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এরপর সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক রিটার্ন ছিল পাট খাতে ১ দশমিক ২ শতাংশ ও সিমেন্ট খাতে দশমিক ৯২ শতাংশ।
দেশের আরেক পুঁজিবাজার চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১ দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়ে ১৩ হাজার ৬২৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১৩ হাজার ৪০০ পয়েন্ট। সিএসসিএক্স সূচক গত সপ্তাহ শেষে ১ দশমিক ৬২ শতাংশ বেড়ে ৮ হাজার ৩৩২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৮ হাজার ১৯৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে গত সপ্তাহে মোট ৮৭ কোটি ৮১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, আগের সপ্তাহে যেখানে মোট লেনদেন ছিল ১৭৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। আলোচ্য সপ্তাহে সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩১৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২২২টির, কমেছে ৭০টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২৭টির বাজারদর।