টুকরো ইলিশ মিলছে ঠিকই, ‘দ্বিগুণ’ দামে হতাশ ক্রেতা
রাজশাহীর বাজারে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে কাটা ইলিশ। ক্রেতারা টুকরো বা পিস হিসেবে মাছটি কিনতে পারছেন।
তবে দাম বেশি নেওয়ার অভিযোগ ক্রেতাদের। বিক্রেতাদের যুক্তি, কাটা মাছ বিক্রি করতে হলে দাম বেশিই নিতে হবে। বিপরীতে ক্রেতাদের অভিযোগ, পুরো মাছের তুলনায় কাটা মাছের দাম দ্বিগুণেরও বেশি।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সকালে রাজশাহী মহানগরের সাহেববাজারের মৎস্যজীবী সমিতির উদ্যোগে কাটা ইলিশ বিক্রির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। সেখানে রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ফরিদ মামুদ হাসান ও সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
একদিন আগে থেকেই ব্যবসায়ী নেতা সেকেন্দার আলী নিজেই এ নিয়ে প্রচারণা চালান। তিনি নিজ ফেসবুক প্রোফাইলে জানান, বৃহস্পতিবার থেকে ক্রেতা চাইলে এক পিস (টুকরো) ইলিশও কিনতে পারবেন। তবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাজারে গিয়ে এক পিস ইলিশ কিনতে পারেননি অনেকেই। ক্রেতাদের কমপক্ষে ২৫০ গ্রাম ইলিশ কিনতে হয়েছে। এতে অনেকেই হতাশ।
আবুল হোসেন নামে এক সাধারণ ক্রেতার অভিযোগ, বর্তমানে যে আকারের ইলিশ মাছ পিস হিসেবে বিক্রির জন্য কাটা হচ্ছে, সেগুলোর কেজি ৭০০-৮০০ টাকার মধ্যেই। অথচ কাটার পরপরই সেই মাছের ২৫০ গ্রামের দাম চাওয়া হচ্ছে ৪০০ টাকা। সে হিসাবে পুরো মাছের চেয়ে কাটা ইলিশ মাছের দাম দ্বিগুণেরও বেশি পড়ছে। তাহলে কী লাভ হচ্ছে? গড়ে তো দাম বেশি দিয়েই কিনতে হচ্ছে। তাহলে কজন কিনতে পারবেন এ মাছ?
সেলিম শেখ নামের আরেক ক্রেতার অভিযোগ, উদ্যোগটি ভালো হলেও হয়তো মাছ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বয় না করেই হুট করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ কারণে ঘোষণা শুনে অনেকেই বৃহস্পতিবার সকালে এ বাজারে আসেন সস্তায় কাটা মাছ কিনতে। তবে তারা কেউই কাটা মাছ পাননি। কারণ তখন কেউই ইলিশ মাছ কেটে বিক্রি করছিলেন না। বেলা ১১টার দিকে উদ্বোধনের পর এক-দুজন বিক্রি শুরু করেন। তবে দাম দ্বিগুণেরও বেশি পড়ছে। এরপর আবার ২৫০ গ্রামের নিচে নেওয়া যাবে না। তাহলে কী হলো? গড়ে ব্যবসায়ীদেরই লাভ থাকল। অন্যদিকে গরিব মানুষ হা-হুতাশ করে খালি হাতেই ফিরল!
এদিকে এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মাছ বিক্রেতা আবদুর রহিমের বক্তব্য, পুরো একটি ইলিশ মাছ আর পিস করে কাটা মাছ যদি একই দামে বিক্রি করতে হয়- তাহলে তাদের লাভ হবে না। আর মাছ ২৫০ গ্রামের কম নিলেও তাদের লোকসান। তাই তারা কাটা ইলিশের দাম একটু বেশি নিচ্ছেন। আর কাটা ইলিশের ওজন সর্বনিম্ন ২৫০ গ্রাম ঠিক করে দিয়েছেন। দাম একটু বেশি হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু চাইলে অল্প একটু মাছও কেনা যাচ্ছে, এটিই ক্রেতার লাভ বলে তিনি মনে করেন।
জানতে চাইলে রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী বলেন, এটি সমস্যা। তবে কাটার পর এক পিস মাছ বিক্রি করলে মাথাটা অবিক্রিত থেকে যায়। এ জন্য বিক্রেতারা এক পিস মাছ বিক্রি করতে রাজি হচ্ছেন না। তাই তারা বলে দিয়েছেন মাথাটা যেন ছোট করে কাটা হয় এবং কেউ এক পিস নিলেও যেন তাকে মাথার ছোট একটা পিস দিয়ে দেওয়া হয়। তাহলে মাথাও বিক্রি হবে আর ক্রেতারাও খুশি হবেন। তাদের উদ্দেশ্য সৎ। তারা চান সবাই যেন ইলিশের স্বাদ নিতে পারেন। আর সেজন্যই এ ক্ষুদ্র প্রয়াস।