আহমদ ছফার মৃত্যু
বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
আহমদ ছফা (১৯৪৩-২০০১) সাহিত্যিক ও চিন্তক। অনেকের মতে, মীর মশাররফ হোসেন ও কাজী নজরুল ইসলামের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাঙালি মুসলমান লেখক হলেন আহমদ ছফা। তার লেখায় বাংলাদেশি জাতিসত্তার পরিচয় নির্ধারণ প্রাধান্য পেয়েছে। ২০০১ সালের এই দিনে আহমদ ছফা প্রয়াত হন।
আহমদ ছফা জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের ৩০ জুন চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার হাশিমপুর ইউনিয়নের গাছবাড়িয়া গ্রামে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার অব্যবহিত পর রচিত ‘বুদ্ধিবৃত্তির নতুন বিন্যাস (১৯৭২)’ প্রবন্ধগ্রন্থে আহমদ ছফা বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের মানচিত্র অঙ্কন করেন এবং বাংলাদেশি বুদ্ধিজীবীদের সুবিধাবাদিতার নগ্ন রূপ উন্মোচন করেন।
আহমদ ছফা তার বিখ্যাত ‘বাঙালি মুসলমানের মন (১৯৭৬)’ প্রবন্ধে বাঙালি মুসলমানের আত্মপরিচয়ের হাজার বছরের বিবর্তন বিশ্লেষণপূর্বক তাদের পশ্চাদগামিতার কারণ অনুসন্ধান করেছেন। ড. আনিসুজ্জামান ও সলিমুল্লাহ খানসহ আরও অনেকে ছফার ‘বাঙালি মুসলমানের মন’ প্রবন্ধ সংকলনটি বাংলা ভাষায় রচিত গত শতাব্দীর সেরা দশ চিন্তার বইয়ের একটি বলে মত দিয়েছেন।
ছফা রচিত প্রতিটি উপন্যাসই ভাষিক সৌকর্য, বিষয়বস্তু ও রচনাশৈলীর অভিনবত্বে অনন্য। আবুল ফজল ও আরও অনেকের মতে ছফার ‘ওঙ্কার (১৯৭৫)’ বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সর্বোত্তম সাহিত্যিক বহিঃপ্রকাশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে রচিত ‘গাভী বিত্তান্ত (১৯৯৫)’ বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ ব্যঙ্গাত্মক উপন্যাসগুলোর একটি। ‘পুষ্প বৃক্ষ ও বিহঙ্গ পুরাণ’-এ (১৯৯৬) ছফা ঢাকা শহরের প্রেক্ষিতে ফুল, পাখি, বৃক্ষ তথা বৃহৎ প্রকৃতির সাথে মানুষের সম্পর্কের এক নিজস্ব বয়ান হাজির করেন।
প্রতিষ্ঠানবিরোধী আহমদ ছফা ১৯৭৫ সালে ‘লেখক শিবির পুরস্কার’ ও ১৯৯৩ সালে বাংলা একাডেমির ‘সাদত আলী আখন্দ পুরস্কার’ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ২০০২ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে সাহিত্যে মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করে।