শিরোনাম

South east bank ad

কিশোরগঞ্জে আশ্রয়ণের পরিবেশ দেখে মুগ্ধ ডিসি, বসে পড়লেন দাবা খেলায়

 প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   জেলা প্রশাসক

কিশোরগঞ্জে আশ্রয়ণ প্রকল্পটির পেছনেই রয়েছে নরসুন্দা নদী। গাছগাছালিতে ভরপুর চারপাশ। কাঠফাটা রোদ কিংবা প্রচণ্ড গরমেও ঠাণ্ডা আবহাওয়া বিরাজ করে সেখানে। সবমিলিয়ে ছায়ানিবিড় দৃষ্টিননন্দন পরিবেশ। ওই গ্রামের নামেই আশ্রয়ণ প্রকল্পটির নাম। সুবন্ধি আশ্রয়ণ প্রকল্প।

কথা হলে গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারগুলো আরাম-আয়েশে দিন কাটাচ্ছেন বলেই জানালেন। তাদের জীবনে স্বচ্ছলতা না আসলেও বাসস্থান নিয়ে যে আক্ষেপ ছিল, সেটা কেটে গেছে। সব মিলিয়ে ভালোই আছেন তারা।

তাদের জীবনযাপনকে আরও উচ্ছ্ল ও প্রাণবন্ত করতে সম্প্রতি শিশুদের খেলাধুলার জন্য দোলনা, স্লিপারসহ আরও বেশ কিছু ব্যবস্থা করেছে উপজেলা প্রশাসন। বড়রাও বঞ্চিত হননি, তারাও পেয়েছেন গল্পগুজবে সময় কাটানোর জন্য শেড, সুন্দর করে বানানো পুকুর ঘাট, পাকা দাবার বোর্ডসহ আরও কিছু খেলাধুলার সরঞ্জাম।

আশ্রয়ণ প্রকল্পে নতুনভাবে যুক্ত করা আয়োজনগুলো উদ্বোধন করতে গতকাল ১৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে সেখানে গিয়েছিলেন কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম। তার সঙ্গে ছিলেন জেলা প্রশাসনের বেশকজন কর্মকর্তাও। তারা আশ্রয়ণ প্রকল্পে নতুন করে বসানো আয়োজনগুলো দেখে মুগ্ধ হন। অনেকটা সময় নিয়ে ঘুরে দেখেছেন এগুলো।

এক পর্যায়ে পুকুরপাড়ে শেডের নিচে পাকা দাবার বোর্ড দেখে করিমগঞ্জের ইউএনও তসলিমা নূর হোসেনসহ অন্য কর্মকর্তাদের নিয়ে দাবা খেলায় বসে পড়েন ডিসি। কিছুক্ষণ চলে হইহুল্লোড়, খেলার উত্তেজনা। তাদের শিশুসুলভ উচ্ছ্বাস ছিল দেখার মতো। এগুলো উপস্থিত স্থানীয় লোকজনও বেশ উপভোগ করেন। কর্মকর্তারা বললেন, এত সুন্দর পরিবেশ পেয়ে একটু মজা করার লোভ সামলাতে পারেননি তারা।

উপজেলা প্রশাসন জানায়, সবুজ গাছপালাবেষ্টিত আশ্রয়ণ প্রকল্পটিতে নতুন করে ১৪টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে শুধু ঘর নয়, সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন যুক্ত হলো খেলাধুলা ও বিনোদনের উপকরণ।

আমেনা বেগম তার দুই সন্তান ও রিকশাচালক স্বামী পারভেজ মিয়া মিয়াকে নিয়ে উঠেছেন এ আশ্রয়ণে। তিনি বলেন, সংসারের যে অবস্থা, কোনোদিন ভাবিনি এমন একটা ঘর পাব। এখন বাচ্চাদের খেলাধুলা ও বড়দের বিনোদনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে, তাতে শুধু আমি নই, এখানকার সবাই খুশি হয়েছে। ঘর পেয়েছে মন্নাছ মিয়া ও সাদ্দাম এবং আল-আমিনও। তারা বলেন, আমাদের মতো ভূমিহীন-গৃহহীনদের জন্য সরকার যে ব্যবস্থা করেছে, তা আশপাশের দশ গ্রামেও নেই। যেন রাতারাতি বদলে যাচ্ছে জীবন।

পরে আশ্রয়ণ প্রকল্প নিয়ে সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাসহ নানা বিষয় নিয়ে সেখানে সংক্ষিপ্ত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তসলিমা নূর হোসেন। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ফরিদা ইয়াসমিন, করিমগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবু রিয়াদ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা স্বপন মাতুব্বর ও জাফরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান সাইফ উদ্দিন ফকির মিলন।

জেলা প্রশাসক বলেন, সুবন্ধি আশ্রয়ণ প্রকল্পটি একটি আদর্শ গ্রাম হয়ে উঠেছে। এখানকার পরিবেশ দেখে যে কেউ মুগ্ধ হবে। এখানে বসবাসকারী গরিব লোকদের জীবনমান উন্নয়নে আর কী করা যায়, তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা চলছে।
তিনি বলেন, জেলায় এ পর্যন্ত ১২৪৭ জন গৃহহীনকে ঘর দেওয়া হয়েছে। আশ্রয়ণ করার মতো ভালো জায়গা পেলে আরও আশ্রয়ণ হবে। এ ক্ষেত্রে বাজেটের কোনো ঘাটতি নেই। একটা লোকও গৃহহীন থাকতে পারবে না, এটাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ।

BBS cable ad

জেলা প্রশাসক এর আরও খবর: