কঠোরতম লকডাউনে হাই কোর্টে বিচার চলবে ৩ ভার্চুয়াল বেঞ্চে
করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সরকার ঘোষিত ‘কঠোরতম লকডাউনে’ সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্টে সীমিত পরিসরে বিচারিক কাজ চলবে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে শুক্রবার ফুলকোর্ট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়।
এজন্য ৫ অগাস্ট পর্যন্ত রিট, দেওয়ানি, ফৌজদারি এবং কোম্পানি ও এডমিরালটি সংক্রান্ত তিনটি ভার্চুয়াল একক বেঞ্চ চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ মুখপাত্র ও হাই কোর্ট বিভাগের বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, “ফুল কোর্ট সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয় যে করোনাভাইরাসজনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকার কর্তৃক ঘোষিত কঠোর লকডাউনের সময় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম আগামী ৫ অগাস্ট পর্যন্ত সীমিত পরিসরে পরিচালিত হবে।
“উক্ত সময়ে হাই কোর্ট বিভাগে রিট, দেওয়ানি, ফৌজদারি এবং কোম্পানি ও এডমিরালটি সংক্রান্ত একটি করে মোট তিনটি বেঞ্চে হাই কোর্ট বিভাগের তিনজন বিচারপতি তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে অতীব জরুরি বিষয়ে শুনানি করবেন এবং অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ প্রদান করবেন।”
৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের সকল কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের টিকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘আগামী ৫ আগস্ট পরবর্তী ফুল কোর্ট সভায় পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সারা দেশে সরকারের জারি করা ‘কঠোর লকডাউন’র সময় প্রথমে ১ জুলাই থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত দেশের সব অধস্তন আদালত, ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম না চালানোর সিদ্ধান্ত আসে।
তবে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কথা উল্লেখ করে প্রত্যেক চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একজন ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী জেলা বা মহানগরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এক বা একাধিক ম্যাজিস্ট্রেটকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শারীরিক উপস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
সেই সাথে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে সর্বোচ্চ আদালতের আপিল ও হাই কোর্ট বিভাগের বিচারিক কার্যক্রমও সীমিত পরিসরে চালানোর সিদ্ধান্ত আসে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে।
পরবর্তীতে কঠোর লকডাউনের মেয়াদ বাড়ালে প্রধান বিচারপতির নির্দেশে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনও এ সিদ্ধান্তের মেয়াদ বাড়ায়।
এর মধ্যে ঈদ সামনে রেখে ‘কঠোর লকডাউন’ তুলে নেওয়ার সরকারি ঘোষণা আসার পর অধস্তর দেওয়ানী, ফৌজদারী আদালত এবং ট্রাইব্যুনালে শারীরিক উপস্থিতিতে বিচারকাজ চালানোর সিদ্ধান্ত দেয় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
পাশাপাশি ভার্চুয়াল আদালতে দেওয়ানি, ফৌজদারি দরখাস্ত, আপিল, রিভিশন ও অন্যান্য মামলার শুনানি ও বিচারকাজ চলারও সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।
তখন ফৌজদারী মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট আদালত বা ট্রাইব্যুনালে শারীরিক উপস্থিতিতে আত্মসমর্পন করে আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়।
এছাড়া গত ১৭ ও ১৮ জুলাই দুইদিন হাই কোর্টেও চালু রাখা হয়েছিল সর্বোচ্চ ৩৮টি ভার্চুয়াল বেঞ্চ।