South east bank ad

নৌবাহিনীর সুবর্ণজয়ন্তীতে ‘নেভাল এনসাইন ১০-স্মৃতিতে অম্লান বঙ্গবন্ধু’ উদযাপন

 প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   নৌবাহিনী

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম

জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের এই বিশেষ শুভক্ষণে আজ (১০ ডিসেম্বর) ‘নেভাল এনসাইন ১০ - স্মৃতিতে অম্লান বঙ্গবন্ধু’ শিরোনামে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিশেষ শুভেচ্ছা বার্তা প্রদান করেন।

এদিন দেশব্যাপী বর্ণাঢ্য র‌্যালী, স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী, অসহায়দের মাঝে মানবিক সহায়তা প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালিত হয়। এর অংশ হিসেবে ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউ এ সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও নাবিকদের সমন্বয়ে বর্ণাঢ্য র‌্যালী অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় সহকারী নৌপ্রধান (অপারেশন্স) রিয়ার এডমিরাল এম আশরাফুল হকসহ নৌ সদরের প্রিন্সিপ্রাল স্টাফ অফিসারগণ, পরিচালকবৃন্দ, নৌ কর্মকর্তা ও সর্বস্তরের নাবিক উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি বানৌজা খিলক্ষেতে অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের মাঝে মানবিক সহায়তা প্রদান এবং বানৌজা হাজী মহসীন অডিটোরিয়ামে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী পালন করা হয়।

সকালে খুলনায় অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন ও বীর বিক্রম শহীদ মহিবুল্লাহ এর সমাধিস্থলে গার্র্ড অব অনার ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে খুলনার শিববাড়ী মোড়ে সর্বস্তরের নৌসদস্যের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য র‌্যালী অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ১০ ডিসেম্বর ১৯৭১ এ পরিচালিত নৌ অপারেশন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ মূলক প্ল্যাকার্ড, ব্যানার, ফেস্টুন প্রদর্শন করা হয়। খুলনাস্থ বানৌজা উপশমে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচীর আয়োজন করা হয় এবং দুপুরে খুলনা নৌ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় দুঃস্থ, অসহায় এবং অস্বচ্ছল মানুষের মাঝে মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়। পাশাপাশি চট্টগ্রাম এর বানৌজা ঈসাখান প্যারেড গ্রাউন্ড হতে সর্বস্তরের নৌসদস্যের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য র‌্যালী অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়া চট্টগ্রামের বানৌজা পতেঙ্গায় চট্টগ্রাম স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচীর আয়োজন করা হয় এবং দুপুরে চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের হাসপাতাল গেট সংলগ্ন এলাকায় দুঃস্থ, অসহায় এবং অস্বচ্ছল মানুষের মাঝে মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়। তাছাড়া বাদ জুমা সকল নৌঅঞ্চলের মসজিদসমূহে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখ্য, স্বাধীনতার রক্তাক্ত ও গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের ধারক এবং বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ইতিহাসে একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এ তারিখে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাথে জড়িয়ে রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অম্লান স্মৃতি। ৭১ এর এই দিনেই মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া পদ্ম ও পলাশের চরম সাহসিকতা ও অসামান্য বীরত্বের সাথে লড়াই করে শহীদ হন বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক ও আর্থ- সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেশের জলসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং সমুদ্র সম্পদের গুরুত্ব অনুধাবন করে ঐতিহাসিক ছয় দফায় নৌবাহিনী সদর দপ্তর চট্টগ্রামে স্থানান্তরের দাবী জানিয়েছিলেন। স্বাধীনতার পর একটি আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি ১৯৭৪ সালের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে নেভাল এনসাইন প্রদান করেন এবং একযোগে বানৌজা ঈসা খানসহ ৩টি ঘাঁটি বানৌজা হাজী মহসীন ও বানৌজা তিতুমীর এবং ৩টি জাহাজ কমিশনিং করেন। এই দিনেই বঙ্গবন্ধু বানৌজা সুরমায় প্রথম ও একমাত্র নৌবাহিনীর মহড়া পরিদর্শন করেন। জাতির পিতার প্রচেষ্টায় যুক্তরাজ্য হতে সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু করা যুদ্ধজাহাজ পরবর্তীতে ১০ই ডিসেম্বর ১৯৭৬ বানৌজা ওমর ফারুক নামে কমিশনিং করা হয়। বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতায় ১৯৭৪ সালে প্রণীত হয় সমুদ্রাঞ্চল বিষয়ক আইন ‘দ্য টেরিটোরিয়াল ওয়াটার্স অ্যান্ড মেরিটাইম জোনস অ্যাক্ট-১৯৭৪’।

সেই ধারবাহিকতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক আগ্রহে প্রতিবেশী দেশসমূহের সাথে সমুদ্রসীমা নির্ধারণের মাধ্যমে বাংলাদেশ অর্জন করেছে ১,১৮,৮১৩ বর্গকিলোমিটারের এক বিশাল সমুদ্র এলাকা। মাত্র দুটি গানবোট নিয়ে যাত্রা শুরু করা ১৯৭১ সালের নৌবাহিনী বঙ্গবন্ধুর বিচক্ষণতা ও দূরদৃষ্টি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রজ্ঞা ও দিক নির্দেশনায় আজ একটি ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। ‘শান্তিতে সংগ্রামে সমুদ্রে দুর্জয়’- এই মূলমন্ত্রকে ধারণ করে বাংলাদেশের জলসীমার নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে চলেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

BBS cable ad

নৌবাহিনী এর আরও খবর: