স্বার্থ উদ্ধারে কেউ যেন ধর্মকে ব্যবহার করতে না পারে: রাষ্ট্রপতি

কেউ যেন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী স্বার্থ উদ্ধারে ধর্মকে ব্যবহার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে না পারে সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বাঙালির চিরকালীন ঐতিহ্য। আমাদের সামগ্রিক অগ্রযাত্রায় সম্মিলিতভাবে এ ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিতে হবে।

 বুধবার শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষ্যে বঙ্গভবনে সনাতন ধর্মাবলম্বী বিশিষ্টজনদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন রাষ্ট্রপতি। এসময় তিনি সবাইকে বঙ্গভবনে স্বাগত জানান। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এমপি এসময় উপস্থিত ছিলেন। 

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বের সনাতন ধর্মাবলম্বী সবাইকে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। বিজয়া উৎসব আবহমান কাল থেকে সর্বজনীন উৎসব হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। পূজা অর্চনার পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি ও মেলবন্ধন সৃষ্টিতেও এ উৎসব একটি প্রধান উপলক্ষ্য। এ বছর এমন একটি সময় দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন সারাবিশ্ব মহামারীর ছোবলে বিপর্যস্ত। তার উপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী অস্থির ও সংঘাতময় পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে। বিশ্ববাসী চরম অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রতিনিয়ত মন্দার ধাক্কা লাগছে।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণে পরমত সহিষ্ণুতা, পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস আর সহযোগিতার কোনো বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, দুর্গাপূজায় আনন্দ উৎসব করার সময় এটাও মনে রাখতে হবে যে, আমাদের প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন কেউ যেন এ আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয়। ছোটোখাটো দুই একটি ঘটনা ছাড়া যতদূর জেনেছি এ বছর বেশ উৎসবমুখর পরিবেশে দূর্গোৎসব পালিত হয়েছে। যদিও গতকাল অনাকাঙ্ক্ষিত বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে। আমি আশা করব,সামনের দিনগুলোতে ধর্মীয় সকল উৎসব আরো সুন্দর ও জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হবে।

মো. আবদুল হামিদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান নির্বিশেষে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। দেশ গঠন ও জাতীয় উন্নয়নেও আমরা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। এখানে মেজরিটি বা মাইনরিটির কোনো স্থান নেই। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে বৈষম্যহীনভাবে সকলের সমান অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। তাই বাংলাদেশের সকল ধর্মের মানুষ তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান যথাযথ মর্যাদা ও আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপন করবে, এটাই সবার প্রত্যাশা।

এসময় গত ২৫ সেপ্টেম্বর পঞ্চগড় জেলার করতোয়া নদীতে নৌকাডুবিতে ৭০ জন পুণ্যার্থীর অকাল প্রয়াণে গভীর শোক জানান রাষ্ট্রপতি।