পাবনায় ভালো নেই মধ্যবিত্ত নিম্ন-মধ্যবিত্তরা
রনি ইমরান (পাবনা):
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে জীবন জীবিকায় দিশেহারা হয়ে সাধ ও সাধ্যর মধ্যে হিসেব মিলাতে হিমসিম খাচ্ছে পাবনার মধ্যবিত্ত নিম্ন-মধ্যবিত্তরা।সংসারে খরচ মেটাতে তাদের অদৃশ্য কান্না ফুটে ওঠেনি।
মাসের শেষে বিদ্যুৎ বিল, বাড়ি ভাড়া, দোকান ভাড়া সন্তানদের স্কুলের বেতন সহ সংসারে যাবতীয় খরচ ভেবে কপালে অনিশ্চয়তার ভাঁজ পড়েছে সাইফুলের (ছদ্মনাম)। তিনি একজন ছোট উদ্যোগতা।প্রায় অনেক দিন ধরে পাবনা শহরে দোকান ভাড়া নিয়ে জামা কাপড় বিক্রি করেন। স্বল্প পুজি নিয়ে এগোচ্ছিলেন,করোনার প্রথম ধাক্কার অর্থনৈতিক ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না উঠতেই দ্বিতীয় ঢেউ আবার তার কাপালে চিন্তার ভাজ ফেলেছে। দোকান বন্ধ,রোজগার নেই কয়েক কয়েকদিন কিন্তু সংসারের খরচ চালাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এমন চলতে থাকলে অল্প কিছুদিনের মধ্য তার পুঁজি শেষ হবে।
আরিফ হোসেন, পাবানা শহরের ছোট খাবারের হোটেল তার, নিজের গচ্ছিত এবং সমিতির কাছে কিছুটা ঋণ সহায়তা নিয়ে নতুন হোটেল ব্যবসা শুরু করেছিলেন, কিন্তু করোনার দ্বিতীয় পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পরপরি বেচাবিক্রি অনেকটাই কমে যায়। পরে পাবনা শহর লকডাউন করা হলে এখন বন্ধ দোকান। আরিফ বলেন দোকান খোলা রাখলেও ক্রেতা নেই। দোকান খরচও ওঠে না তাই দোকান বন্ধ রেখেছি। সামনে ঈদ সংসারের তাহিদা পূর্রণে হিমসিম খাচ্ছি।
গেলো গত ঈদুল ফিতরের বেচাকেনা করতে পারেনি সুজন ওই সময়টায় তার জমানো সঞ্চয়ের টাকা ভেঙে সংসারের চাহিদা পূরণ করেছেন তিনি।কিছুদিন দোকান খুলে সীমিত বেচাকেনা করলেও সেই ধকল এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি, মাস শুরু হতেই হিসেব মিলাতে দিশেহারা সে, বলছিলেন সুজন।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আবারো শহরে ফুল বিক্রির দোকানে অনেকটাই কমে গেছে কেনাবেচা। করোনা পরিস্থিতিতে জাতীয়, সামাজিক পারিবারিক অনুষ্ঠান না থাকায় ফুল বিক্রি নেই। খরচ পোষাতে না পেরে দোকানের কর্মচারীদের ছুটি দিয়েছেন কেউ কেউ।দোকানে মহাজনরা ছেলে সন্তান নিয়ে সংসার খরচ মেটাতে বিপাকে পড়েছেন। কেউ কেউ ধার দেনা করে চলছেন।একই সমস্যা ডেকোরেটর মাইক প্রিন্টিং রেন্ট এ কার সহ বেশকয়েকটি স্বল্পআয়ের ও মধ্যআয়ের পেশার মানুষের। তারা সরকারী সাহায্য আশা করেছেন।
করোনা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়া পর থেকেই স্কুল বন্ধ অথচ স্কুলে কোমলমতি শিশুদের বেতন দিতে হচ্ছে। সংসার চালানোর পাশাপাশি এতে নিম্মআয়ের মানুষদের চরম চিন্তার কারন হয়ে দাড়িয়েছে। আবার দ্বিমুখী আর্থিক সমস্যায় আছেন অনেক স্কুলের শিক্ষকরাও। একদিকে স্বল্প আয়ে মানুষ সংসারের ব্যায় মেটানো পাশাপাশি সন্তানের স্কুলের বেতন দিতে যেমন সমস্যায় রয়েছেন তেমনি অনেক শিক্ষকদের বেতন দিতে পারছেনা স্কুল কতৃপক্ষ। তারাও পরিবার পরিজন নিয়ে রয়েছেন অর্থনৈতিক সমস্যায়।
এ বিষয়ে পাবনা সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি প্রবীন সাংবাদিক আব্দুল মতীন খান বলেন, সেসব স্কুল সরকারি বা এমপিওভুক্ত না সে সকল স্কুলের শিক্ষকরাও করোনাকালীন সময়ে আর্থিক সমস্যায় আছে। তবে পাওনা বেতন গ্রহন আর বেতন প্রদানের সামর্থ্যর সমন্বয় করে উভয় পক্ষকেই মানবিক সমাধানে আসতে হবে।
বাংলাদেশ বেতারের পাবনা জেলা প্রতিনিধি সুশীল কুমার তরফদার বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে দারিদ্র্য শ্রেণি ত্রাণের লাইনে দাঁড়িয়ে বা কোনো কাজ করে দিনশেষে কিছুনা কিছু নিয়ে ঘড়ে যাচ্ছে কিন্তু মধ্যবিত্তের বিরাট একটি অংশ বেকার চলমান মহামারীর পরিস্থিতিতে তাদের দোকান বন্ধ। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলতে পারছেনা অনেকে চাকুরী হারিয়েছে। তাদের সরকারি সহযোগীতা দরকার।