রাজাপুরে গ্রাম পুলিশের ভাতা আটকে ছিলো ১৩ মাস, বকেয়া টাকা পেয়ে কৃতজ্ঞতা
মোঃ রাজু খান (ঝালকাঠি):
গ্রাম পুলিশের মহল্লাদার (চৌকিদার) এবং দফাদারগণ ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে প্রজাতন্ত্রের ৭০ প্রকার কর্মে নিয়োজিত। দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার কাকে বলে, তা এরা জানে না। এরা সবচেয়ে কম সুবিধাপ্রাপ্ত হয়েও জনগণকে বেশি সেবা প্রদানকারী সরকারি কর্মচারী। প্রজাতন্ত্রের সহজ, সরল ও নিরহংকার কর্মচারীর প্রতীক হচ্ছেন গ্রাম পুলিশের এই দফাদার ও মহল্লাদারগণ। তাঁদের বেতনও সামান্য। কিন্তু এতগুলো সরকারি কর্মে নিয়োজিত থাকার পরেও যদি সামান্য বেতনের ১৩মাস ধরে প্রাপ্তি সুবিধা বঞ্চিত থাকে তাহলে চরম মানবেতর জীবনযাপন করতে হয় তাঁদের। এমনই অবস্থা ছিলো ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে কর্মরত গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী গ্রামপুলিশের মহল্লাদার (চৌকিদার) ও দফাদার ৫৭জনের। রাজাপুর উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী গ্রামপুলিশের মহল্লাদার (চৌকিদার) ও দফাদার ৫৭জনের প্রাপ্য বেতন ভাতাদি পেয়েছেন। দীর্ঘ ১৩মাসের বকেয়া বেতন একসঙ্গে পেয়ে তারা এখন মহাখুশিতে। প্রত্যেক দফাদারকে ৩৯হাজার ৫শত ও প্রত্যেক চৌকিদারকে ২৭হাজার ৯শত টাকা এককালীন প্রদান করা হয়েছে। রাজাপুর সদর ইউনিয়ের লাল মিয়া দফাদার বলেন- আমরা বিগত ১৩ মাস যাবৎ হাজিরা ভাতা, বৈশাখী ভাতা ও বেতন পাচ্ছিলাম না। রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোক্তার হোসেন’র হস্তক্ষেপে ২৯ এপ্রিল সকালে উপজেলার ৫৭ জন চৌকিদার /দফাদার সার্বিক প্রাপ্য পেয়েছি। রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোক্তার হোসেন বলেন, রাজাপুরে যোগদানের পরই তাদের একটি দাবী ছিল যে বিভিন্ন জটিলতায় তাদের দীর্ঘদিনের হাজিরা ভাতা বকেয়া আছে। অনেকে বলতে গিয়ে কেঁদেও ফেলেছেন। তখন থেকেই ভাবছিলাম কীভাবে দ্রুত এ জটিলতা নিরসন করা যায়। অবশেষে ২৯ এপ্রিল দীর্ঘ ১৩ মাসের বকেয়া হাজিরা ভাতা একসাথে তাদেরকে বুঝিয়ে দিলাম। তাদের মুখে যে আনন্দের ঝলকানি দেখেছি তা অনেক বড় প্রাপ্তি। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১% উৎস করের অংশ থেকে অর্থ যোগান দেয়া হয়েছে। সদরের ২ নং ওয়ার্ডের চৌকিদার ইমরান বলেন- ইউএনও স্যারকে ধন্যবাদ, স্যারে আমাদের যে ওয়াদা দিযেছেন তা পুরন করেছেন, আমরা সবাই খুশী।
মহল্লাদার এবং দফাদাররা জানান, সাধারণ মানুষের কাছে তারা দফাদার ও চৌকিদার নামে পরিচিত হলেও গ্রামীণ ট্যাক্স কালেকশন, জন্ম-মৃত্যুর তালিকা প্রণয়ন, ভিজিডি-ভিজিএফ বণ্টন, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা বিষয়ে অনুসন্ধান ও তালিকা প্রণয়ন, ইউনিয়ন পরিষদের নোটিস জারি, পুলিশের সঙ্গে আসামি ধরার কাজ, নির্বাচনী ডিউটি পালনের কাজ করতে হয়। এছাড়া যে কোনো সরকারি অনুষ্ঠানের চিঠি বিলি, রাতে পাহারা দেয়া, নিজস্ব এলাকার আইনশৃঙ্খলা শান্ত রাখা, এলাকার অপরাধ সাধ্যমতো সমাধান করা, ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে পরিষদের দায়িত্ব পালন, থানার অর্পিত দায়িত্ব পালন, রুটিন অনুযায়ী পরিষদের পাহাড়ার দায়িত্ব পালন ও নিয়মিত থানায় হাজিরা দেয়াসহ ৭০ ধরনের কাজ করি। কোনো ছুটি নেই।