South east bank ad

ঝালকাঠির ঈদ মার্কেটে মানুষের ঢল, স্বাস্থ্য বিধির কোন তোয়াক্কা নেই

 প্রকাশ: ০৮ মে ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   সারাদেশ

ঝালকাঠির ঈদ মার্কেটে  মানুষের ঢল, স্বাস্থ্য বিধির কোন তোয়াক্কা নেই

মোঃ রাজু খান (ঝালকাঠি):

ঝালকাঠি জেলা শহরসহ ৪উপজেলার ঈদ মার্কেটে কেনাকাটা করতে মানুষ ঢল নেমেছে। মার্কেটগুলোতে গাদাগাদি করেই ক্রেতাদের চলছে কেনাকাটা। স্বাস্থ্য বিধি মানতে সরকার ঘোষিত নিয়ম কানুনের কোন তোয়াক্কা নেই বিক্রেতা ও ক্রেতাদের মধ্যে। এমনকি মাস্কের ব্যবহারও নামমাত্র রয়েছে। মাস্কের ব্যবহার নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করছেন। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সঙ্গে লুকোচুরি খেলছেন বিক্রেতা ও ক্রেতাগণ। সবার থুতনিতে মাস্ক থাকলে নাক-মুখ খোলা রেখে চলাফেরা ও ক্রয়-বিক্রয় চলছে। অভিযানের গাড়ি দেখলেই মাস্ক পড়ছেন সবাই। ঈদমার্কেট এলাকাগুলোতে যাত্রীবাহী অটোর কারণে যানজটে জানযায় এমন অবস্থার মধ্যে পড়তে বিভিন্ন জরুরী কাজে যাতায়াতকারীদের। শহরের বায়তুল মোকাররম চৌমাথা থেকে কাপুড়িয়া পট্টির মোড় পর্যন্ত পায়ে হাটা ২মিনিটের পথ হলেও ইজিবাইক ও পণ্যবাহী মালগাড়ি চলাচলের কারণে জ্যাম লেগে থাকায় ৩০মিনিটেও সেই পথ অতিক্রম করতে বেগ পেতে হচ্ছে।

শুক্রবার ঝালকাঠির ঈদমার্কেট ঘুরে দেখাগেছে, আসন্ন ঈদ উপলক্ষে কেনাকাটায় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন নানা বয়সী নারী-পুরুষ। পরিধেয় কাপড়, সাজসজ্জা ও কসমেটিকসের দোকানগুলোতে ছিল উপচেপড়া ভিড়। এক দোকান থেকে অন্য দোকানেও অবাধে আসা-যাওয়া করছেন ক্রেতারা।

রাস্তায় কয়েকজন পথচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এগিয়ে আসছে ঈদ উল ফিতর। ঈদ কেনাকাটার ভিড়ে ব্যস্ততাও বাড়ছে মার্কেট, বিপনীবিতান, দোকানপাট এমনকি ফুটপাতগুলোতেও। শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় ভিড় একটু বেশিই লক্ষ্য করা গেছে। সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মার্কেটগুলোতে ভিড় লেগেই ছিলো। দুপুরে জুম্মার নামাজের সময় ভিড় একটু কমলেও নামাজের পর আবার ভিড় বাড়ছেই। সময় যতো গড়াচ্ছে, ততোই জমজমাট হয়ে উঠছে কেনাকাটা। শুক্রবার ২৫ রমজান চলছে। ঈদের বাকি আর মাত্র কয়েকটা দিন। অধিকাংশ চাকরিজীবীরা বেতন-বোনাস পাওয়ায় তারা কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন। অন্যদিনের তুলনায় আগেভাগে সকাল ১০টা থেকেই তাই কেনাকাটা শুরু হয়েছে। দোকানদাররা জানান, ঈদকে সামনে রেখে এবারো নতুন কিছু কেনার ধুম পড়েছে। যতোই দিন যাচ্ছে, ততোই ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। রোজার শেষভাগে এসে এখন কেনাকাটা জমে উঠেছে। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এরকম ভীড় থাকবে বলেও আশাবাদ তাদের। ক্রেতাদের ভিড় সামাল দিতে অনেক মার্কেটেই দোকানিদের হিমশিম খেতে দেখা গেছে। সন্ধ্যার পর ভিড় আরো বাড়ছে বলেও জানান দোকানিরা। দেশি কাপড় ও ডিজাইনারদের তৈরি পোশাকের বুটিক হাউসগুলোতে ভিড় বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বেশিরভাগ ক্রেতাই পছন্দের জামা, শাড়ি, পাঞ্জাবি কিনছেন। রোজার শেষের দিকে ভিড় হবে এবং দামও বেড়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কার কথা চিন্তা করে অনেকেই এখনই কিনে নিচ্ছেন পছন্দের সামগ্রী। শুক্রবার সকালে শপিং করতে আসা লোকদের যানজটে আটকা থাকতে হয়েছে অনেক সময়। করোনা মহামারির মধ্যেও ঈদ শপিংয়ে জনসাধারন এটাকে স্বাভাবিক হিসেবে ধরে নিয়েছেন। অনেকেই আবার গ্রামের বাড়িতে ঈদের কাপড়-চোপড় পাঠানোর জন্য কেনাকাটা করছেন। পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা করে তাদের গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এদিকে ছুটির দিন হওয়ায় চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ সব বয়সী-পেশার মানুষকে দেখা গেছে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় কাটাতে। রাস্তা-ফুটপাতজুড়ে ঈদের কেনাকাটা জমে ওঠায় নগরীতে ছুটির দিনেও যানজটও ছিল মাত্রাতিরিক্ত। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার ঈদের ছুটি কয়েকদিন পরেই শুরু হবে বলে একটু আগেভাগেই জমে উঠেছে ফুটপাথের ঈদের বাজার। সাধারণত নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষেরা ফুটপাথের ক্রেতা। তবে সময়ের পরিক্রমায় মধ্যবিত্তরাও তুলনামূলক কম দামে পণ্য কেনার জন্য এখন ফুটপাথমুখী হয়েছেন। বিলাসবহুল বস্ত্রবিতানে মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্যও ঈদের কেনাকাটা করা ক্রমশ দুঃসাধ্য হয়ে পড়ায় তারাও ঈদের কেনাকাটা করতে ফুটপাতকে বেছে নিচ্ছেন। ‘‘রমজান মাসের শুরুর দিকে লকডাউনের কারণে বেচাবিক্রি কম হলেও মাঝামাঝি দিক থেকেই বেচা-কেনা ভালো। ঈদ যতোই এগিয়ে আসছে, বেচা-কেনা ততোই বৃদ্ধি পাচ্ছে’’ বলে জানান কামারপট্টি রোডে ফুটপাথে পসরা সাজিয়ে বসা পাঞ্জাবির দোকানি আতিয়ার রহমান। তিনি আরো জানান, শুক্রবার বলে বিক্রি বেশি হয়েছে। তবে এখন থেকে চাঁদরাত পর্যন্ত বেচা-কেনা সবচেয়ে বেশি হবে। ফুটপাতের কেনাকাটা ঈদের কয়েকদিন আগে বেশি হয় বলে উল্লেখ করে ছুটির দিন ছাড়াও এখন প্রতিদিনই বিক্রি বাড়বে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

BBS cable ad

সারাদেশ এর আরও খবর: