South east bank ad

এখনকার র‌্যাব আর বিএনপির সময়ের র‌্যাব এক নয়’

 প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারী ২০২২, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   জনপ্রতিনিধি

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম

মাহবুবউল আলম হানিফ। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। জন্ম ১৯৫৯ সালে কুষ্টিয়া জেলায়। দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৩ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন।

রাজনীতির সমসাময়িক প্রসঙ্গ নিয়ে মুখোমুখি হয়েছেন জাগো নিউজের। বিএনপি-জামায়াত অব্যহতভাবে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে উল্লেখ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের র‌্যাব-পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তা অযৌক্তিক। দুই পর্বের সাক্ষাৎকারের আজ থাকছে প্রথমটি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সায়েম সাবু।

২০১২ সালের পর থেকেই বিরোধী জোট বিদেশিদের কাছে ধর্না দিচ্ছে। কেউ যেন বিনিয়োগ করতে না আসে তার ব্যবস্থা করা, বিশ্বব্যাংক-আইএমএফসহ দাতা সংস্থাগুলোর কাছে মিথ্যা নালিশ করা অব্যাহত রেখেছে

মাহবুবউল আলম হানিফ: সরকারের ভালো কাজের বিরোধিতা বা প্রশ্ন না ওঠার সুযোগ খুব কম। বাংলাদেশের রাজনীতির ট্রেন্ডটা আপনাকে বুঝতে হবে। স্বাধীনতার পর দুই ধারার রাজনীতি শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি আর বিএনপির নেতৃত্বাধীন স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির রাজনীতি চলছে। আদর্শিকভাবে এই দুই শক্তির মধ্যে সমঝোতা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই এবং হবেও না।

বিএনপি-জামায়াত কখনোই চায় না বাংলাদেশ সফল রাষ্ট্রে পরিণত হোক এবং এখানে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকুক। পাকিস্তান এদেশের জামায়াত ইসলামীকে এখনো তাদের আদর্শের সৈনিক মনে করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশে যখন যুদ্ধাপরাধের বিচার চলে, তখন পাকিস্তানের পার্লামেন্টে শোক প্রস্তাব তোলা হয়। ১৯৭১ সালে জামায়াত ইসলামী পাকিস্তানের সৈনিক ছিল, তা সবাই জানি। কিন্তু ২০১৩ সালেও তারা পাকিস্তানের সৈনিক, এটি জানা ছিল না। পাকিস্তান ফের প্রমাণ করেছে। আমরা বারবার বলে এসেছি, জামায়াত পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করে আসছে।

অথচ, এই র‌্যাব কিন্তু বিএনপির আমলেই সৃষ্টি। বিএনপির আমলে এই র‌্যাব দিয়ে আওয়ামী লীগের ৬৫ নেতাকে হত্যা করা হয়েছে

সেই জামায়াতকে নিয়ে বিএনপি রাজনীতি করছে। সরকার গঠন করেছে। সুতরাং বিএনপি শুধু নির্বাচন কমিশন আইন নয়, আওয়ামী লীগ সরকারের সব ভালো কাজের বিরোধিতা করছে।

মাহবুবউল আলম হানিফ: ১০ দিন আগেও বিএনপি দাবি করেছে একদিনের মধ্যেই আইনটি করা সম্ভব। রাষ্ট্রপতি যখন সংলাপের আহ্বান জানালেন, তখন বিএনপি বললো, আমরা আগে আইন চাই। সরকার আইন তৈরি করার ব্যবস্থা করছে। এখন তারা বলছে, এটি তড়িঘড়ি করে করছে সরকার। মানুষ বিএনপিকে বিশ্বাস করবে কেন?

যুক্তরাষ্ট্রেও বহু মানুষ বিচারবহির্ভূতভাবে মারা যায়। তাই বলে কি সেখানকার বাহিনীগুলো নিষিদ্ধ হয়ে যায়? রাষ্ট্রের প্রয়োজনেই অপরাধীদের দমন করতে হয়। দমন করতে গিয়ে গোলাগুলিতে কেউ মারা গেলে একটি বাহিনীর ওপর তা বর্তায় না

এর আগে বিএনপিও তো একাধিকবার ক্ষমতায় ছিল। তারা করেনি কেন? বাস্তবতার বাইরে গিয়ে কথা বললে তো হবে না। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি আইন তৈরি করা কঠিন কাজ। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। এর আগেই নির্বাচন কমিশন আইন করতে হবে। অথচ বিএনপি এখন বিরোধিতা করছে।

মাহবুবউল আলম হানিফ: আইনের বিরোধিতা নয়, বিএনপি সরকারের বিরোধিতা করছে এবং এ বিরোধিতা যে কোনো ইস্যুতেই তারা করে আসছে। সরকারের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করা এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই বিএনপি বিরোধিতা করছে। মূলত বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানাতে যা প্রয়োজন তাই করছে তারা।

আমরা ২০১৩ সালে বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডব দেখেছি। যুদ্ধাপরাধের বিচার ভণ্ডুল করতে জামায়াত-শিবির কী করেনি! অনবরত হরতাল। গাড়ি ভাঙচুর। অগ্নিসংযোগ। মানুষ হত্যা। সারাবিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে অন্যভাবে উপাস্থাপন করার চেষ্টা করলো। সাধারণ মানুষ প্রতিহত করছে বলে বাংলাদেশ ভাবমূর্তি নষ্ট হয়নি।

২০১২ সালের পর থেকেই বিরোধী জোট বিদেশিদের কাছে ধর্না দিচ্ছে। কেউ যেন বিনিয়োগ করতে না আসে তার ব্যবস্থা করা। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফসহ দাতা সংস্থাগুলোর কাছে মিথ্যা নালিশ করা অব্যাহত রেখেছে। এই কর্মতৎপরতা তো গণবিরোধী। বিদেশিরা বিনিয়োগ করতে এলে বাংলাদেশ উপকৃত হবে, সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে। সাধারণ মানুষকে উন্নয়নের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করছে তারা। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তারা লবিস্ট নিয়োগ করেছে। এসবের মধ্য দিয়ে অগ্রগতি তো কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়ই।

মাহবুবউল আলম হানিফ: অবশ্যই গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। সরকার পরিচালনা করতে গেলে সব বিষয়েই গুরুত্ব দিতে হয়। আমরা দেশের ভেতর এবং বাইরে থেকে এই পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করছি।

আমরা অবাক হয়েছি, একটি রাজনৈতিক দল কীভাবে দেশের একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে বিতর্কিত করতে পারে। তারা লবিস্ট নিয়োগ করে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। এই টাকা দিয়ে তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কাজ করছে। বিএনপি-জামায়াতের কারণেই যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাব-পুলিশের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এটি র‌্যাবকে বিতর্কিত করার চেষ্টামাত্র।

অথচ, এই র‌্যাব কিন্তু বিএনপির আমলেই সৃষ্টি। বিএনপির আমলে এই র‌্যাব দিয়ে আওয়ামী লীগের ৬৫ নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। বিএনপি সরকার পরিকল্পিতভাবে বহু মানুষকে হত্যা করেছে ক্রসফায়ারের নামে।

মাহবুবউল আলম হানিফ: না। এখন এভাবে নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে না। বিএনপির সময়ের র‌্যাব আর এখনকার র‌্যাব এক নয়। এখনকার র‌্যাবের কার্যক্রম দেখেন আপনি। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দমনে র‌্যাব কী ভূমিকা রাখছে, তা আপনাকে আমলে নিতে হবে। র‌্যাব বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা-নিরাপত্তায় অসামান্য ভূমিকা রাখছে। আর এটি করতে গিয়ে কোথাও কোথাও ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটছে।

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে নানা অপশক্তির অপতৎপরতা ছিল। জঙ্গিবাদের বিস্তার তো দেখেছি। এই অপশক্তি দমনে র‌্যাবের অবদান তো অস্বীকার করতে পারবেন না।

বাংলাদেশের মতো দেশে অপরাধ দমন করা খুবই কঠিন। অন্য দেশেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলি করে মানুষ মারা যায়। যুক্তরাষ্ট্রেও বহু মানুষ বিচারবহির্ভূতভাবে মারা যায়। তাই বলে কি সেখানকার বাহিনীগুলো নিষিদ্ধ হয়ে যায়? রাষ্ট্রের প্রয়োজনেই অপরাধীদের দমন করতে হয়। দমন করতে গিয়ে গোলাগুলিতে কেউ মারা গেলে একটি বাহিনীর ওপর তা বর্তায় না। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা দিয়ে গোটা একটি বাহিনীকে আপনি বিতর্কিত করতে পারেন না।

BBS cable ad

জনপ্রতিনিধি এর আরও খবর: