South east bank ad

‘বঙ্গবন্ধুর কৃষি ভাবনা : আগামীর চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনার অনুষ্ঠিত

 প্রকাশ: ১২ অগাস্ট ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   এফবিসিসিআই

স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৬তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস ২০২১ উপলক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধুর কৃষি ভাবনা : আগামীর চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনার অনুষ্ঠিত।

স্বাধীনতার প্রথম বছর স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার বঙ্গবন্ধু যখন রাষ্ট্র পরিচালনার হাল ধরলেন তখন বঙ্গবন্ধুর জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল অনেক। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ, অর্থনীতির ভগ্ন অবস্থা, কলকারখানায় উৎপাদন বন্ধ, বিপর্যস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা ।

১৯৭২-৭৩ সালে জিডিপির আকার ছিল ৪২৯৪ কোটি টাকা, রপ্তানি আয় ৩৩ কোটি ডলার, আমদানি ২৮ কোটি ডলার, রেমিরেন্স ৮০ লাখ ডলার, মাথাপিছু আয় ১২৯ মার্কিন ডলার, বৈদেশিক রিজার্ভ প্রায় শুন্য, বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪০০ মেগাওয়াট, ডলার এক্সচেঞ্জ রেট ছিল ৭.৭৮ টাকা এবং দারিদ্রের হার ছিল প্রায় ৮৮ শতাংশ।
এরূপ পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর নিকট সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার জন্য নীতিনির্ধারণ করা ও প্রায় ২০০ বছর ধরে অবহেলিত কৃষি এবং কৃষকের উন্নয়ন এবং শিল্প ও বাণিজ্য-কে পুনরুদ্ধার করা।

কৈশর ও তরুণ বয়স থেকেই বঙ্গবন্ধু বাংলার কৃষকদের দৈন্যদশা স্বচক্ষে দেখেছেন, যা তার অন্তরে গভীরভাবে রেখাপাত করে। সেজন্য আমরা দেখেছি বঙ্গবন্ধু তার রাজনৈতিক জীবনে এদেশের মেহনতি মানুষ কৃষকের কল্যাণ ও কৃষি উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়ে সমস্ত নীতিমালা প্রণয়ন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টে নির্বাচনে জয়ী হয়ে কৃষি ও সমবায় মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

স্বাধীন বাংলাদেশের সরকার গঠনের পরপরই বঙ্গবন্ধু কৃষি উপকরণ, কৃষি গবেষণা, নতুন জাত উদ্ভাবন ও কৃষি খাতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যাবহার ইত্যাদিকে গুরুত্ব দিয়ে কৃষি খাতে উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সবুজ বিপ্লবের ডাক দেন।

মূলত যুদ্ধকালীন সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সম্পূর্ণ পঙ্গু করার যড়যন্ত্র করা হয়েছিল। সরকারি খাদ্য গুদামের সমস্ত খাদ্য পরিকল্পিতভাবে সেনানিবাসে স্থানান্তর করে সেগুলি পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। সর্বত্র পাওয়া গিয়েছিল খাদ্যশস্যের ছাই।

এছাড়া যুদ্ধকালীন খাদ্য আমদানি বন্ধ ছিল। কৃষি বীজ ছিল চাহিদার তিন ভাগের এক ভাগের কম। প্রয়োজন হয় তিন হাজার মণ গম বীজ, ২ হাজার মন বোরো ধান বীজ, ৩০ হাজার টন সার, ১৫ হাজার টন আলু বীজ, ২০ হাজার সেচ পাম্প। দেশে এই চাহিদার ১০%ও মজুত ছিল না। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সকালে স্টেট ব্যাংকের রিজার্ভ মানি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। ফলে কৃষি পণ্য আমদানিও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিল। এমনই একটি দূর্যোগপূর্ণ অর্থনৈতিক ও কৃষি ব্যবস্থাপনায় বঙ্গবন্ধু দেশ পুণর্গঠনের কার্যক্রম শুরু করেন।

১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ ভাষণে বঙ্গবন্ধু কৃষি খাতের উন্নয়নে তার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন- ‘আমাদের চাষীরা হলো সবচেয়ে দুঃখী ও নির্যাতিত শ্রেণী এবং তাদের অবস্থার উন্নতির জন্য আমাদের উদ্যোগের বিরাট অংশ অবশ্যই তাদের পিছনে নিয়োজিত করতে হবে’। কৃষিখাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে বাজেটে ৬০ ভাগ পল্লী এলাকায় উন্নয়নের জন্য ব্যয়ের ঘোষণা দেয়া হয়।

বঙ্গবন্ধুর কৃষিখাতের নেয়া সমস্ত পদক্ষেপ বাস্তবায়নের ফলে ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ধান উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছিল।

বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কৃষি খাতের উন্নয়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ১৯৯৬ এবং পরবর্তী ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এদেশের কৃষির উন্নয়ন এবং কৃষকের কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। এই করোনাকালেও কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষকের আস্থা ধরে রাখতে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচীর আওতায় ৮৬ কোটি ৪৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার অর্থ ছাড় দেয়া হয়েছে।

BBS cable ad

এফবিসিসিআই এর আরও খবর: