ব্র্যাক ব্যাংকের বিশ্বব্যাপী শক্তিশালী রেমিট্যান্স নেটওয়ার্ক
বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
কিশোরগঞ্জের শামসুল আরেফিন মালয়েশিয়ার পেনাংয়ে একটি নির্মাণ ব্যবস্থাপনার সাথে কর্মরত আছেন। বোনের বিয়ে উপলক্ষ্যে তিনি দেশে কিছু টাকা পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে তার পরিবারের হাতে টাকাটা পৌঁছায় বিয়ে শেষ হওয়ার পরে।
শামসুলের মতোই এমন হাজারও প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিক, যাদেরকে রেমিট্যান্স যোদ্ধা বলা হয়, তাদেরও বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর সময় এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে। কখনও তাদের টাকা পৌঁছাতে ১ মাসেরও বেশি সময় লাগে। ততদিনে হয়তো টাকার প্রয়োজন শেষ।
আয়ের সন্ধানে বাংলাদেশিরা পাড়ি জমান দূর-দূরান্তে। লাখ লাখ বাংলাদেশি যুবক বিশ্বব্যাপী অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে কর্মরত। তারাই তাদের কষ্টার্জিত অর্থ পরিবারের কাছে রেমিট্যান্স হিসেবে পাঠান এবং দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখেন।
অর্থ পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ হওয়ার সাথে সাথে তা রেমিট্যান্স যোদ্ধা এবং বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য তত বেশি উপকারী হতে থাকবে। যেহেতু এক দেশ থেকে আরেক দেশে টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া যথেষ্টই জটিল, এতে একাধিক অর্থপ্রদান সেবা প্রদানকারী যেমন: এক্সচেঞ্জ হাউজ, ব্যাংক, মোবাইল ওয়ালেট ইত্যাদি জড়িত; তাই প্রক্রিয়াটিকে ব্যক্তিগত স্তরে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
যেহেতু প্রতিটি দেশের নিজস্ব অর্থপ্রদান অবকাঠামো, নীতিমালা এবং নির্দেশিকা রয়েছে, তাই কখনও কখনও টাকা পাঠানোর সময় অনেকগুলো মধ্যবর্তী পদক্ষেপ পার হয়ে টাকা পেতে দীর্ঘ সময় লেগে যেতে পারে।
বিগত এক দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, এশিয়া-প্যাসিফিক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অন্যান্য ইউরোপীয় দেশ এবং আফ্রিকা থেকে সেব প্রবাসী রেমিট্যান্স পাঠান, তাদের এবং তাদের পরিবারের জীবন সহজ করতে বিশ্বব্যাপী ৬৫টিরও বেশি পার্টনার নিয়ে নেটওয়ার্ক তৈরি করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে ব্র্যাক ব্যাংক। বর্তমানে বিশ্বের যে-কোনো প্রান্তে থাকা প্রতিটি বাংলাদেশি সহজেই ব্র্যাক ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারেন।
ব্যাংকের অংশীদাররা আন্তরিকভাবে সাহায্য করছে। পেমেন্ট অপারেটর যেমন: ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, মানিগ্রাম, রিয়া, ওয়ার্ল্ড রেমিট-সহ আরও অনেক রেমিট্যান্স পার্টনার সম্পূর্ণ আস্থার সাথে ব্র্যাক ব্যাংকের সাথে কাজ করে চলেছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, একজন ব্যক্তি চাইলেই শুধুমাত্র এই অপারেটরের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারবেন না। তার জন্য এই পেমেন্ট অপারেটরের সাথে বাংলাদেশের একটি ব্যাংককে সংযুক্ত থাকতে হবে।
জাপানে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয় এন অ্যান্ড পি জাপান কো. লিমিটেড। তবে দেশে তাদের কোনো অংশীদার ব্যাংক না থাকায় অভিবাসীরা পূর্বে তাদের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারেননি। ব্র্যাক ব্যাংক এখন যৌথভাবে এন অ্যান্ড পি জাপান কো. লিমিটেড-এর সাথে কাজ করছে। ফলে জাপানে বসবাসকারী প্রায় এক লাখ বাংলাদেশি এখন তাদের মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠাতে পারবেন।
কিন্তু সমস্যা সমাধানে শুধুমাত্র পার্টনারশিপ যথেষ্ট না-ও হতে পারে। অভিবাসীদের দ্রুত টাকা পাঠানোর প্রয়োজন। এই সমস্যা সমাধানের জন্য ব্র্যাক ব্যাংক অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। প্রতিটি পেমেন্ট পার্টনারের সাথে একটি ‘এপিআই কানেক্টিভিটি’ তৈরি করেছে, যার মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ব্যক্তি-হস্তক্ষেপ ছাড়াই টাকা স্থানান্তর করা যায়।